মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুরাণ ও শাস্ত্র সহ বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি ভাগবান শ্রীকৃষ্ণই প্রথম দুর্গাপুজো করেছিলেন। তার পরে দেবীর আরাধনা করেছিলেন স্বয়ং প্রজাপতি ব্রহ্মা। তারও পরে দুর্গাপুজো (Durgapujo) করেছিলেন মহাদেব (Mahadev)। পরে আরও অনেক দেবতাই বিপদ থেকে ত্রাণ পাওয়ার জন্য শরণ নিয়েছিলেন মহামায়ার (Mahamaya)। এ তো গেল দেবতাদের দেবী আরাধনার উপাখ্যান। ব্রহ্মার মানস পুত্র মনু মর্তে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন বলে কোনও কোনও শাস্ত্র রচয়িতার দাবি। সে যাই হোক না কেন এবার আমরা আলোচনা করব বারোয়ারি দুর্গাপুজোর (Baroyari Durgapujo) ইতিহাস নিয়ে।
‘বারোয়ারি’ শব্দটির উৎপত্তি ‘বারো’ এবং ‘ইয়ার’ এই দুই শব্দ থেকে। ‘ইয়ার’ শব্দের অর্থ বন্ধু। তাহলে বারোয়ারি বলতে বোঝায় বারো জন বন্ধু। হ্যাঁ, ঠিক তাই। বারোজন বন্ধুই প্রথম একজোট হয়ে দুর্গাপুজো করেছিলেন। তাই এক সঙ্গে যখন অনেকে পুজো করেন, তখন তাকে বলে বারোয়ারি পুজো। এখন অবশ্য ‘বারোয়ারি’ কথাটির বদলে ‘সর্বজনীন’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তার কারণ, এখন আর বারোজন মিলে কোনও পুজো করেন না, করেন অনেকে মিলে। কোথাও একটা গোটা পাড়া, কোথাও আবার পাড়ার বাইরেও বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা তোলা হয়। তাই বারোয়ারি পুজো এখন বদলে হয়েছে সর্বজনীন।
এবার আসা যাক আসল কথায়। জানা যায়, ১৭৯০ সালে হুগলির গুপ্তিপাড়ায় বারোজন ব্রাহ্মণ বন্ধু প্রথম চাঁদা তুলে পুজো শুরু করেন। এই পুজোই বারোয়ারি পুজো নামে খ্যাত। মর্ত্যে যখন দুর্গাপুজো শুরু হয়, তখন তা মূলত হত ধনীদের বাড়িতেই। কারণ দুর্গাপুজোর খরচ বিস্তর। পুজোও চার পাঁচ দিনের। তাই ধনীরা পুজো করতেন। কিছু কিছু ব্রাহ্মণ বাড়িতেও পুজো হত। তবে তা নিতান্তই সাদামাটাভাবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুজো হত পট কিংবা যন্ত্রে। সেখানে ধনী গৃহস্থ বাড়িতে পুজো হত প্রতিমা বানিয়ে।
এক সময় কলকাতায় হাতে গোণা কয়েকটি সর্বজনীন দুর্গাপুজো হত। কালক্রমে পুজোর সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে আলোর রোশনাই-জৌলুসও। তবে কেবল দুর্গাপুজোই যে সর্বজনীনভাবে হয় তা নয়, বারাসত-ব্যারাকপুরের কালীপুজো, কৃষ্ণনগর, চন্দননগর, বাউড়িয়ার জগদ্ধাত্রীপুজো, উলুবেড়িয়া, কাটোয়া, চুঁচুড়া-বাঁশবেড়িয়া অঞ্চলে কার্তিক পুজো এবং নবদ্বীপের শাক্ত রাসও হয় সর্বজনীনভাবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours