মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রায় পাঁচ মাস পেরোতে চলল ইউক্রেন (Ukraine) রাশিয়া (Russia) যুদ্ধ। সমঝোতার কোনও রকম ইচ্ছে প্রকাশ করেনি দুই দেশ। ইউক্রেন রুশ হামলার পর থেকেই বিশ্ব বাজারে খাদ্য সংকট ও তেলের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল গোটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। শুক্রবার সেই দুশ্চিন্তার কালোমেঘ কিছুটা হলেও কমেছে। এদিন বিশ্ব খাদ্য সংকট মোকাবিলায় এক টেবিলে এল রাশিয়া- ইউক্রেন। রাশিয়া, ইউক্রেনের মধ্যে সাক্ষরিত হল ল্যান্ডমার্ক চুক্তি (Landmark Deal)। তুরস্কের (Turkey) ইস্তানবুলে (Istanbul) ইউক্রেনের মন্ত্রী কুবরাকোভ ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী শইগু রাষ্ট্রসংঘের সঙ্গে আলাদা আলাদা চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত ১৫ হাজার রুশ সেনা, বিস্ফোরক দাবি সিএইএ-র
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলদিমির জেলেন্সকি (Volodymyr Zelensky) জানিয়েছেন, চুক্তি অনুযায়ী বছরে ১০০০ কোটি টাকার খাদ্য শস্য বিক্রি করতে হবে। গত বছরের ২০০ লক্ষ টন ফসল বিক্রি করা যাবে।
আরও পড়ুন: চিনকে রুখতে ভারতের পাশে! নয়া আইন পাশ মার্কিন সংসদে
চুক্তি সাক্ষরের পর রাষ্ট্রসংঘের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যান্টনিও গুয়েতরেস বলেন, "গোটা বিশ্বের জন্যে এটা খানিকটা স্বস্তির বিষয়।"
গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি খাদ্য রফতানি হয় রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে। ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হতেই খাদ্য সংকটে পড়ে গোটা বিশ্ব।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, এই চুক্তির মেয়াদ ১২০ দিন। তবে আলোচনা ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে চুক্তির মেয়াদ আরো বাড়ানো যাবে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইউক্রেনে আটকে থাকা শস্য বহনকারী বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ যেন নিরাপদে কৃষ্ণসাগরে চলাচল করতে পারে, সেজন্য তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় একটি যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র খোলা হবে। সেই কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন জাতিসংঘ, রাশিয়া, তুরস্ক ও ইউক্রেনের আধিকারিকরা।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেন, "এই চুক্তি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে দুর্ভিক্ষের হাত থেকে বাঁচাবে। এছাড়া এটি বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্য বৃদ্ধি কমাবে।"
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইউক্রেনের আধিকারিকরা নিরাপদ পথে খাদ্য বোঝাই জাহাজকে তিনটি বন্দরে পৌঁছে দেবেন। এরপর ইউক্রেন ছেড়ে কৃষ্ণ সাগরে পড়বে জাহাজ। সেখানে ফের তুরস্কের বন্দরে হবে চেকিং। তারপর এগোবে খাদ্য সামগ্রী বোঝাই জাহাজ। এভাবেই চলবে আপাতত ১২০ দিন। পরিকল্পনাটি সফল চলবে আরও বেশ কিছুদিন।
এই খাদ্য বোঝাই জাহাজগুলির ওপর নজর রাখবে দুই পক্ষই। রাশিয়া জাহাজগুলির ওপর হামলা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউক্রেন বিষয়টিতে নিশ্চয়তা চেয়েছে যাতে রাশিয়া জাহাজগুলিতে কোনও ভাবেই হামলা না চালায়। ইউক্রেনের সাফ কথা, রাশিয়ার কোনও জাহাজ যেন এই জাহাজগুলির সঙ্গে না থাকে এবং ইউক্রেনের বন্দরে যেন রাশিয়ার কোনও প্রতিনিধি না থাকে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রুশ সেনা। কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানি বন্ধ করে দেয় রাশিয়া। এতে গোটা বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়। পাশাপাশি রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে বিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে খাদ্য ও জ্বালানির দাম ব্যাপক মাত্রায় বাড়তে শুরু করে। যদিও খাদ্য সংকটের দায় নিতে রাজী নয় রাশিয়া।
+ There are no comments
Add yours