মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ ২২ শ্রাবণ (Baishe Shrabon)। আজ থেকে ৮৩ বছর আগে, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ,(ইংরেজি ১৯৪১ সালের ৭ অগাস্ট) প্রয়াত হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)। দীর্ঘ দিন থেকে কবি মূত্রনালী সমস্যায় ভুগছিলেন। ১৯৪১ সালের ৩০ জুলাই, জোড়াসাঁকোর বাড়িতে কবির শরীরে অস্ত্রোপচার হয়। তার কিছু পূর্বে তিনি শেষ কবিতা রচনা করেন ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি, বিচিত্র ছলনাজালে হে ছলনাময়ী।’ চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে নিস্ফল হন। অবস্থা দ্রুত সংকটজনক হতে শুরু করে। ব্যর্থ হয় সকলের সব প্রচেষ্টা। মধ্যাহ্নের সূর্য যখন মধ্য গগনে তখন অস্তনমিত হয় সাহিত্যের রবি। প্রয়াত হন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। দিনটি ছিল রাখীপূর্ণিমার দিন। আজ কবিগুরুর প্রয়াণ দিবসে তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
দেবতার সঙ্গে প্রিয়ের সম্পর্ক
মঙ্গলকাব্যের সময় থেকেই বঙ্গজাতি দেবতাদের সঙ্গে এক প্রিয়ত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। রবীন্দ্রনাথ (Rabindranath Tagore) সেই সম্পর্কে শৈল্পিক প্রলেপ দেন। একটি ছোট বালুকণার মধ্যেও অসীমের স্পর্শ অনুভব করেন রবীন্দ্রনাথ। বহু প্রতিভার এক আপন সত্ত্বার অধিকারী এই কবি তার প্রতিভার আলোয় উদ্ভাসিত করে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছিলেন বিশ্ব দরবারে। পেয়েছিলেন বিশ্বকবির সম্মান। তিনি বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ কবি।
অন্য রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন খুব মজার মানুষ। একদিন শান্তিনিকেতনের ছেলেদের সঙ্গে অন্য এক প্রতিষ্ঠানের ছেলেদের ফুটবল খেলা ছিল। শান্তিনিকেতনের ছেলেরা আট-শূন্য গোলে জেতে। সবাই দারুণ খুশি। তবে এ জয় দেখে রবীন্দ্রনাথ মন্তব্য করলেন “জিতেছে ভালো, তা বলে আট গোল দিতে হবে? ভদ্রতা বলেও তো একটা কথা আছে!”
ভোজনরসিক রবিঠাকুর
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) নানা ধরনের খাবার ভালোবাসতেন এবং কখনও কখনও নিজ হাতে রান্নাও করতেন। দেশি খাবারের মধ্যে পছন্দ করতেন ইলিশের ঝোল, চিতল মাছ আর চালতা দিয়ে মুগের ডাল এবং নারকেল চিংড়ি। এছাড়া, তিনি কাবাব খেতে খুব পছন্দ করতেন। এর মধ্যে ছিল শ্রুতি মিঠা কাবাব, হিন্দুস্তানি তুর্কি কাবাব, চিকেন কাবাব নোসি। কবিগুরু ছিলেন পানের ভক্ত।
আরও পড়ুন: অযোধ্যা রাম জন্মভূমি আন্দোলনের এই ‘অজ্ঞাত নায়ক’দের চেনেন?
মৃত্যুই সত্য
রবীন্দ্রনাথের (Rabindranath Tagore) কথায়, “মহারাক্ষস মৃত্যু জীবনকে গ্রাস করে চিরদিন বেঁচে রয়েছে।” কবির অনুভব জীবন যেন চার দিকে মৃত্যুরূপী কালো জল দিয়ে ঘেরা দ্বীপ। মুহূর্তে যে কালো জলের প্রবল বন্যায় জীবনরূপ দ্বীপ ডুবে যেতে পারে। সেই প্রকাণ্ড কালীদহ মন্থন করে আলোর কমল তুলে আনা যে কী প্রাণান্তকর কাজ, যিনি জানেন তিনিই জানেন শুধু। তিনিই একমাত্র পারেন ‘মরণ রে তুঁহু মম শ্যাম সমান’ বলে সম্বোধন করতে। মৃত্যুই জীবনের প্রথম ও শেষ সত্য। মানুষ যে দিন জন্মায়, সে দিন থেকে নিশ্চিত হয়ে যায় পরিণতি— জন্মেছি যখন, তখন আর কিছু হোক না হোক, মরণ হবেই। রবীন্দ্রনাথের কথায়, ‘মরণ বলে আমি তোমার জীবন তরী বাই’।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours