মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ ষষ্ঠী (Durga Shasthi)। এই সময়টা দেবতাদের রাত্রি। তাই তাঁরা ঘুমোন। সেই কারণেই এই সময়ে দেবীকে জাগ্রত করতে হয়। হিন্দু রীতি অনুযায়ী সেই উৎসবকে বলে বোধন। যেহেতু এই সময়টা স্বয়ং মহামায়ারও (Goddess Durga) বিশ্রামের সময়, তাই তাঁকে জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন। সেই কারণে একে বলা হয় অকাল বোধন (Akal Bodhon)।
রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভের জন্য এই সময় দুর্গাপুজো করেছিলেন দশরথ পুত্র রামচন্দ্র স্বয়ং। তিনি পুজো করেছিলেন অকালে। তাই একে অকাল বোধন বলা হয়। রামচন্দ্রের আগে দুর্গাপুজো করার চল ছিল চৈত্র মাসে। যাকে আমরা বাসন্তী পুজো বলেই জানি। এজন্য বাসন্তী পুজোয় দেবীকে জাগিয়ে তোলার প্রয়োজন নেই। তাই ওই পুজোয় আমন্ত্রণ এবং অধিবাস থাকলেও বোধন থাকে না। কারণ তখন দেবতারা জেগেই থাকেন। রামচন্দ্র যে দুর্গার পুজো করেছিলেন, তিনি ছিলেন মহিষমর্দিনী। সিংহারূঢ়া দেবী দশভুজা ত্রিশূল দিয়ে বধ করছেন মহিষাসুরকে। পরবর্তীকালে সিংহবাহিনী দুর্গার সঙ্গে পুজো শুরু হল লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্তিক ও গণেশের। কারণ এই চার দেবদেবী হলেন চতুবর্গের প্রতীক। চতুবর্গ হল ধর্ম, অর্থ, কাম এবং মোক্ষ। প্রতিটি মানুষ এই চারটি বর্গই কামনা করেন। তবে এই চতুবর্গ কামনা করেন গৃহীরা, সন্ন্যাসীরা নন।
আমরা জানি, মা লক্ষ্মী দেন অর্থ। সিদ্ধিদাতা গণেশ দেন ধর্ম। কার্তিক দেন কাম। তাই সন্তান কামনায় এদেশে কার্তিক পুজো এবং কার্তিক ব্রত পালন করেন গৃহী মানুষ। আর সরস্বতী বিদ্যার দেবী। তিনি দেন মোক্ষ। বিদ্যালাভ হলে জ্ঞান অর্জন হয়। জ্ঞান লাভ হলে বহুতে অভেদ দর্শন হয়। এই অভেদ জ্ঞান লাভ হলে ব্রহ্মজ্ঞান লাভ হয়। কারণ শঙ্করাচার্য স্বয়ং বলেছিলেন, ব্রহ্ম সত্য জগন্মিথ্যা, জীব ব্রহ্মৈব না পর। ব্রহ্মই এক মাত্র সত্য, এ জগৎ মিথ্যা। জীবই ব্রহ্ম স্বরূপ। এই জ্ঞান লাভের জন্য সরস্বতী পুজোর প্রয়োজন। সেই কারণেই এখন মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গার সঙ্গে এঁদেরও পুজো হয়। তবে এঁদের পুজো হয় সপ্তমীর দিন। ষষ্ঠীতে কেবলই পুজো হয় জগন্মাতার। তিনি যে মহামায়া স্বরূপ।
+ There are no comments
Add yours