মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইসরোতে (ISRO) মহাকাশযান নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও গবেষণার সুযোগ পেল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরামের নবম শ্রেণির ছাত্রী উপাসনা মণ্ডল। ইসরোর সর্বভারতীয় স্তরের একটি পরীক্ষার মাধ্যমে ওই সুযোগ পেয়েছে উপাসনা। তাই ইসরো থেকে ১৪ দিনের জন্য একটি ইয়ং সায়েন্টিস্ট প্রোগ্রামে ডাক পেয়েছে সে। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন স্পেস সেন্টারে ১৪ দিন ধরে পঠনপাঠন ও নানা গবেষণামূলক প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকবে। আগামীতে মহাকাশ গবেষণা নিয়েও পড়ার সুযোগ থাকবে বলে জানা গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, গোটা রাজ্যে পাঁচজন পড়ুয়া ইসরো থেকে ডাক পেয়েছে। তার মধ্যে পতিরামের উপাসনা রয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশির হাওয়া শিক্ষা মহলে।
খুশির হাওয়া উপাসনার পরিবারে
উপাসনার বাবার নাম ননীগোপাল মণ্ডল। বাড়ি পতিরাম থানার বাহিচা এলাকায়। তিনি বালুরঘাট ললিতমোহন আদর্শ স্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। গত মার্চ মাসে অনলাইনে ইসরোর 'যুবিকা' (YUVIKA) নামক একটি পরীক্ষায় বসে উপাসনা। সম্প্রতি এই পরীক্ষার ফলাফল বের হয়। তারপরই ইসরো থেকে উপাসনাকে ডেকে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার উদ্দেশে রওনা হয় উপাসনা ও তার বাবা। আগামীতে মহাকাশ বিজ্ঞানী হতে চায় বলে উপাসনা জানিয়েছে। এবিষয়ে উপাসনা বলে, ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ ও মহাকাশযান নিয়ে আমার মনে আগ্রহ ছিল। তাই বাবার পরামর্শে ইসরোর (ISRO) এই পরীক্ষার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু ওই পরীক্ষায় সফল হয়ে ইসরো থেকে ডাক পাব, তা ভাবিনি। আমি আগামীতে মহাকাশ গবেষণা নিয়েও পড়াশোনা করতে চাই। উপাসনার বাবা ননীগোপাল মণ্ডল বলেন, সর্বভারতীয়স্তরে ইসরোর তরফে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। সেই পরীক্ষায় র্যাঙ্কের মাধ্যমে আমাদের রাজ্যের পাঁচজন ইসরো থেকে ডাক পেয়েছে। সেখানে গবেষণা ও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ১৪ দিনের ইয়ং সায়েন্টিস্ট প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য আমার মেয়ে সুযোগ পেয়েছে। আগামীতে চাইলে মহাকাশ গবেষনামূলক পড়াশোনারও সুযোগ থাকবে। মেয়ের এই সাফল্যে আমাদের পরিবার গর্বিত। উপাসনার মা মুনমুন সরকার বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার মেয়ের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি কবিতা, নাচ ও ছবি আঁকা সহ নানা বিষয়ে ও পারদর্শী। এই পরীক্ষার জন্য সে কঠিন পরিশ্রম করেছিল। তাই এই সুযোগ পাওয়ায় খুব ভালো লাগছে।
গর্বিত তার স্কুলও
অন্যদিকে, উপাসনার স্কুল তথা পতিরাম বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা দিপা সরকার বলেন, প্রথম থেকেই উপাসনা ক্লাসের প্রথম দিকেই রোল থাকে। শান্ত ও চুপচাপ স্বভাবের। আমাদের মতো একটা গ্রামের স্কুল থেকে উপাসনার এই সাফল্যে (ISRO) আমরা সকলেই গর্বিত।
সমস্ত কিছুরই ব্যয়ভার গ্রহণ করবে ইসরো
প্রসঙ্গত, আগামী ১৪ মে থেকে অন্ধপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন স্পেস সেন্টারে ওই বিশেষ প্রশিক্ষণ শুরু হবে। কীভাবে রকেট উৎক্ষেপণ হয়, কীভাবে মহাকাশযান তৈরি করা হয়, কীভাবে মহাকাশ গবেষণা চলে, তা নিয়ে প্রশিক্ষণ চলবে। এছাড়াও সমস্ত পড়ুয়াদের ইয়ং সায়েন্টিস্ট হিসাবে নানা গবেষণামূলক পাঠ দেওয়া হবে৷ মহাকাশ গবেষণার কোন কোন দিক রয়েছে, তা জানানো হবে। এমনকী পরবর্তীতে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়েও পড়াশোনার সুযোগ থাকবে৷ এতদিন থাকা, খাওয়া, যাতায়াত সহ সমস্ত কিছুরই ব্যয়ভার গ্রহণ করবে ইসরো। জানা গিয়েছে, ইসরোর (ISRO) 'যুবিকা' পরীক্ষায় মার্কসের ভিত্তিতে গোটা দেশের মধ্যে মোট ৩৫০ জনকে ডাকা হয়েছে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচজন রয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours