Ancient Hindu Temples: গুয়াতেমালায় মিলল মন্দিরের নিদর্শন, আদানপ্রদান হয়েছিল হিন্দু সংস্কৃতির?

Guatemala: হনুমান যে পাতাললোকে গিয়েছিলেন, সেটা তাহলে এই জায়গা!...
hindu_temple_africa_f
hindu_temple_africa_f

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গুয়াতেমালা এবং হন্ডুরাসে মিলেছে হিন্দু মন্দিরের নির্দশন (Ancient Hindu Temples)। অবশ্য এখন নয়, সেই ১৯৬২ সালে। দিগন্ত বিস্তৃত ঘন জঙ্গলে ঢাকা এলাকার মধ্যেও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে মন্দিরগুলো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের (Guatemala) মতে, এই কাঠামোগুলির সঙ্গে হিন্দু মন্দিরের সাদৃশ্য রয়েছে। তার পরেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন, সুপ্রাচীন সেই কালেও কি গুয়াতেমালা, হন্ডুরাসের সঙ্গে আদানপ্রদান হয়েছিল হিন্দু সংস্কৃতির?

মায়া স্থাপত্য (Ancient Hindu Temples)

জঙ্গলে ঢাকা জরাজীর্ণ মন্দির-সদৃশ কাঠামোগুলি তৈরি হয়েছিল সুপ্রাচীন কালে। ২০০ বিসি থেকে ২০০ এডির মধ্যে উত্তর পেটেন অঞ্চলের মায়া স্থপতিরা বিশাল স্টুকো মুখোশ দ্বারা প্রশস্ত সিঁড়ি-সহ ছোট, প্রশস্ত মন্দিরের নকশা এঁকেছিলেন। পোড়া ও গুঁড়ো চুনাপাথরের মিশ্রণে এই মুখোশগুলি তৈরি হয়েছিল। তাঁরা মূলত দেবতার মুখোশই তৈরি করেছিলেন। এই স্থপতিদেরই তৈরি একটি স্থাপত্যের উদাহরণ হল টেম্পল ই-৭-সাব। এই স্থাপত্যটি পিরামিড আকৃতির। চারটি সিঁড়ি রয়েছে। রয়েছে স্টুকো মুখোশও। মূল পিরামিডের পূর্ব দিকে রয়েছে আরও তিনটি পিরামিডও। সব মিলিয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থাপত্যের প্যাটার্ন তৈরি করেছে। এর সঙ্গে যোগ থাকতে পারে জ্যোতির্বিজ্ঞানের।

১০০টিরও বেশি মন্দির

টিকলের নর্থ অ্যাক্রোপলিস মায়া সভ্যতার একটি গরুত্বপূর্ণ শহর। এই নর্থ অ্যাক্রোপলিস তৈরি হয়েছে অসংখ্য প্লাস্টার সারফেসড স্টোন টেম্পল দিয়ে। এখানে ১০০টিরও বেশি স্থাপত্যের হদিশ মিলেছে। এগুলো নির্মাণ এবং পুনর্নির্মাণ হয়েছিল অতিকায় পাথরের প্ল্যাটফর্মের ওপর। এর আগে যেসব মন্দির তৈরি হয়েছিল সেগুলি সাজানো ছিল বিভিন্ন মডেল এবং চিত্রিত স্টুকো (এক ধরনের প্লাস্টার বিশেষ) দিয়ে। এর মধ্যেও থাকত বড় বড় মুখোশ, সিঁড়ি। এই সিঁড়িগুলো দিয়েই মায়া শাসকরা যেতেন ধর্মীয় আচার পালনে। প্রতিটি মুখোশের পৌরাণিক কোনও না কোনও তাৎপর্য থাকত।

সুসজ্জিত খিলান

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নর্থ অ্যাক্রোপলিসের মন্দিরগুলো হয়েছে বৃহৎ থেকে বৃহত্তর। এক সময়ের পবিত্র জায়গাগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়েছে দুর্গম ও দুর্ভেদ্য। টিকালের চিত্রপটে তারাই হয়ে (Ancient Hindu Temples) উঠেছিল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। নর্থ অ্যাক্রোপলিসের কেন্দ্রস্থলে সমাহিত করা হত শাসকদের। সমাধি কক্ষে ছিল সুসজ্জিত খিলান। সিরামিক, জেড অলঙ্কার, হাড়, খোসা, ওবিসিডিয়ান এবং মুক্তো থেকে জিনিসও মিলেছে কবরগুলো থেকে। গুয়াতামালার (Guatemala) সীমান্ত থেকে বেশ দূরে হুন্ডুরাস। প্রত্নতত্ত্ববিদরা সেখানে হিন্দুদের দেবতা হনুমানের মূর্তি দিয়ে অলঙ্কৃত একটি বিশাল গুহারও সন্ধান পেয়েছিলেন। এ থেকেও জানা যায় প্রাচীন এই শহরে অনেক হিন্দু মন্দির ছিল। কারণ তার প্রতিচ্ছবি খোদাই করা হয়েছিল গুহায়।

রাম রাজত্ব!

স্থানীয় লোকগাথা এবং হিন্দু শাস্ত্র থেকেও জানা যায়, ভগবান রামের রাজত্বের পরে ভক্ত হনুমান নেদারওয়ার্ল্ড পাতাললোকে যাত্রা করেছিলেন। অনেকের বিশ্বাস, পুরাণগাথায় কথিত আমেরিকার এই অঞ্চলগুলির সঙ্গে মিল রয়েছে পাতাললোকের। পশ্চিম হন্ডুরাসের কোপান শহর, হাউলার বানর ঈশ্বরের মূর্তির জন্য পরিচিত। এই মূর্তির সঙ্গে হনুমানের মূর্তির সাদৃশ্য রয়েছে। ‘কোপান’ শব্দটি সংস্কৃত শব্দ। শব্দটি ‘কপি’ থেকে এসেছে বলে মনে করেন ভাষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এই ‘কপি’ শব্দের অর্থ হল বানর। এখানকার কোপানের সঙ্গে কপির ভাষাগত সংযোগও থাকতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। ‘রামায়ণ’ হিন্দু ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাকাব্য। এর মধ্যে রয়েছে কিষ্কিন্ধ্যা কাণ্ড ও যুদ্ধ কাণ্ড। সেখানেও দূর দেশে ভ্রমণের উল্লেখ রয়েছে। পেরুতে একটি ত্রিশূলও পাওয়া গিয়েছে। পাতাল লোক বলে যার উল্লেখ রয়েছে, অনেকের (Ancient Hindu Temples) মতে, সেই জায়গাটিই সেন্ট্রাল আমেরিকায়। গল্পে ভগবান হনুমান তাঁর ছেলে মকরধ্বজের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে অমিতশক্তিধর হনুমান পাতাল লোকের রাজাকে পরাজিত করে ছেলেকে বসান রাজ সিংহাসনে। সেই থেকে এই সব অঞ্চলে পুজো হয় ভগবান হনুমানের।

আরও পড়ুন: গীতার গুরুত্ব বুঝিয়েছিলেন বিবেকানন্দ, সেই শিকাগোতে হল ১০ হাজার কণ্ঠে গীতাপাঠ

হনুমানের মূর্তি

১৯৪০ সালে পূর্ব হন্ডুরাসের মসকুইটা অঞ্চলে লেজেন্ডারি হোয়াইট সিটি বা লা কুইদাদ ব্লাঙ্কারের সন্ধান পেয়েছিলেন বলে দাবি করেছিলেন মার্কিন অভিযাত্রী থিওডোর মোর্দে। তাঁর জার্নালে স্থানীয়রা অতিকায় এক বানর মূর্তির পুজো করছে বলে উল্লেখ রয়েছে। এই মূর্তির সঙ্গে ভগবান হনুমানের মূর্তির সাদৃশ্য রয়েছে বলেও দাবি প্রত্নতত্ত্ববিদদের। এই শহরের ভগ্নপ্রায় অনেক বাড়িতে এখনও ভগবান হনুমানের মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়। মোর্দের অকাল মৃত্যুর পরেও এই জার্নালে উল্লিখিত বিভিন্ন তথ্য প্রাচীন সভ্যতায় যে এই শহরের অস্তিত্ব ছিল, তার প্রমাণ দেয়। এই সব অঞ্চল থেকে মোর্দে যেসব প্রত্নরত্ন সংগ্রহ করেছিলেন, সেগুলো এখনও রাখা রয়েছে নিউ ইয়র্ক শহরের হেয়ে ফাউন্ডেশন মিউজিয়ামে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে ধাতব ব্লেড, পাথরের ব্লেড, তেমনি রয়েছে বাঁশি, বাসনকোসন এবং মূল্যবান সব ধাতু। এসব প্রত্নসামগ্রী এবং স্থানীয় লোকগাথা প্রমাণ করে যে, সেই সুপ্রাচীন কালেও (Guatemala) সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান হত ভারত এবং এই সব অঞ্চলের (Ancient Hindu Temples)।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles