মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কলেজ স্কোয়ার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত বিজেপির মহা মিছিল শুরু হল। বিজেপির দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে ১১জন দলীয় কর্মী খুন হয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে ৩ হাজার কর্মী। তাঁদের মধ্যে ৬৫০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোটে ১২ হাজার ৪৯২টি বুথ দখল হয়েছে এবং ২১ হাজার বুথে ভোটই না হওয়ার অভিযোগ তুলছে বিজেপি। মিছিল শুরুর আগে মঞ্চে উঠে বক্তব্য রাখেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রথমে বক্তব্য রাখেন দিলীপ ঘোষ, তারপর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ প্রমুখ।
দিলীপ ঘোষের কথায়
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের নামে রাজ্যজুড়ে প্রহসন হয়েছে। আমাদের কর্মীদের মনোনয়ন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। বহু কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। গোটা বিষয়টি কোর্টে জানিয়েছি। বিচার চলছে। জনগণ আমাদের পাশে রয়েছে। জনগণকে পাশে নিয়ে আমরা পথে নেমেছি। ভোটকেন্দ্রে সরকারি ক্ষমতাকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার লুঠ করা হয়েছে। আমাদের কর্মীদের গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। বিডিও-র নেতৃত্বে ভোট লুঠ হয়েছে। ওসি পর্যন্ত ভোট লুঠে সাহায্য করেছে। এই সমস্ত ওসি, বিডিও-দের চাকরি খেয়ে আমরা ভিখারি করে ছাড়ব, যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তাই আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পথে নেমেছি। এর জন্য যতদূর যেতে হয় যাব।” তিনি আরও বলেন, “দু-দিন পরে এখানে একটা নাটক হবে শহিদ দিবসের নামে। সারা বছর রাজ্যজুড়ে লোককে মারা হয়, আর ২১ জুলাই শহিদ দিবসের নামে নাটক করা হয়। এখানে লোক আসবে না। তাই পুলিশ আর সিভিক পুলিশ ফোন করে জানছে, কত বাস লাগবে, কত লোক আসবে। মেদিনীপুরের কাউন্সিলারকেও ফোন করে কত বাস লাগবে জানছে পুলিশ।”
শুভেন্দু অধিকারীর মত
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মঞ্চে উঠেই ‘ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিয়ে এবং তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন—“মাত্র ২৪ ঘণ্টার নোটিশে হাজার-হাজার বিজেপি কর্মী রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই মেগা মিছিলে হাজির হয়েছেন। যদি বুকের পাটা থাকে তো এই মিছিল আটকে দেখাও। গত লোকসভা ভোটের আগেও ১৯ জানুয়ারি কলকাতায় এরকমই একটা সার্কাস হয়েছিল। সেই সময় নাম দিয়েছিলেন ইউনাইটেড ইন্ডিয়া। তার পরিণতি গোটা দেশের মানুষ দেখেছে। বাংলাতে তৃণমূল ৩৪ থেকে ২২-এ নেমেছে। আর বিজেপি ২ থেকে বেড়ে ১৮-এ পৌঁছেছে। এই পরিবারবাদী লোকেরা, দুর্নীতিগ্রস্ত পার্টিরা ইডি, সিবিআই থেকে বাঁচতে বেঙ্গালুরুতে ফাইভ স্টার মিটিং করেছে।” বিরোধী-জোটকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, “একদিকে মোদিজি আর অন্যদিকে, দুর্নীতিগ্রস্তরা। আগলিবার মোদিজি ৪০০ পার। আর ইন্ডিয়া নাম দিলেই স্বদেশপ্রেমী হওয়া যায় না। তাহলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও ভারতে থাকত। তাই ইন্ডিয়া নাম দিয়ে বিভ্রান্ত করা যাবে না। মানুষ মোদিজির হাতেই দেশ আগামী কয়েক দশক রাখবে।”
আরও পড়ুন: পার্থর বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমোদন রাজ্যপালের! বাধাহীন বিচারপ্রক্রিয়া
সুকান্ত মজুমদারের দাবি
শুভেন্দুর মতো সুকান্ত মজুমদারও ‘ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন এবং ভোটে সন্ত্রাসের পরেও বিজেপি যে ভোট পেয়েছে তার জন্য দলীয় কর্মীদের ধন্যবাদ জানান। সিপিএম-কংগ্রেস সেটিং নিয়েও কটাক্ষ করে সুকান্ত বলেন, "ওখানে গিয়ে শুধু মিটিং-সেটিং-ইটিং করলেই হবে না। একবার গিয়ে খোঁজ নিন বাংলা থেকে কত মানুষ ওখানে কাজের জন্য যাচ্ছেন। যদি গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হয় তাহলে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হবে। আমাদের লড়াই এখান থেকেই শুরু হচ্ছে। যে সরকার নিজেদের পুলিশকে সুরক্ষা দিতে পারে না, সেই সরকার রাজ্যবাসীকে কি সুরক্ষা দেবে!” মেগা মিছিলের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের শহিদ দিবসেই অর্থাৎ ২১ জুলাই বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিলেন সুকান্ত মজুমদার। সকলকে এই লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানান সুকান্ত।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours