মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নজিরবিহীন ঘটনা বাংলায়! কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটের দাবি তুলে বিক্ষোভ করতে দেখা গেল আইনজীবীদের একাংশকে। আইনজীবীদের মধ্যে এই সংঘাত শেষপর্যন্ত হাতাহাতিতে পৌঁছল। কলকাতা হাইকোর্টের ১৩ নম্বর আদালত কক্ষ বন্ধ থাকা নিয়ে প্রতিবাদ জানান আইনজীবীদের একাংশ। তাঁরা জোর করে এজলাসে ঢুকতে গেলে বাধা দেন কিছু আইনজীবী। এর পর দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি। তৃণমূলের মহিলা আইনজীবীদের একাংশ এজলাসের গেট বন্ধ করে দেন। তুমুল হট্টগোলে বিচারপতি এজলাস ছেড়ে উঠে যান। এই বিক্ষোভ, ধস্তাধস্তি শুরু হলে কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে কাজ। এর পর ২ ঘণ্টা পর এজলাসে ফিরে আসেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও শুরু হয় বিচারের কাজ।
হাইকোর্ট চত্বরে ধুন্ধুমার!
সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস ঘিরে বয়কটের দাবি তোলে কিছু আইনজীবী। তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। সেই পরিস্থিতিতে নিজের এজলাস ছেড়ে উঠে যান প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবও। বন্ধ হয়ে যায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের শুনানি। প্রায় ১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে শুনানি বন্ধ থাকে বিচারপতি মান্থার এজলাসে। এরপর বিচারপতি মান্থা ফিরে আসলে কাজ শুরু হয়। হাইকোর্টের এই দৃশ্য ট্যুইটারে শেয়ার করেছেন, আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।
Today TMC Lawyers were restraining other lawyers from entering into Court of Justice Rajasekhar Mantha of Calcutta High Court. TMC lawyers even applied forced on other lawyers who had cases before that Court. Shame on @AITCofficial @KirenRijiju ji please take a note of this. pic.twitter.com/ADqS4pVhuF
— Tarunjyoti Tewari (@tjt4002) January 9, 2023
বিচারপতির বাড়ির পাশেও বেনামি অভিযোগ-পোস্টার
আবার তাঁর বিরুদ্ধে আদালতের বাইরের দেওয়ালেও পোস্টার দেখা গিয়েছে। তাতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ছবি দিয়ে ইংরাজিতে লেখা – লজ্জা, বিচারব্যবস্থার নামে কলঙ্ক! কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন – কোথায় আসল বিচার মিলবে? তাঁর বাড়ির আশেপাশেও লাগানো হয়েছে পোস্টার। যোধপুর পার্ক এলাকায় বিচারপতির বাড়ি। পোস্টারে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার নামে বিভিন্ন অভিযোগ তোলা হয়েছে, কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে, তার কোনও উল্লেখ নেই। তদন্তে নেমেছে লেক থানার পুলিশ।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব কী বললেন?
এরপর ১৩ নম্বর কোর্ট বয়কট নিয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য। এসব শুনে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, “এটা উচিত নয়। সব তথ্য প্রমাণ নিয়ে আসুন। বারের সভাপতি ডেকে পাঠাচ্ছি। এই ঘটনা একেবারেই উচিত নয়। বিষয়টি আমরা দেখেছি।” এরপর প্রধান বিচারপতি বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে (AG) ডেকে পাঠান। তাঁদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান তিনি। আদালতের ১৩-এর বাইরের সমস্ত সিসি ক্যামেরা ফুটেজ চাইলেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। পরে একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাঠানোও হল তাঁর কাছে। ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তিনি। এই বিক্ষোভ এবং হাতাহাতির ঘটনার পর নিজের এজলাসে শুনানি বন্ধ করে জরুরি বৈঠকে বসেছেন তিনি। বৈঠকে রয়েছেন হাই কোর্টের অন্য বিচারপতিরাও।
+ There are no comments
Add yours