মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মুর্শিদাবাদ জেলার গঙ্গা ভাঙন বেশ কিছু দিন ধরেই চোখ রাঙাচ্ছিল। প্রতিদিনই নদীর গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়ি, জমি, গবাদি পশু। সব কিছু হারিয়ে কার্যত খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে বহু পরিবার। বারংবার প্রশাসনের কাছে আবেদন সত্ত্বেও প্রশাসন নির্বিকার। বহুদিন পরে গঙ্গাভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে যান রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁকে দেখেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, গত বছরও সেখানে গিয়ে নানান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু কোনও কিছুরই বাস্তবায়ন হয়নি। স্বভাবতই স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সামশেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: মেধাবী ছাত্রকে অপহরণ করে খুন, বাগুইআটিকাণ্ডের ছায়া বীরভূমে?
ভাঙন পরিদর্শন শেষে মন্ত্রীকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। তাদের অভিযোগ প্রতিবছর এভাবে অস্থায়ী কাজ করে ভাঙন রোধ সম্ভব নয়। বালির বস্তা ফেলে গঙ্গা ভাঙন রোধ সম্ভব নয়। চাই স্থায়ী সমাধান। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব এই বিক্ষোভ জোর করে আটকাতে গেলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ বাধে। শুরু হয় ইট বৃষ্টি। দুপক্ষের সংঘর্ষে মাথা ফাটে দু’জন তৃণমূল সদস্যের। অবস্থা বেগতিক বুঝে মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নৌকায় চেপে পালিয়ে যান। তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম মন্ত্রীকে হেনস্থার পিছনে সিপিএমের উস্কানি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই সামসেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল নেতৃত্ব। শনিবারই ঘটনার মূল অভিযুক্ত সিপিআইএমের ধুলিয়ান এরিয়া কমিটির সদস্য হারুন অল রশিদকে গ্রেপ্তার করে সামসেরগঞ্জ থানার পুলিশ।পরে তাকে জঙ্গিপুর মহুকুমা আদালতে পাঠানো হয়। যদিও সিপিআইএমের ধুলিয়ান এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোদাসসার হোসেন তাদের দলের সদস্য হারুন অল রশিদকে অন্যায় ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেই দাবি করেছেন। অবিলম্বে তাকে মুক্তির দাবিও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: গার্ডেনরিচে তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে রহস্য
গঙ্গা ভাঙ্গনের সমস্যাটি বহু দিনের। প্রতি বছর বর্ষায় মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল নদীর গর্ভে তলিয়ে যায়। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে অতিবৃষ্টির জেরে বন্যা সৃষ্টি হলে নদীর জল প্রচন্ড গতিতে ঝাড়খন্ড হয়ে মালদায় প্রবেশ করে, ফলে জলের তোড়ে মালদহের ভুতনি, মানিকচক, ডোমহাট সহ মূর্শিদাবাদের বিস্তীর্ন এলাকায় নদী পাড়ে দেখা যায়। বছর বছর এই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এলাকার মানুষ স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ। মন্ত্রীরা শুধু দেখেই যান, কাজের কাজ কিছুই করেন না। আর এর প্রতিবাদেই বিক্ষোভ মাথাচাড়া দেয় সামসেরগঞ্জে। মন্ত্রীকে পালাতে হয় নদী পথে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours