চতুর্থ পরিচ্ছেদ
যতো বাচো নিবর্তন্তে। অপ্রাপ্য মনসা সহ।
(তৈত্তিরীয় উপনিষদ—২/৪)
ব্রহ্মের স্বরূপ মুখে বলা যায় না
কিরকম জান? যেন সচ্চিদান্নদ-সমুদ্র-কুল-কিনারা নাই—ভক্তিহিমে স্থানে স্থানে জল বরফ হয়ে যায়-বরফ আকারে জমাট বাঁধে। অর্থাৎ ভক্তের কাছে তিনি ব্যক্তভাবে, কখন কখন সাকার রূপ ধরে থাকেন। জ্ঞান সূর্য উঠলে সে বরফ গলে যায়, তখন আর ঈশ্বরকে ব্যক্তি বলে বোধ হয় না।--তাঁর রূপও দর্শন হয় না। কি তিনি মুখে বলা (Kathamrita) যায় না। কে বলবে? তিনিই নাই। তাঁর আমি আর খুঁজে পান না।
বিচার করতে করতে আমি-টামি আর কিছুই থাকে না। পেঁয়াজের প্রথমে লাল খোসা। তুমি ছাড়ালে, তারপর সাদা পুরু খোসা। এইরূপ বরাবর ছাড়াতে ছাড়াতে ভিতরে কিছু খুঁজে পান না।
সেখানে নিজের আমি খুঁজে পাওয়া যায় না—আর খুঁজেই বাঁ কে?—সেখানে ব্রহ্মের স্বরূপ (Ramakrishna) বোধে বোধ কিরূপ হয়, কে বলবে!
একটা লুনের পুতুল সমুদ্র মাপতে গিছিল। সমুদ্রে যাই নেমেছে অমনি গলে মিশে গেল। তখন খবর কে দিবেক?
পর্ণ জ্ঞানের লক্ষণ—পূর্ণ জ্ঞান হলে মানুষ চুপ হয়ে যায়। তখন আমি রূপ লুনের পুতুল সচ্চিদানন্দরূপ সাগরে গলে এক হয়ে যায়, আর একটুও ভেদবুদ্ধি থাকে না।
বিচার করা যতক্ষণ না শেষ হয়, লোকে ফড়ফড় করে তর্ক করে। শেষ হলে চুপ হয়ে যায়। কলসী পূর্ণ হলে, কলসীর জল পুকুরের জল এক হলে আর শব্দ থাকে না। যতক্ষণ না কলসী পূর্ণ হয় ততক্ষণ শব্দ। আগেকার লোকে বলত (Kathamrita), কালাপানিতে জাহাজ গেলে ফেরে না।
আমি কিন্তু যায় না
আমি মলে ঘুচিবে জঞ্জাল (হাস্য)। হাজার বিচার কর, আমি যায় না। তোমার পক্ষে ভক্ত আমি এ-অভিমান ভাল।
আরও পড়ুনঃ “জ্ঞান সূর্য উঠলে সে বরফ গলে যায়, তখন আর ঈশ্বরকে ব্যক্তি বলে বোধ হয় না”
আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours