মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইয়েস ব্যাঙ্ক ডিএইচএফএল (Yes Bank- DHFL Scam) দুর্নীতি মামলায় ৪১৫ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। এর মধ্যে রয়েছে সঞ্জয় ছাবড়িয়ার ২৫১ কোটি টাকার সম্পত্তি এবং অবিনাশ ভোসলের ১৬৪ কোটি টাকার সম্পত্তি।
অর্থ তছরুপ অ্যাক্ট, ২০০২ -এর অধীনে এই দুইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ইডি। ইডির ধারণা এই সম্পত্তির পরিমাণ যাবে ১,৮২৭ কোটি টাকা অবধি।
আরও পড়ুন: পার্থর বাড়িতে নথির ফাইলটি তল্লাশির আগে রেখে এসেছিলেন কে? ‘ষড়যন্ত্র’?
সঞ্জয় ছাবড়িয়ার যে সম্পত্তিগুলি রয়েছে, সেগুলি মূলত জমি বা ফ্ল্যাট। মুম্বইয়ের স্যান্টাক্রুজে ১১৬.৫ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে সঞ্জয়ের। এতে সঞ্জয়ের কোম্পানির ২৫% ইক্যুইটি শেয়ার রয়েছে। মুম্বইয়ে ৩ কোটি টাকার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। দিল্লি বিমান বন্দরের কাছে একটি ১৩.৬৭ কোটি টাকার একটি হোটেল রয়েছে। মোট ৩.১০ কোটি টাকা মূল্যের তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে তাঁর।
অবিনাশ ভোসলের বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ১০২.৮ কোটি টাকা মূল্যের মুম্বইয়ের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। পুনেতে একটি ১৪.৬৫ কোটি টাকা এবং একটি ২৯.২৪ কোটি টাকার জমি। এছাড়াও নাগপুরে ১৫.৫২ কোটি টাকার এবং ১.৪৫ কোটি টাকার দুটি জমি।
আরও পড়ুন: অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ কেরিম খান, টুলু মণ্ডলের বাড়িতে যৌথ অভিযানে ইডি-সিবিআই
ইতিমধ্যেই ইডি ইয়েস ব্যাঙ্কের রানা কাপুর এবং ডিএইচএফএলের কপিল ওয়াধাওয়ান এবং ধীরাজ ওয়াধাওয়ানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। এদের তিনজনের বিরুদ্ধেই দায়ের হয়েছিল এফআইআর। অভিযোগ ছিল, ইয়েস ব্যাঙ্কের রানা কাপুর অন্যায়ভাবে
ডিএইচএফএলকে অর্থ সাহায্য করেছেন এবং ওই কোম্পানি থেকে বিপুল সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন।
ইডির দাবি রানা কাপুর ও বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে মিলে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। যেমন ডিএইচএফএল আবাসন ক্ষেত্রে টাকা লগ্নি করত। ভারতে আবাসন শিল্পের সংকটের সঙ্গে এই কোম্পানির দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঘটনা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ডিএইচএফএল ৩৭০০ কোটি টাকা ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিল। এরাই আবার রানা কাপুরের এক কন্যার পরিচালিত সংস্থাকে ৬০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়। কাপুর কন্যা মাত্র ৪০ কোটি টাকার একটি জমি জামানত রেখে এই টাকা পায়। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের বক্তব্য অনুযায়ী জামানত রাখা ওই সম্পত্তিটার মধ্যেও জালিয়াতি আছে। কারণ সেখানে কাগজের হেরফের করে কৃষিজমিকে রেসিডেন্সিয়াল প্লট হিসেবে দেখানো হয়েছে। আবার এই ডিএইচএফএল ও ইয়েস ব্যাঙ্কের যৌথ দায়িত্বে ছিল উত্তরপ্রদেশ পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেডের কর্মীদের এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড। সেখানে ২২৬৭ কোটি টাকার গরমিল ধরা পড়েছে। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ব্যাঙ্ক লাটে ওঠার কিছুদিন আগে রানা কাপুরের স্ত্রী বিন্দু কাপুর ৩৭৮ কোটি টাকা দিয়ে গৌতম থাপারের (অজন্তা রিয়েলিটি লিমিটেড) এর কাছ থেকে একটি বাড়ি কেনেন। এই বাড়িটি আবার ইয়েস ব্যাঙ্কের কাছে মর্টগেজ রাখা ছিল। থাপারের কাছ থেকে ৩৭৪ কোটি টাকা পাওয়ার পরে ইয়েস ব্যাঙ্ক সম্পত্তিটিকে মুক্ত করে। কিন্তু এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট কাগজপত্র দেখিয়ে প্রমাণ করেছে এই সম্পত্তি দেখিয়ে থাপার গ্রুপ দু’দফায় ইয়েস ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ১২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।
ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে যে রানা কাপুর ৭৮টি শেল কোম্পানির মালিক এবং রানা কাপুরের তিন কন্যা ৪২টি কোম্পানির ডিরেক্টর যার অনেকগুলিই কোম্পানি আইনে রেজিস্ট্রি করা নয়। তার ৪২,০০০ কোটি টাকার অনাদায়ী ঋণের মধ্যে ২০,০০০ কোটি টাকা স্বয়ং রানা কাপুর নিজের সিদ্ধান্তে বিভিন্ন কোম্পানিকে ঋণ দিয়েছিলেন।
+ There are no comments
Add yours