ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টের নম্বর কারচুপি করেছে স্কুলগুলি, দাবি সিবিএসই-র..!
সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পরীক্ষার নম্বর নিয়েই দু'নম্বরি করার অভিযোগ উঠল সিবিএসই-র (CBSE) পরীক্ষায়। দিল্লির এই বোর্ডের কর্মকর্তাদের ধারণা দশম-দ্বাদশে ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টের নম্বরে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে এবং এই কারচুপির পিছনে রয়েছে স্কুলগুলি। সিবিএসই-র কর্তাদের মতে স্কুলগুলি পরীক্ষার্থীদের খাতায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই কাজে লাগিয়ে দেখা গিয়েছে প্র্যাকটিক্যাল এবং থিওরির পেপারের নম্বরের মধ্যে ব্যাপক অমিল রয়েছ।
সিবিএসই (CBSE) সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত পড়ুয়ারা স্কুলের হাতে থাকা ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টে ভালো নম্বর পেয়েছে তাঁরাই আবার বোর্ডের থিওরি পরীক্ষায় খারাপ ফল করেছে। ভালো ছাত্র-ছাত্রী বা যুক্তি-তর্কের জায়গায় এই তারতম্য হওয়ার কথা নয়। এখানেই প্রশ্ন উঠছে স্কুলের হাতে থাকা ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টের স্বচ্ছতা নিয়ে। এক্ষেত্রে স্কুলে হাতে থাকা ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট এর স্বচ্ছতা ও নির্ভরযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু গাইডলাইন পাঠানো হচ্ছে স্কুলগুলিকে। যাতে আগামীতে এই ধরণের গরমিল না করা হয়। সিবিএসই মনে করছে সারা দেশের ৫০০-র বেশি স্কুল ৫০ শতাংশর বেশি ছাত্রছাত্রীকে ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে বেশি নম্বর পাইয়ে দিয়েছে স্কুল। বোর্ডের পড়ুয়াদের মোট নম্বরের একটা বড় অংশ স্কুলের হাতে থাকে। সেখানে প্রাকটিক্যাল ও প্রজেক্টের মাধ্যমে স্কুল নিজেদের ছাত্র-ছাত্রীদের মূল্যায়ন করে থাকে। সেই মূল্যায়নের নম্বর বোর্ডের কাছে পরবর্তীকালে জমা দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত নম্বর দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের।
আরও পড়ুন: এবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বছরে দুবার ভর্তির সুযোগ! বড় সিদ্ধান্ত ইউজিসির
এক্ষেত্রে কলকাতার নামকরা সিবিএসই স্কুল ভারতী বিদ্যাভবনের প্রিন্সিপাল অরুণ দাশগুপ্ত বলেন, “যদি সত্যিই গরমিল হয়ে থাকে তাহলে পড়ুয়ারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পরবর্তী ক্লাসে ভর্তির ক্ষেত্রে অসুবিধার পাশাপাশি পরবর্তী ক্লাসে তাঁদের পড়া বুঝতে অসুবিধা হতে পারে। কেউ যদি মনে করে স্কুলগুলি এই গরমিল করেছে তাহলে সেই স্কুলগুলোর নাম প্রকাশে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
এক্ষেত্রে সিবিএসই স্কুলগুলির নাম প্রকাশ্যে না আনলেও অ্যাডভাইজরি জারি করেছে। যাতে আগামী দিনে এই ধরনের গরমিল ঠেকানো যায়। এছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রে মানোন্নয়নের জন্য বোর্ডের তরফে একটা ক্লাসে সর্বোচ্চ কতজন ছাত্র ভর্তি নেওয়া যাবে তাও জানানো হয়েছে। ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষকের অনুপাত কী হবে সেসব বিষয়ে গাইডলাইন দিয়েছে (CBSE) বোর্ড। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মার্কস বাড়িয়ে দেওয়ার রোগ শুধুমাত্র সিবিএসইতে রয়েছে এমনটা নয়। পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ শিক্ষা সংসদেও এই অভিযোগ উঠেছে এর আগেও। ২০২১ সালে করোনা কালে মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। সেবার স্কুলকে এই নম্বর দিতে বলা হয়েছিল। তখন দেখা যায় ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিকে ফুল মার্কস পেয়েছিল। পরে বোর্ডে সন্দেহ হওয়ায় মার্কস ট্যাবুলেশন শিট চেয়ে পাঠানো হয়। পরে সেই সংখ্যা ২৫০ থেকে ৭৯তে নেমে আসে। এমনকী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজের প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার যে নম্বর কলেজের হাতে থাকে, সেখানেও দেখা যায় ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়। অনেক সময় এক্ষেত্রে নেপোটিজম বা স্বজনপোষণের অভিযোগও ওঠে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।