মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৮৪ বছর বয়সী ডাক্তারের নামে। মিউনিসিপ্যালিটিস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট (ডিএমটি) আবু ধাবিতে এই রাস্তার নামকরণ করেছে। ডাক্তার জর্জ ম্যাথিউ (Dr. George Matthew)-এর "অনারিং ইউএইস ভিশনারিস: মেমোরেটিভ স্ট্রিটস" প্রকল্পে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁর নামে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আসুন জেনে নিই এই চিকিৎসকের জীবন কেমন ছিল।
বৃহৎ জাতির জন্য অবদানের জন্য সম্মাননা (Dr. George Matthew)
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির রাজধানী আবু ধাবির একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত (Indian origin doctor) ডাক্তার জর্জ ম্যাথিউ-র (Dr. George Matthew) নামে। এই নামকরণের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়, ভারতীয় বংশোদ্ভূতের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্মরণে রেখে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। এর মূল কারণ হল, তিনি সেই দেশের বৃহৎ জাতির জন্য একনিষ্ঠ হয়ে কাজ করেছেন। আল মাফরাকের শেখ শাকবুথ মেডিকেল সিটির কাছের রাস্তাটি এখন জর্জ ম্যাথিউ স্ট্রিট নামে নামাঙ্কন হয়েছে।
কী বলেন ডাক্তার ম্যাথিউ?
ডাক্তার ম্যাথিউ (Dr. George Matthew) বলেছেন, “আমি যখন প্রথম সংযুক্ত আরব আমিরশাহে আসি, তখনও শহরের পরিকাঠামো বিকশিত হচ্ছিল। জাতির পিতা প্রয়াত এইচএইচ শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, আমি মানুষকে সাহায্য করার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি। সেই সঙ্গে আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ যে আমার প্রচেষ্টা স্বীকৃত হয়েছে।”
দক্ষিণ ভারতের কেরলের বড় হয়েছেন
তাঁর চিকিৎসা চর্চা এবং মানব সেবার জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহ সরকার ১০ বছর আগে ডাঃ ম্যাথিউ (Dr. George Matthew) এবং তাঁর পরিবারকে নাগরিকত্ব প্রদান করেছে। তিনি সেই দেশের আরেকজন সনামধন্য বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ আব্দুল রহিম জাফরের সঙ্গে বেসরকারী স্বাস্থ্য বিভাগে কাজ করেছেন। ডাঃ ম্যাথিউ দক্ষিণ ভারতের কেরলের পাথানামথিত্তার থুম্পামনে বেড়ে ওঠেন এবং ১৯৬৫ সালে ত্রিবান্দ্রম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস নিয়ে স্নাতক হন। বিয়ের পর তিনি তাঁর স্ত্রী ভালসাকে নিয়ে সংযুক্ত আরবে চলে যান। তাঁদের মেয়েও সরকারি চাকরি করেন।
আল আইনে প্রথম সরকারি ডাক্তার হিসেবে কাজ শুরু
ডাঃ ম্যাথিউ (Dr. George Matthew) ১৯৬৭ সালে, মাত্র ২৬ বছর বয়সে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসেছিলেন। প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আল আইনের একজন মিশনারি বন্ধুর কাছে থাকতে রাজি হন। আল আইনে প্রথম সরকারি ডাক্তার হিসেবে তাঁর আবেদন গ্রহণ হয়। আর এরপর শেখ জায়েদের আশীর্বাদে প্রথম ক্লিনিক চালু হয়। এই ভাবেই তাঁর পথ চলা শুরু হয়। একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসাবে তাঁর ডাক্তারি পেশার পরিষেবা শুরু করেছিলেন। ডঃ ম্যাথিউকে স্থানীয়রা ভালোবেশে স্নেহের সঙ্গে ম্যাটিউস নামে ডাকতেন। তিনি দেশের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখেছেন।
আরও পড়ুনঃ মহরমে হতে পারে জঙ্গি হামলা, পাক-সরকারকে সতর্ক করল পুলিশ
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিশেষ অবদান
ডাঃ ম্যাথিউ (Dr. George Matthew) ১৯৭২ সালে আল আইন অঞ্চলের মেডিকেল ডিরেক্টর এবং ২০০১ সালে হেলথ অথরিটি কনসালটেন্ট সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। তাঁর অবদান সেই দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করেছে এবং দেশের আধুনিক চিকিৎসা সংস্কৃতির প্রচারও শ্রীবৃদ্ধি করেছে। ডাঃ ম্যাথিউ গ্রীষ্মকালীন রোগের ব্যবস্থাপনা শিখতে ইংল্যান্ডে যান এবং পরে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় বিশেষ গবেষণার জন্য হার্ভার্ডেও যান। শিক্ষা এবং পেশাগত উন্নয়নে তাঁর প্রতিশ্রুতি সংযুক্ত আরবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ল্যান্ডস্কেপ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তিনি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের শিক্ষিত ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁর কর্মনিষ্ঠা, উৎসাহ সহকর্মীদেরও আস্থা ও প্রশংসায় মুখরিত হয়েছিলেন। চিকিৎসা শাস্ত্রের জ্ঞানের জন্য তিনি (Indian origin doctor) সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে বিশেষ অনুপ্রেরণা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours