Durga Puja: দশমীতে কৈলাসে গিয়ে উমা আসার বার্তা দেয় কে? জানুন নীলকন্ঠ পাখির গল্প

নীলকণ্ঠ পাখিকে পৌরাণিক মতে স্বয়ং মহাদেবের সঙ্গী মনে করা হয়। মহাদেবের বার্তাবাহক রূপে কাজ করে এই পাখি।
03_10_2022-dussehra_2022_neelkanth_23115935
03_10_2022-dussehra_2022_neelkanth_23115935

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: যখন মোবাইল ফোন ছিল না, হোয়াটসঅ্যাপ ছিল না, ডাকঘরের পিওন ছিল না তখন বার্তা পাঠানোর উপায় কি ছিল জানেন? রূপকথার গল্পে রাজকুমারী তার প্রেমিককে চিঠি লিখলে পৌঁছে দিত কে? বার্তাবাহক পাখির ভূমিকায় সবথেকে জনপ্রিয় পাখির নাম পায়রা। প্রাচীন যুগের পটভূমিকায় রচিত চলচ্চিত্রগুলিতে আমরা দেখেছি পায়রার গলায় বার্তা বেঁধে তাকে উড়িয়ে দেওয়া হতো এবং নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে সেই বার্তা পায়রা পৌঁছে দিত। কোথাও হ্যাক হতো না সেই বার্তা। এরকমই একটি পাখির কাহিনী প্রচলিত আছে জানেন কি? যে পাখিকে পৌরাণিক মতে স্বয়ং মহাদেবের সঙ্গী মনে করা হয়। মহাদেবের বার্তাবাহক রূপে কাজ করে এই পাখি। আজকের দিনে বলতে পারেন নীলকন্ঠ পাখি হলো দেবাদিদেব মহাদেবের মোবাইল ফোন। এই পাখিই কৈলাসে গিয়ে শিবকে খবর দেয় বাপের বাড়ি থেকে উমা আসছে। বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম ইন্ডিয়ান রোলার।

আরও পড়ুন: জানেন বিজয়া দশমী কেন বলা হয়?

বিজয়া দশমীর দিন নীলকন্ঠ পাখির দেখা পাওয়াকে শুভ এবং সৌভাগ্যদায়ী  বলে মনে করা হয়। কথিত আছে এই পাখিটি দেখা গেলে সম্পদ বৃদ্ধি পায় , জীবনের সমস্ত অশুভ প্রভাব বিনষ্ট হয়। ফলস্বরূপ, বাড়িতে নিত্য শুভ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হতে থাকে। নীল কন্ঠ পাখি দেখার বিষয়ে বিভিন্ন ধারণা রয়েছে। নীল কন্ঠ পাখি উড়ে যাও, সেই কৈলাসে যাও, খবর দাও, উমা আসছে তখন নীলকন্ঠ পাখি আগমনের বার্তা নিয়ে মহাদেবের কাছে এসেছিল। আরেকটি জনপ্রিয় বিশ্বাস হলো, মনে করা হয়, রাবণবধের ঠিক আগে এই পাখিটির দেখা পান রামচন্দ্র। আবার অন্য একটি পৌরাণিক মতে  রাবণবধের আগেও, সেতুবন্ধনের সময় হাজির হয়েছিল নীলকণ্ঠ পাখি। পথ দেখিয়ে রাম-সেনাকে লঙ্কায় নিয়ে গিয়েছিল সে। এরকম পৌরাণিক কাহিনি থেকেই এই পাখির মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত জায়গায়। তখন থেকেই মনে করা হয়, এই পাখির দর্শন অত্যন্ত শুভ।

আরও একটি মত রয়েছে এবিষয়ে। লঙ্কা বিজয়ে রাম ব্রাহ্মণ হত্যার পাপ করেছিলেন। কারণ দশানন রাবণ ছিলেন ব্রাহ্মণ। তখন লক্ষ্মণ সহ রামচন্দ্র শিবের পুজো করেছিলেন এবং ব্রাহ্মণকে বধ করার পাপ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। সেই সময় শিব নীলকন্ঠ পাখির রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন বলে অনেকের বিশ্বাস রয়েছে। নীলকণ্ঠ অর্থ, যার গলা নীল। দেবাদিদেব মহাদেব সমুদ্র মন্থন করার সময় বিষ পান করেছিলেন। কণ্ঠে সেই বিষকে ধারণ করার ফলে মহাদেবের কণ্ঠ নীল হয়ে যায়। তাই শিবের আর একটি নাম হলো নীলকণ্ঠ। নীলকণ্ঠ পাখিকে মর্ত্যলোকে শিবের প্রতিনিধি মানা হয় এবং দেবাদিদেব মহাদেবের রূপ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জনশ্রুতি অনুসারে, শিব পৃথিবীতে নীলকণ্ঠ পাখি রূপেই ঘোরাফেরা করেন। এই পাখিটিকে কৃষকদের মিত্রও বলা হয়। কারণ নীলকণ্ঠ পাখি জমিতে ফসলের সাথে জড়িত পোকামাকড় খেয়ে কৃষকদের উপকার করে থাকে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, একসময় দুর্গাপুজোর পর এই পাখিকে উড়িয়ে দেওয়া বনেদী ও জমিদার পরিবারগুলির ঐতিহ্য ছিল। যেমন কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়িতে আগে নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হতো বিজয়া দশমীর দিনে। এখন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের দ্বারা এটা সম্ভব হয় না। তবে কাঠের বা মাটির নীলকন্ঠ পাখি তৈরী করে সেটি প্রতিমা নিরঞ্জনের আগে জলে দেওয়া হয়।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles