মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ অবাস্তব মনে হলেও সত্যি। আস্ত একটি নদী (River) বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বলা ভাল, নদীর জমি চুরি করে নিজেদের নামে করে নিয়েছে এক শ্রেণীর অসাধু মানুষ। আর সেই নদী(River) এখন পরিণত হয়েছে চাষের জমিতে। রমরমিয়ে সেখানে চলছে চাষবাস। এমনকি চাষ করার জন্য বৈধ কাগজ পেয়ে যাচ্ছেন চাষিরা। এমনই অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে। একসময়ে জল টল টল করা শ্রীমতি নদীর(River) এমনই বেহাল ছবি ধরা পড়েছে। ধীরে ধীরে নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এই নদী এখন পুরোপুরি চরে পরিণত হয়েছে। জলা জমি ডাঙা জমিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, নদী দখল করে চলছে চাষাবাদ। বেশ কিছু এলাকায় রীতিমতো কংক্রিটের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। নদীর (River) জমি দখল করা চাষিদের বক্তব্য, চাষের জমির নিজস্ব দলিল আমাদের কাছে রয়েছে। তবে, কে তাঁদের আস্ত এই নদী বিক্রি (River) করল, সে বিষয়ে তাঁরা স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
কেমন ছিল শ্রীমতি নদী? River
একসময় বাংলাদেশ থেকে শুরু করে উত্তর দিনাজপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে চলা এই নদী (River) ইটাহার ব্লকের মারনাই এলাকায় মহানন্দা নদীতে মিশেছে। জল থৈ থৈ করত এই নদী (River) । দুপারের বাসিন্দারা এই নদীর জল ব্যবহার করতেন। দুপারে যে সব জমি ছিল, নদীর জলের চাষাবাদ হত। কিন্তু, গরম কালে নদীতে (River) জল কম থাকার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু মানুষের হাত ধরে ধীরে ধীরে নদী দখল হতে শুরু করে। ভূমি দপ্তরকে হাত করেই নদীর জমি নিজের নামে করে নেয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। এমনকী তাঁরা নদীর জায়গা বলে মানতে নারাজ। তাঁরা রায়ত জমি হিসাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও দেখিয়ে দেন। নদী বাঁচাও কমিটির সদস্য প্রসূণ কুমার দাস বলেন, আমরা সংগঠন তৈরি করে নদী (River) বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা দরবার করেছিলাম। কয়েক বছর আগে জেলাশাসকের নির্দেশে বিডিওর উদ্যোগে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে নদী সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, কাজ করতে গিয়ে জানা যায়, নদী বলে কিছু নেই। নদী (River) বিক্রি হয়ে গিয়েছে। সব ব্যক্তিগত সম্পত্তি। এই ঘটনার আমরা তদন্ত দাবি করছি।
কালিয়াগঞ্জ শহরের বিজেপি নেতা গৌরাঙ্গ দাস বলেন, প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির আমলে শ্রীমতি নদীর সংস্কারের কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, বাম সরকারের উদাসীনতায় তা সম্ভবপর হয়নি। পরবর্তীকালে সরকারের পক্ষ থেকেও নদীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। কালিয়াগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান রাম নিবাস সাহা বলেন, মহকুমা শাসক ও বিএলআরওকে বিষয়টি জানিয়েছি। সেখানে ভোগ দখলকারী অনেকের কাছে বৈধ কাগজও রয়েছে বলে শুনেছি। নতুন করে প্রশাসনিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি বলেন, এভাবে নদী (River) দখল করে চাষবাস চলতে থাকলে একদিন নদী নাব্যতা হারিয়ে ফেলবে। নদী (River) গতিপথ পরিবর্তন করবে। এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হবে। এই বিষয় নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ভূমি রাজস্ব দপ্তরকে জানাব।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours