মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত ঢাকেশ্বরী মন্দিরের (Dhakeshwari temple) জমি জোর করে দখল করার অভিযোগ উঠল সে দেশের মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে। মন্দিরের জমি এইভাবে দখল করার বিরুদ্ধে সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা সমাজ ইতিমধ্যে আন্দোলন শুরু করেছে। সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজ জমি উদ্ধারের দাবিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনাতেও বসেছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের পূজো উৎসব পরিষদের সহ-সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন যে শুধুমাত্র ঢাকেশ্বরী মন্দির (Dhakeshwari temple) নয় সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বহু ধার্মিক পীঠস্থান এবং তীর্থস্থানের জমি কট্টরপন্থীরা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে, এগুলিকে যত দ্রত সম্ভব দখল মুক্ত করা সরকারের কর্তব্য।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের (Dhakeshwari temple) ইতিহাস
অতি প্রাচীন ঢাকেশ্বরী মন্দির (Dhakeshwari temple) ঢাকার প্রথম মন্দির বলেই জানা যায়। এই মন্দিরের নাম অনুসারেই শহরের নাম হয়েছে ঢাকা। অনেকেই ঢাকেশ্বরী মন্দিরকে (Dhakeshwari temple) বাংলাদেশের জাতীয় মন্দির মানেন। কথিত আছে বাংলার সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন ১২ শতাব্দীতে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অনেক ঐতিহাসিক অবশ্য এই মতকে স্বীকার করেন না কারণ এই মন্দিরের নির্মাণশৈলী তৎকালীন সময়ের সঙ্গে মেলে না। হিন্দু ধর্মাবলীদের বিশ্বাস রয়েছে ভগবান বিশ্বকর্মা স্বয়ং এই মন্দিরের নির্মাণ করেছিলেন। মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী ঢাকেশ্বরীর প্রতিমা ৮০০ বছরের পুরনো মূর্তি বলে জানা যায়। দেশভাগের সময় কলকাতার কুমোরটুলি এলাকার দুর্গাচরণ স্ট্রিটের শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী মাতা মন্দিরে এই মূর্তিকে এনে রাখা হয়। সম্ভাব্য হামলা থেকে প্রতিমাকে রক্ষা করতে ১৯৪৮ সালে রাজেন্দ্র কিশোর তিওয়ারি এবং হরিহর চক্রবর্তী বিশেষ বিমানে অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে কলকাতাতে এই মূর্তিটি এনেছিলেন বলে জানা যায়।
সেদেশের সংখালঘু সংগঠন কী বলছে
বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান একতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন মণীন্দ্রকুমার নাথ। তিনি বলেন, "রাজা মানসিংহ এই মন্দিরের (Dhakeshwari temple) পাশে ১৯০৮ সালে ২০ বিঘা জমি দিয়েছিলেন। এখন মন্দিরের জমি ৭.৫ বিঘা থেকে কিছুটা বেশি রয়েছে। আন্দোলন করে, দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে ১.৫ বিঘা জমি ফেরত পাওয়া গেছে কিন্তু এখনও ১২ বিঘা জমি অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রীকে জানানোর পাশাপাশি আরও অনেক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিকে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। বর্তমান সরকারের বিরোধিতা করতে চাইনা আমরা কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত যে জমি ফিরে পাওয়া আমাদের আইনি অধিকার"।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সফরে এসে এই মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঢাকেশ্বরী মন্দিরকে (Dhakeshwari temple) বাংলাদেশের জাতীয় অস্মিতার প্রতীক মানেন অনেকেই। গত দুর্গাপূজোর সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফরে থাকার জন্য অনলাইনে পুজোর আয়োজকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছিলেন।
+ There are no comments
Add yours