মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কয়লা পাচারকাণ্ডে (Coal Scam) অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্রকে আসানসোলের সিবিআই আদালত থেকে ফের গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অভিযুক্তকে চারদিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর সুপ্রিম নির্দেশকেই বহাল রাখলেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল বিকাশকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপর কেটে গেছে এক মাস। এদিন ফের বিকাশ মিশ্রকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারল সিবিআই।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কয়লা পাচারকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশে বিকাশ ছাড়া পায়। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় সিবিআই এবং সেখানে তারা দাবি করে যে, বিকাশকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে এবং কয়লা পাচারকাণ্ডের (Coal Scam) তদন্তে এগনো যাবে, এই তথ্য শোনার পরে সুপ্রিম কোর্ট বিকাশকে চারদিনের হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। এই নির্দেশের পরে বিকাশ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। চারদিন হেফাজতে থাকার পরে পঞ্চম দিনে কী হবে? জামিন মিলবে নাকি তাকে আবারও হেফাজতে টানা হবে? এই ছিল বিকাশের প্রশ্ন। কিন্তু ইতিমধ্যে একমাস অতিক্রান্ত হয়েছে সুপ্রিম নির্দেশের। সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশ বিকাশ দেখাতে পারেনি, তাই আদালত কক্ষ থেকেই বিকাশকে হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।
কয়লা পাচার-কাণ্ডে সিবিআই গ্রেফতার করল দুই সরকারি আধিকারিককে
অন্যদিকে, কয়লা পাচার-কাণ্ডে (Coal Scam) বৃহস্পতিবার সিবিআই গ্রেফতার করেছে দুই সরকারি আধিকারিককে। জানা গিয়েছে, সিবিআইয়ের জেরায় কোন সদুত্তর দিতে না পারায় ইসিএল-এর ডিরেক্টর টেকনিক্যাল অপারেশন সুনীল কুমার ঝা এবং সিআইএসএফ-এর ইন্সপেক্টর আনন্দ কুমার সিংকে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবারে এই দুইজনকে সিবিআই অফিসে তলব করা হয়েছিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। ধৃত দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে কয়লা পাচারকাণ্ডের (Coal Scam) মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, লালার কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে কয়লা পাচারে সুবিধা করে দিতেন এই দুই আধিকারিক। এদিন জেরার সময় দুইজনের বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে, তখনই তাঁদের গ্রেফতার করে সিবিআই।
শুক্রবার দুই ধৃতকে আসানসোলের সিবিআই আদালতে হাজির করানো হবে বলে জানা গেছে। সিবিআইয়ের আরও অভিযোগ ইসিএল-এর লিজ নেওয়া খনি থেকে কয়লা পাচার হতো। লিজ নেওয়া খনির দেখাশোনা করে থাকে সিআইএসএফ। এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়েই কয়লা পাচারে অভিযুক্ত লালাকে সাহায্য করতেন দুইজন ধৃত, এমনটাই জানিয়েছে সিবিআই। অন্যদিকে কয়লা পাচার-কাণ্ডে ইডি দফতরে হাজিরা না দেওয়ায় বৃহস্পতিবারই দিল্লি হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়েন আসানসোলের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। হাইকোর্টের প্রশ্ন, ‘‘ইডি দফতরে হাজিরা দিতে অসুবিধা কোথায় মন্ত্রীর?’’
২০১৫ থেকে ২০২০ সাল অবধি অনুপ মাঝি অবাধে কয়লা পাচার করেছে
সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত লালা ওরফে অনুপ মাঝি এবং তার সহযোগীরা ইসিএল-এর কয়লা খনি থেকে কয়লা পাচার করত এবং এই কাজে তাদের মদত দিত কয়েকজন ইসিএল-এর আধিকারিক। এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থার কর্মীদের একাংশও জড়িত বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ইতিমধ্যে ৪১ জনের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট দিয়েছে বলে জানা গেছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours