মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কংগ্রেসের (congress) সঙ্গে ৩০ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে দল ছেড়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী তথা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ কপিল সিব্বল (kapil sibal)। সমাজবাদী পার্টির (samajwadi party) সমর্থনে স্বতন্ত্র পার্থী হিসেবে রাজ্যসভায় মনোনয়নপত্র পেশ করেছেন তিনি। দিনদশেক আগে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে (Sonia gandhi) পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন সিব্বল। তবে সেটি প্রকাশ্যে এসেছে বুধবারই, মনোনয়নপত্র দাখিলের পর।
’১৪ সালে কংগ্রেস দিল্লিতে ক্ষমতা হারাতেই বেসুরো গাইতে থাকেন সিব্বল। কংগ্রেসের শীর্ষ পদে বদলের দাবিতে দলের মধ্যে একটি উপদলও গজিয়ে ওঠে সিব্বলের নেতৃত্বে। কংগ্রেসের অন্দরে ভুঁইফোড় ওই উপদল জি-২৩ (G-23) নামে পরিচিত। সেই জি-২৩ এর কেউই ঘূনাক্ষরেও জানতে পারেননি যে কংগ্রেসের পাট চুকিয়ে ফেলেছেন সিব্বল। স্বভাবতই ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ এই শিবিরও।
আরও পড়ুন : "আলবিদা কংগ্রেস", ফেসবুক লাইভ করে সোনিয়া-সঙ্গ ছাড়লেন সুনীল জাখর
কংগ্রেস সূত্রে খবর, ১৬ মে সোনিয়ার কাছে সিব্বল তাঁর সংক্ষিপ্ত পদত্যাগপত্র পাঠান। সেখানে উল্লেখ করেছেন, দলের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ “সৌহার্দ্যপূর্ণ”। দলীয় নেতৃত্ব তাঁকে সুযোগ দিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে পদত্যাগপত্রে। একইসঙ্গে এখনই তাঁর এগিয়ে যাওয়ার সময় বলেও জানিয়েছেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ।
সিব্বল যে দল ছেড়ে নতুন কিছু করতে যাচ্ছেন, কেবল জি-২৩ নয়, টের পাননি কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতারাও। তাঁরাও জানতে পারলেন দেশের আমজনতার সঙ্গে। যেহেতু কংগ্রেসের সঙ্গে সিব্বলের বিচ্ছেদ সৌহার্দ্যপূর্ণ, তাই সিব্বল স্বয়ং কিংবা কংগ্রেস, কেউই কাউকে খুব একটা আক্রমণ করেননি। প্রবীণ এক কংগ্রেস নেতার ভাষায়, এটি কংগ্রেস এবং সিব্বলের একটি বন্ধুত্বপূর্ণ বিচ্ছেদ ছিল। তাঁর মতে, সিব্বলের কংগ্রেস ত্যাগ জি-২৩ শিবিরেও বিশাল প্রভাব ফেলবে। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তারিক আনোয়ার বলেন, সিব্বল দীর্ঘদিন কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কংগ্রেস তাঁকে সম্মান ও পদমর্যাদা দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রত্যেকেরই উচ্চাকাঙ্খা থাকে। তিনি তাঁর ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারেও স্বাধীন। আনোয়ার বলেন, কংগ্রেস সত্তর বছর ক্ষমতায় ছিল। এখন যখন ক্ষমতায় নেই, তখন অনেকেই যাঁরা সংগ্রাম করতে চান না, শুধুই ক্ষমতা চান, তাঁরা চলে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন :কংগ্রেস ছাড়া অ-বিজেপি জোট অসম্ভব, পাওয়ারের মন্তব্যে সিঁদুরে মেঘ তৃণমূলের আকাশে
কংগ্রেস কর্মীরা যে দলের কাছে ঋণী, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা। বলেন, আমাদের উপলব্ধি করা উচিত যে আমরা কংগ্রেসের মন্ত্রী বা মুখপাত্র যাই হই না কেন, আমরা দলের কাছে অনেক ঋণী। দল আমাদের কাছে ঋণী নয়। এআইসিসি ইনচার্জ ত্রিপুরা অজয় কুমার বলেন, প্রশ্ন হল, যে বা যাঁরা দলত্যাগ করছেন, তাঁরা কি (জনসাধারণের) ইস্যুতে লড়াই করতে প্রস্তুত নাকি তাঁরা কেবল তাঁদের ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করতে চলে যাচ্ছেন?
সিব্বল বলেন, আমি ১৬ মে নিজেই কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমার কাগজপত্র জমা দিয়েছি। সংসদে একটি স্বাধীন কণ্ঠস্বর হতে হবে, এটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, আমি সমাজবাদী পার্টির প্রধানের কাছে কৃতজ্ঞ। অখিলেশ যাদব আমায় সমর্থন করেছেন।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচন। তার আগে কংগ্রেস কীভাবে সিব্বল-ক্ষত সামলায়, এখন তাই দেখার।
+ There are no comments
Add yours