মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বলা হয়, পায়রা নাকি শান্তির প্রতীক। আর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাদ্দনের মণ্ডল বাড়ির ইতিহাসের এখনও সাক্ষ্য বহন করে চলেছে এই পায়রা। তখন অবিভক্ত বাংলা, ১৮র দশকে বেশ কিছু জমিদার দক্ষিণে রাজ্যপাট গড়ে তুলেছিলেন প্রচুর পরিমাণে। নদীপথেই মূলত চলত তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য। আর সেই সময় গোলকচন্দ্র মণ্ডল সাবান, ধান, চালের ব্যবসা করে প্রচুর ভু-সম্পত্তি ক্রয় করেছিলেন। তাঁর জীবদ্দশাতেই গ্রামের মানুষের মঙ্গল কামনার্থে ১৮৫৭ সালে শুরু হয় দুর্গাপুজো। এই বছর তাদের পুজো (Durga Puja 2024) ১৫৯তম বর্ষে পদার্পণ করল।
খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে নাচগান (Durga Puja 2024)
বাদ্দনের মণ্ডল পরিবারের পুজো আজও রীতিনীতি মেনে চললেও বেশ কিছু নিয়মের রদবদল হয়েছে সময়ের সঙ্গে। তখন এই পুজোর ৫টা দিন দূর দূরান্তের বহু প্রজাই আসতেন এই জমিদার বাড়িতে। তবে সবার প্রবেশের অগ্রাধিকার ছিল না এই মণ্ডল বাড়িতে। সিংহ দুয়ারের সামনে থাকত বন্দুকধারী দুই দারোয়ান। বাড়ির মহিলারাও সেই সময় আসতে পারতেন না। বিশাল বড় দুর্গা দালানেই পুজোর পাঁচটা দিন খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে নাচগান সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা থাকত। বস্তা বস্তা চিড়ে-গুড় আসত প্রজাদের খাওয়ানোর জন্য। তবে সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুরই পরিবর্তন হয়েছে। জমিদার নেই, জমিদারের জমিদারিও এখন আর নেই। কিন্তু এখনও রীতি মেনে চলে আসছে মণ্ডল বাড়ির (South 24 Parganas) দুর্গাপুজো। তবে পুজোর নিয়ম কানুনেও এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন।
সমস্ত কাজই এখন সামলান বাড়ির মহিলারা
আগে মায়ের সামনে বলি হত। কিন্তু সেই প্রথা আস্তে আস্তে এখন বিলুপ্ত হয়েছে। আগে সন্ধি পুজোর (Durga Puja 2024) সময় বন্দুকের গর্জন শোনা যেত মণ্ডল পরিবারে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই প্রথাও এখন বিলুপ্ত। তবে বেশ কিছু নিয়মের পরিবর্তন হলেও রীতি মেনে এখনও চলে আসছে মণ্ডল বাড়ির পুজো। আগে পুজোয় মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও এখন সমস্ত কাজই এখন সামলান বাড়ির মহিলারা। নিয়ম রয়েছে ষষ্ঠীর দিন মায়ের পুজোর সময় যে হোমযজ্ঞের আগুন জালানো হয়, তা গিয়ে নেভে সেই দশমীতে। মায়ের বোধন থেকে শুরু করে কলা বউ স্নান, সন্ধি পুজো, নৈবেদ্য তৈরি-সমস্ত কিছুই এখন বাড়ির মহিলারাই সামলান। পরিবারের সদস্যরা দেশ-বিদেশে যেখানেই থাকুক না কেন, পুজোর পুজোর পাঁচটা দিন এক সাথে আনন্দে মেতে ওঠেন। দূর দূরান্তের বহু মানুষই আসেন এই বাড়ির (South 24 Parganas) পুজো দেখতে। তবে জমিদারের জমিদারিত্ব না থাকলেও তার ইতিহাস এখনও বহন করে চলেছে পায়রা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours