মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিম্ন আদালত ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ফাঁসির বদলে আমৃত্যু কারাদণ্ড ঘোষণা করল কামদুনি ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষী সইফুল আলি ও আনসার আলির। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ নিম্ন আদালতে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আমিন আলিকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে। নিম্ন আদালতে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছিল ইমানুল ইসলাম, আমিনুর ইসলাম ও ভোলানাথ নস্করকে। ১০ বছর জেল খাটায় এরা খালাস পেয়েছে হাইকোর্ট থেকে।
কামদুনিকাণ্ড
২০১৩ সালের ৭ জুন কলেজ থেকে ফেরার পথে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে ধর্ষণ করে খুন করা হয় এক ছাত্রীকে। দোষীদের চরম সাজার দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। নিম্ন আদালতের বিচারক রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, এমন নৃশংস অপরাধ বন্ধ করতে সমাজকে কড়া বার্তা দেওয়া প্রয়োজন, যাতে এই ধরনের অপরাধকে আড়াল করা না হয়। তিনি বলেছিলেন, “এমন অপরাধের প্রবণতা অঙ্কুরেই বিনাশ করা প্রয়োজন। তা না হলে এই অপরাধ সমাজে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়বে।” নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয় অভিযুক্তদের পরিবার।
কী বললেন নির্যাতিতার ভাই?
হাইকোর্টের রায়ে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাবকেই দুষছেন ধর্ষিতার ভাই। তিনি বলেন, "আমরা বিচার পেলাম না। রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাব ও গাফিলতিতে এই রায় হল। রাজ্য সরকারের ১৪ জন আইনজীবী এই মামলা লড়তে অস্বীকার করেছেন। যার ফলে আজ ধর্ষকদের সাজা মকুব হল। একজন বেকসুর খালাস পেল। এরা এলাকায় গিয়ে আবার তাণ্ডব করবে। আমরা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাব। আমাদের লড়াই জারি থাকবে।"
কী বললেন মৌসুমি-টুম্পা?
কামদুনিকাণ্ডের পর এই আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মৌসুমি কয়াল ও টুম্পা কয়াল। এদিন দোষী সাব্যস্তদের সাজা কমিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ কামদুনি। রায় শোনার পর বিচারপতিদের এজলাসে যাওয়ার পথে রাস্তায়ই বসে পড়ে কাঁদতে থাকেন তাঁরা। অজ্ঞান হয়ে যান মৌসুমি। কিছুক্ষণ পরে ফেরে চেতনা। তাঁদের সঙ্গে এদিন রাস্তায় বসে পড়েন কামদুনির ধর্ষিতার পরিবার-পরিজনেরা। পরে পুলিশ এসে সেখান থেকে তুলে দেয় তাঁদের।
আরও পড়ুুন: "রাজভবনের বাইরে ১৪৪ ধারা থাকার কথা", অভিষেকের ধর্নাকে কটাক্ষ শুভেন্দুর
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মৌসুমি বলেন, “আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাব। নির্ভয়াকাণ্ডের আইনজীবীর সাহায্য নেব। প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে দরবার করব। কিন্তু দোষীদের সাজা আদায় না হওয়া পর্যন্ত থামব না।” রায় (Calcutta High Court) শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন টুম্পাও। তিনি বলেন, “আজ প্রমাণ হল আমাদের রাজ্যে কোনও বিচার নেই। একের পর এক মায়ের কোল খালি হচ্ছে। মেয়েদের নিরাপত্তা নেই।” কাঁদতে কাঁদতে তাঁর প্রশ্ন, “দোষীদের কেন ছেড়ে দেওয়া হল?”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours