মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মঙ্গলবার ১৪ মে সকালে দিল্লির বেশ কয়েকটি হাসপাতালে সরাসরি ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়, বোমা বিস্ফোরণে সেগুলিকে উড়িয়ে দেওয়া হবে। এই হুমকি ফোন পাওয়ার পরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে হাসপাতালগুলিতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে এমন চারটি হাসপাতালে ফোন করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, এগুলি কোনও ভুয়ো ফোন কল হতে পারে। যদিও ফোন কল পাওয়া মাত্রই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের (Pinaki Bhattacharya) সঙ্গে যোগাযোগ করে। এর পাশাপাশি হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ গিয়ে হাসপাতালগুলিতে তল্লাশিও চালায়। পুলিশ সূত্রে খবর, দীপচাঁদ বন্ধু হাসপাতাল, দাদাদেব হাসপাতাল, হেডগেওয়ার হাসপাতাল, গুরু তেগবাহাদুর হাসপাতালে- এই হুমকি ফোনগুলি এসেছে।
মঙ্গলবারই প্রথম নয়
তবে মঙ্গলবারই প্রথম নয়। ১২ মে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট সমেত আরও কতগুলি হাসপাতালে সিরিয়াল বোমা বিস্ফোরণের হুমকি ইমেল আসে। চলতি মাসের শুরুতেই আরও বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই ধরনের হুমকি চিঠি আসে। যেখানে স্কুল উড়িয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। এর ফলে মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করতে থাকে। যে জায়গাগুলিকে বোমা বিস্ফোরণে ওড়ানোর কথা বলা হয়, সেখানে (Pinaki Bhattacharya) পুলিশে বোম স্কোয়াডস হাজির হয়। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের তদন্ত করার পরে পুলিশ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে এই হুমকি মেলগুলির পুরোটাই ছিল মিথ্যা।
পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে
তবে এখনও পর্যন্ত পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এর পিছনে কোনও বড় রকমের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হাত রয়েছে কিনা! বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দিল্লির স্কুলগুলি ছাড়াও গৌতম বুদ্ধ নগরের আরও কয়েকটি স্কুল যেগুলি নয়ডা, গুরুগ্রাম ইত্যাদি জায়গায় অবস্থিত সেখানেও একই ধরনের হুমকি মেল এসেছে। দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার মনোজ মিনা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন, উত্তর দিল্লির বুরারির এক হাসপাতালে বোমার হুমকি ইমেল চিঠি এসেছিল। সেখানে বোম নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে সেখানে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। ওই হাসপাতালের একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক আশিস কয়াল বলেন, ''আমার ফোনে হাসপাতালের ইমেলের অ্যাক্সেস আছে। ওই ইমেলে বলা হয়, হাসপাতালে একটি বোম রাখা আছে। আমি এটি দেখার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানিয়েছিলাম।''
পিনাকী ভট্টাচার্য (Pinaki Bhattacharya) ভারত বিরোধী একজন ব্যক্তি
গোয়েন্দাদের অনুমান, এই সমস্ত হুমকি চিঠিগুলির পিছনে রয়েছে পিনাকি ভট্টাচার্য নামের এক কট্টর ভারত ও হিন্দু বিরোধী। যার নাম হিন্দুদের মতো হলেও সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে বহু আগেই। বর্তমানে ফ্রান্সে বসে এই ধরনের হুমকি ইমেল হাসপাতাল ও স্কুলগুলিতে সে পাঠায়। সে এই চক্রের মাথা। ভারত বিরোধী অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য সে ফ্রান্সের মাটি ব্যবহার করছে, এমনটাই অভিযোগ। পিনাকি ভট্টাচার্য ভারত বিরোধী একজন ব্যক্তি। যে সবসময় হিন্দু, ভারতবর্ষ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতাদের লক্ষ্য করে সর্বদাই ঘৃণার ভাষণ ছড়ায়।
ইউটিউবে চ্যানেল খুলে সে এই জেহাদ চালায়
ইউটিউবে চ্যানেল খুলে সে এই জেহাদ চালায়। বর্তমানে তার ১৬ লাখেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। এই চ্যানেলকে ব্যবহার করেই ভারত ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার ডাক দেয় পিনাকি ভট্টাচার্য (Pinaki Bhattacharya)। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশের নাগরিক পিনাকি সেদেশে থাকার সময় সেক্স ট্যাবলেট সহ অন্যান্য চিনা নকল ওষুধ তৈরি করতে থাকে। এ সংক্রান্ত অভিযোগ উঠতেই সে ফ্রান্সে আশ্রয় চায়। পরে ইউটিউবে চ্যানেল খুলে হিন্দু ও ভারতের বিরুদ্ধে ঘৃণার প্রচার শুরু করে।
পিনাকির জেহাদ
২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর পিনাকি ভট্টাচার্য তার একটি ফেসবুক পোস্টে লেখে, ''জেহাদই হল বিশ্ব মানচিত্র থেকে ইজরায়েলকে নির্মূল করার একমাত্র উপায়। আমার সমস্ত অনুরাগী ও অনুগামীদের এই কাজে যোগদান করা উচিত।'' উল্লেখ্য, পিনাকি ভট্টাচার্য সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হামাসের প্রতি খোলাখুলি সমর্থন প্রকাশ করেছে। গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালে ইজরায়েলের উপর হামাসের যে হামলা, সেটিকে তাতে সে খুবই আনন্দিত বলে জানিয়েছে।
আর্থিক ফান্ডিং কোথা থেকে পায়
গোয়েন্দা সূত্রে খবর মিলেছে, জামাত-ই-ইসলামের পাশাপাশি আল কায়দা সমেত বিএনপি দলও ব্যাপক আর্থিক ফান্ডিং করে পিনাকি ভট্টাচার্যকে। ফ্রান্সে বসে সে এভাবে জেহাদের কাজ চালিয়ে যায়। বাংলাদেশে বর্তমানে চলছে উগ্র মৌলবাদীদের বয়কট ইন্ডিয়া আন্দোলন। এই আন্দোলনে পিনাকি ভট্টাচার্য খোলাখুলি ইউটিউব চ্যানেলে তার দর্শকদেরকে ভারত বিরোধী প্রচারে অংশ নিতে বলছে। ব্রিটেন, ইজরায়েল, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র সমেত অন্যান্য যেকোনও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির বিরুদ্ধেও ঘৃণার প্রচার করে পিনাকি ভট্টাচার্য। জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রকাশ্যে সমর্থন জানায় সে। আফগানিস্তানের তালিবানদেরও বড় সমর্থক পিনাকি। শুধু তাই নয়, তার ঘৃণার প্রচার এতটাই বেশি যে প্রতিটি হিন্দুকে জারজ হিসেবে বলে উল্লেখ করেছে সে।
পিনাকির বায়োডেটা
বাংলাদেশের বোগরা জেলার জলেশ্বরী তলায় ১৯৬৭ সালে জন্ম পিনাকির। বাবা শ্যামল ভট্টাচার্য ছিলেন স্কুল শিক্ষক। পড়াশোনায় ভালো পিনাকি ভর্তি হয়েছিল রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে। পাশ করে বের হয় ১৯৯২ সালে। অধঃপাতের সূত্রপাত সেখানেই। কলেজে পড়াকালীনই জামাতের সংস্পর্শে আসে পিনাকি। পরে হয় মুসলমান। এর পরেই পিনাকির সঙ্গে সমস্ত রকম সম্পর্ক ছিন্ন করেন শ্যামলবাবু। পিনাকির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন তার স্ত্রীও, যখন তিনি জানতে পারেন তাঁর স্বামীর যোগাযোগ রয়েছে আইএসআই, জিহাদি এবং জঙ্গিদের সঙ্গে। ফ্রান্সে ঘাঁটি গেড়ে বসা পিনাকি হাওয়ালার ব্যবসা শুরু করেছে, সঙ্গে চালাচ্ছে ইউটিউব চ্যানেলও। তার চ্যানেলের সিংহভাগ দর্শকই অর্ধশিক্ষিত। মূলত বাংলাদেশি শ্রমিক যাঁরা কর্মসূত্রে ছড়িয়ে রয়েছেন মালয়েশিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি একটি ভিডিওয় পিনাকির দাবি, বাংলাদেশের ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেন থামাতে ভারত প্রচুর অর্থ লগ্নি করেছে।
হিন্দু ধর্মকে ছোট করতে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করছে পিনাকি
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের দাবি, পিনাকি উগ্রপন্থী। সেই হিন্দু এবং ভারত-বিরোধী সেন্টিমেন্টে সুড়সুড়ি দিচ্ছে। হিন্দু ধর্মের অপমান করতে নিরন্তর চেষ্টা করে চলেছে সে। হিন্দুদের সে বেজন্মা বলে গালিও দিচ্ছে। বাংলাদেশের যেসব মানুষ এবং সংবাদ মাধ্যম ভারতপন্থী, তাদেরও খিস্তি-খেউড় করছে সে। হিন্দু ধর্মকে ছোট করতে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করছে পিনাকি। হিন্দুদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করতে বাংলাদেশি তরুণদের উদ্বুদ্ধও করছে এই বিধর্মী (Pinaki Bhattacharya)!
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours