মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আপাতত ভারত সফরে রয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ (Olaf Scholz)। শনিবার দুদিনের জন্যে এই দেশে এসেছেন তিনি। এ দিন রাষ্ট্রপতি ভবনে যান শলৎজ। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। এছাড়াও একাধিক প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গেও দেখা করেন। ক্লিন এনার্জি, বাণিজ্য ও নয়া প্রযুক্তি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। এই বৈঠক শেষে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মোদি বলেন, ইউরোপে ভারতের সবথেকে বড় বাণিজ্য অংশীদার হল জার্মানি। সেখানেই শলৎজ প্রধানমন্ত্রীর সামনে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও অন্যান্য কারিগরি শিল্পে দক্ষ কর্মীদের জার্মানিতে গিয়ে চাকরি করার আর্জি জানান।
কী বললেন জার্মান চ্যান্সেলর?
এ দিন বৈঠকের আগেই শলৎজ (Olaf Scholz) সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেছেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের ইতিমধ্যেই ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আমি আশা করি এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। আশা করি আমরা আমাদের দেশের উন্নয়ন এবং বিশ্বের শান্তির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক সমস্ত বিষয় নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করব।” এ দিন একাধিক বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল।
বৈঠক শেষে দিল্লিতে হায়দ্রাবাদ হাউস থেকে একটি যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে জার্মান চ্যান্সেলর (Olaf Scholz) বলেন, "দুই দেশের মধ্যে গভীর বোঝাপড়ার উপর ভিত্তি করে ভারত ও জার্মানির সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আমাদের বাণিজ্য বিনিময়ের ইতিহাস রয়েছে। জার্মানি ও ইউরোপ আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যের অংশীদার।" তিনি আরও জানিয়েছেন, ইউরোপে আমাদের বাণিজ্যের সর্ববৃহৎ অংশীদার হওয়া ছাড়াও ভারতে বিনিয়োগের অন্যতম একটি উৎস হল জার্মানি। তিনি বলেন, “একে অপরের স্বার্থের অভিন্ন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে ভারত ও জার্মানির মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, "বিগত কয়েক বছরে দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। আজ ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের ফলে সমস্ত ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ এসেছে। আমরা এই সুযোগগুলিতে জার্মানির আগ্রহ দেখে উত্সাহিত হয়েছি।" সেখানেই শলৎজ় বলেন, "আমাদের দরকার মেধা ও দক্ষ কর্মীর। ভারতে তথ্য প্রযুক্তি ও সফ্টওয়্যারের বিকাশ হচ্ছে এবং অনেক সক্ষম সংস্থা ভারতে রয়েছে। ভারতে এত প্রতিভা রয়েছে এবং আমরা তা থেকে উপকৃত হতে চাই। আমরা জার্মানিতে সেই প্রতিভা নিয়োগ করতে চাই।"
আরও পড়ুন: অগ্নিপথ প্রকল্পকে ক্লিনচিট দিল্লি হাইকোর্টের, খারিজ যাবতীয় বিরোধী-মামলা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথাও উঠে এসেছে আলোচনায়। শলৎজ (Olaf Scholz) বলেন, "ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্বে একটি বড় বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। কারণ আমরা জানি এই যুদ্ধ অর্থনৈতিক নীতিগুলি লঙ্ঘন করে। প্রায় ১,৮০০ জার্মান সংস্থা ভারতে সক্রিয় এবং হাজার হাজার চাকরি দিয়েছে।" তিনি রাশিয়ার আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা করে বলেন, “রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাবে ভুগছে গোটা বিশ্ব। খাদ্য ও জ্বালানির সরবরাহ অবিচ্ছিন্ন রাখতে নিশ্চিত করা হচ্ছে।" ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ শলৎজ বলেন, "এই সময়ে ভারতের অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের জন্য তা ভাল।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ বিষয়ে বলেন, "ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হতেই ভারত আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে এই বিরোধ সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে। ভারত যে কোনও শান্তি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত। নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হয়ে উঠতে পারে।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours