মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সপ্তাহখানেক আগে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সিঙ্গার গ্রামে গোবিন্দ ঘোষ নামে এক ব্যাক্তির পাশের প্রতিবেশীর বাড়িতে বেশ কয়েক ভরি সোনা এবং লক্ষাধিক টাকা চুরি যায়। জানা যায়, সন্দেহবশত গ্রামেরই সাতজনের নামে অভিযোগ করেন মালপত্র চুরি যাওয়া পরিবার। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গোবিন্দ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নবগ্রাম থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। আর এরপরেই থানায় পটিয়ে খুনের অভিযোগে সরব হয় পরিবার এবং গ্রামবাসী। আপাতত নবগ্রাম থানার ওসিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কীভাবে ঘটল ঘটনা?
পরিবারের লোকেরা থানায় গেলে, থানা থেকে জানানো হয় যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরই ছেড়ে দেয়া হবে। যেদিন এই চুরির ঘটনা ঘটে, সেদিন গোবিন্দ ঘোষ সেনা ছাউনিতে কাজ করছিল বলে থানায় জানানো হয়। সেই সব প্রমাণ পত্র সেনা ছাউনি থেকে নিয়ে এসে নবগ্রাম থানায় জমা দেওয়া হয়। কিন্তু নবগ্রাম থানা (Murshidabad) কোনও প্রমাণপত্রের ধার ধারে না। নবগ্রাম সেনা ছাউনিতে দিনমজুরের কাজ করত গোবিন্দ ঘোষ। গত শুক্রবারও সেনা ছাউনিতে দিনমজুরের কাজে গিয়েছিল সে। আর তার নথিপত্র সব পুলিশকে দেখানো হয়। পুলিশ বাড়ির লোককে জানিয়েছিল যে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে, সেইমতো বাড়ির লোকেরা সকাল থেকেই থানার সামনে বসেছিলেন, কিন্তু কার্যত দেখা গেল সন্ধ্যের দিকে গোবিন্দ ঘোষকে পুলিশের গাড়িতে করে নবগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আর তারপরেই তাকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মৃত বলে ঘোষণা করে।
পরিবারের অভিযোগ
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ চুরির সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের নাম করে তার উপর অত্যাচার চালায়। আর এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গোবিন্দ ঘোষের মৃত্যু হয় বলে পরিবার দাবি করে। গোবিন্দ ঘোষের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই আনুমানিক রাত্রি সাড়ে আটটা থেকে নটার সময় গ্রামের একাংশ এবং পরিবারের লোকজন নবগ্রাম থানায় (Murshidabad) ভিড় জমায় এবং বিক্ষোভ শুরু করেন। গোবিন্দ ঘোষের পরিবার এবং প্রতিবেশীদের অভিযোগ, পুলিশকে সমস্ত তথ্য দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ সেগুলি বিশ্বাস না করে থানায় পিটিয়ে খুন করে। তাই দোষী ব্যক্তিদের অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে বলে দাবি করে পরিবার।
পুলিশের বক্তব্য
নবগ্রাম (Murshidabad) থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়, জমায়েত করে গ্রামবাসীরা থানার মেন গেটে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে এবং ভিতরে ঢুকতে না পেরে ইটবৃষ্টি শুরু করে। রাস্তার মধ্যে কাচের বোতল ভেঙে রেখে দিয়েছে বলে অভিযোগ করে পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। পাশাপাশি কাঁদানো গ্যাস ফাটানো হয়। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল পাল জানান, আইনশৃঙ্খলা জনিত একটা সমস্যা নবগ্রাম থানা এলাকায় হয়েছে, আর সেই কারণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ভার প্রাপ্ত কোনও অফিসার যদি ঘটনায় জড়িত থাকেন তাহলে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই নবগ্রাম থানার ওসি অমিত ভগতকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। থানায় খুনের অভিযোগে উত্তাল মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours