মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ দুর্গা পুজোর মহাসপ্তমী (Mahasaptami)। ষষ্ঠীতে দেবীর মুখ উন্মোচন ও বোধন প্রক্রিয়া শেষ করে এরপর আসে সপ্তমীর পুজো। এই দিনে দেবী দুর্গার সবচেয়ে ভয়ানক রূপ, কালরাত্রি রূপের পুজো করা হয়। অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করেন দেবী কালরাত্রি। শাস্ত্র মতে, মহাসপ্তমীতে মহাপুজো হয়। এই তিথির দুটি নিয়ম হল নবপত্রিকা স্নান ও মহাস্নান। খুব সকালে একটি কলা গাছ গঙ্গার জলে স্নান করিয়ে, এটিকে নববধূর মতো নতুন শাড়ি পরানো হয়। যাকে আমরা কলাবউ বলে থাকি। এই আচারের পেছনে রয়েছে বিশেষ মাহাত্ম্য।
২০২২-এর মহাসপ্তমীর দিনক্ষণ ও নির্ঘণ্ট
সপ্তমীর পুজো শুরু সকাল ৯টা ২৯ মিনিটে ও সময়সীমা রাত ৬ টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত। এদিন সূর্যোদয় ৫ টা ৩২ মিনিটে, অস্ত যাবে ৫ টা ২২ মিনিটে। পূর্বাহ্ণ মধ্যে দ্ব্যাত্মক-চরলগ্নে ও চরণবাংশে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন ও সপ্তম্যাদিকল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিত পূজা প্রশস্তা।
সপ্তমীর পুজোর তাৎপর্য
শরৎকালে অনুষ্ঠিত হয় এই পুজো। এই সময় স্বর্গের দেবতাগণ ঘুমিয়ে থাকেন। তাই দেবীকে ঘুম থেকে তোলার জন্য আহ্বান করতে হয়। দেবী এই সময় কুমারী (Kumari) রূপে বেল গাছের পাতায় অবস্থান করেন। তাই ষষ্ঠীর দিন বেল গাছের তলায় দেবীর বোধন (Bodhan) ও অধিবাস (Adhibas) সম্পন্ন হয়। এরপর বেল গাছের একটি ডালকে চিহ্নিত করে রাখা হয় এদিন। আর আজ অর্থাৎ সপ্তমীর দিন ওই চিহ্নিত ডাল কেটে মণ্ডপে পুজোর স্থানে নিয়ে আসতে হয়। মহাসপ্তমীর দিন সকালে নিকটস্থ নদী বা কোনো জলাশয়ে এটি নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন কলা গাছের সঙ্গে বেলগাছের ডাল সহ আরও ৭টি গাছের ডাল নিয়ে একেবারে মূল থেকে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর পুরোহিত নিজেই কাঁধে করে নবপত্রিকা (Nobopatrika) নিয়ে যান। তাঁর পিছন পিছন ঢাকীরা ঢাক বাজাতে বাজাতে এবং মহিলারা শঙ্খ ও উলুধ্বনি করতে করতে যান। শাস্ত্রবিধি অনুযায়ী, এরপর নবপত্রিকা বা কলা বউ স্নান করানোর পর একে নতুন শাড়ি পরানো হয়। তারপর পূজামণ্ডপে নিয়ে এসে নবপত্রিকাকে দেবীর ডান দিকে একটি কাষ্ঠসিংহাসনে স্থাপন করা হয়। গণেশের পাশে এটিকে রাখার কারণে অনেকে মনে করেন যে, কলাবউ (Kola Bou) আসলে গণেশের বউ। কিন্তু আদতে এটি নবপত্রিকা বা গণেশের জননী। সপ্তমীর আর একটি বিশেষ অনুষ্ঠান হল মহাস্নান। নবপত্রিকা স্নানের পর মহাস্নান অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দুর্গার মহাস্নান সম্পন্ন হয়।
+ There are no comments
Add yours