মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলায় একটি কথা প্রচলিত রয়েছে– কিসের বার, কিসের তিথি, আষাঢ়ের সাত অম্বুবাচী। আষাঢ়ের সাত তারিখ থেকে শুরু হয় অম্বুবাচী। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, সূর্য যে বারে যে সময়ে মিথুন রাশিতে গমন করেন, ঠিক তাঁর পরবর্তী বারের সেই কালে পালিত হয় অম্বুবাচী। এই সময়ে কিছু নিয়ম রয়েছে, যা পালন করলে খুব ভাল ফল মেলে এবং কিছু নিয়ম রয়েছে যা এই সময়ে একেবারেই করতে নেই। কিছু কাজ রয়েছে যা এই সময়ে করতে শাস্ত্রে নিষেধ রয়েছে।
অম্বুবাচীতে কোন কাজে করলে শুভ ফল মেলে—
১) যত বেশি সম্ভব এই সময়ে ইষ্ট মন্ত্র জপ করুন।
২) এই সময়ে গুরুদেবের পুজো করা যাবে। যাঁদের গুরু মহিলা অর্থাৎ গুরুমা তাহলেও পূজা চলতে পারে, তাতে কোনও দোষ নেই বলে মনে করা হয়।
৩) এই সময় দেবীর মুর্তি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন।
৪) অম্বুবাচী চলাকালীন আম, দুধ সেবন করুন, এতে সাপের ভয় দূর হয়।
আরও পড়ুন: এবছর অম্বুবাচী শুরু কবে? জেনে নিন এই বিশেষ উৎসবের মাহাত্ম্য
অম্বুবাচী হিন্দুধর্মের বাৎসরিক উৎসব। অম্বুবাচীকে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অমাবতীও বলে। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আষাঢ় মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত এই রীতি পালন করা হয়। এই সময় থেকেই বর্ষার সূচনা। আসলে নতুন বর্ষার শুরুতে পৃথিবী জলসিক্ত হয়ে ওঠে, তখন তাকে ঋতুমতী নারীরূপে গণ্য করা হয়। অম্বুবাচী একটি ধর্মীয় আচার হলেও এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের আমাদের প্রাচীন কৃষি পদ্ধতিও।
এই ব্রতটি বিভিন্ন প্রদেশের মানুষ পালন করে থাকলেও অসমের কামাখ্যা মন্দিরে অম্বুবাচীকে কেন্দ্র করে বিশাল উৎসব অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়ে থাকে। অম্বুবাচীর সময়ে তিন দিন মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে। অম্বুবাচীর পর কামাখ্যা মন্দিরের দুয়ার খুললে পবিত্র লাল শালুর অংশ সংগ্রহ করতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ভক্তদের মধ্যে। তবে অম্বুবাচী তিথি যতই পবিত্র হোক, হিন্দু শাস্ত্র বলছে, এই সময়ে পবিত্র কাজ করা যায় না।
হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে এমন কিছু কাজ রয়েছে, যা অম্বুবাচীর সময়ে করা যায় না—
১) এই সময়ে জমিতে চাষ আবাদ করতে নেই।
২) এই তিন দিনে গৃহ প্রবেশ, বিবাহ উপনয়ন, অন্নপ্রাশন ও অন্যান্য শুভ কাজ করা উচিত নয়।
৩) এই সময়ে অন্য কোনও বিশেষ পুজোর আয়োজন না করাই ভাল। তবে কোনও কোনও বছর এই সময়ে রথযাত্রার উৎসব পড়লে, তা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই করা যেতে পারে। কারণ রথযাত্রাকে নিত্যকর্ম হিসাবেই ধরা হয়।
৪) যেহেতু এই সময় শুভ কাজ করতে নেই। তাই জমি বাড়ি ক্রয় বা বিক্রয় করাও নিষেধ রয়েছে ।
৫) বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া যাত্রাও নিষেধ।
৬) পুজোর সময়ে কোনও মন্ত্র পাঠ করবেন না, কেবল ধূপ ও দ্বীপ সহযোগে ঠাকুর প্রণাম করবেন।
৭) অম্বুবাচীতে দেবীর মূর্তি বা পট কখনওই স্পর্শ করা উচিত নয় বলে মনে করে। গৃহপুজোও বন্ধ থাকে।
আরও পড়ুন: ঘরের সামনে ঝুলছে লেবু লঙ্কা! আছে আশ্চর্য এক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
+ There are no comments
Add yours