তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
বিরিয়ানি হোক কিংবা বার্গার, চটজলদি হাজির হয়ে যায় নানান পদ। তারপরেও প্রোটিনের অভাবে (Protein Deficiency) ভুগছেন বেশিরভাগ মানুষ। শিশু থেকে প্রবীণ, অধিকাংশ শহুরে বাসিন্দার খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকছে না। সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় গবেষণায় উঠে আসছে এমনই তথ্য। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত প্রোটিন না থাকার জেরেই শরীরে বাসা বাঁধছে নানান রোগ। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, খাবারের মেনুতে ব্যালান্স না থাকলে বিপদ বাড়বে।
কী বলছে সাম্প্রতিক তথ্য? (Protein Deficiency)
সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতে শহুরে বাসিন্দাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ প্রোটিনের অভাবে ভুগছেন। গর্ভবতীদের মধ্যে ৬২ শতাংশ জানেন না, গর্ভাবস্থায় কতখানি প্রোটিন জরুরি। তার প্রভাব তাঁদের খাবারে পড়ে। ফলে, তাঁরা প্রোটিনের অভাবে ভোগেন। ওই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৪৪ শতাংশ ছেলেমেয়ে প্রোটিনের অভাবে ভুগছে। কর্মরত মহিলাদের মধ্যে প্রোটিনের অভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। প্রায় ৭২ শতাংশ কর্মরত মহিলা প্রোটিনের অভাবে ভুগছেন।
প্রোটিনের অভাব কোন ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে? (Protein Deficiency)
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রোটিনের অভাব নানান রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। হাড়ের সমস্যার অন্যতম কারণ প্রোটিনের অভাব। দেহে পর্যাপ্ত প্রোটিন না থাকলে সহজেই হাড় ভাঙতে পারে। তাছাড়া পেশির একাধিক সমস্যার কারণ প্রোটিনের অভাব (Protein Deficiency)। বিশেষত বয়স্কদের মধ্যে নানান সমস্যা হয়। পেশি দূর্বল হলে নিয়মিত জীবনযাপন, হাঁটাচলায় সমস্যা হয়। প্রোটিন পর্যাপ্ত না থাকলে পেশির এই সমস্যা বাড়বে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। প্রোটিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। তবে, প্রোটিনের অভাবে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয় লিভারে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রোটিন শরীরে পর্যাপ্ত না থাকলে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে। এমনকী লিভারে ঘা হয়ে যায়। ফলে, বড় বিপদ ঘটতে পারে।
কেন প্রোটিনের অভাব শহরে বেশি?
পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রোটিনের অভাবের (Protein Deficiency) অন্যতম কারণ অসচেতনতা। পুষ্টিবিদদের মতে, অধিকাংশ শহুরে বাসিন্দা চটজলদি প্রসেসড খাবারে অভ্যস্ত। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। তাই আরও সমস্যা বাড়ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন সোয়াবিন, পনির, দুধ নিয়মিত খাওয়া হয় না। আবার মাছ, মাংস, ডিম খেলেও, সেটা হয়তো বার্গার, পিৎজার মতো চটজলদি খাবারের মাধ্যমে খাওয়া হচ্ছে। ফলে, শরীর পুষ্টি পাচ্ছে না। আবার পুষ্টি নিয়ে নানান ভ্রান্ত ধারণাও শহুরে বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছে বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। ওই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ২০ শতাংশের বেশি শহুরে বাসিন্দার ধারণা, প্রোটিন শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। ফলে, অনেকেই ফি-দিনের খাবারের তালিকায় প্রোটিন বাদ রাখেন। যা একেবারেই অস্বাস্থ্যকর। শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট সবকিছুই শরীরে জরুরি বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাই বাড়ির তৈরি সহজপাচ্য খাবার নিয়মিত খাওয়া দরকার। যাতে প্রত্যেক উপাদান শরীরে শক্তি জোগাতে পারে। এমনই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours