যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) নামেই মুক্তমনা! র্যাগিংয়ের অভিযোগ জানাতেই রাত কাবার
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্বপ্নদীপ কুণ্ডু। সংগৃহীত ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কখনও হস্টেলে, আবার কখনও কলেজ ক্যাম্পাসে। সিনিয়র পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে একাধিক বার হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজে নানা ঘটনায় প্রকাশ্যে এসেছে র্যাগিং রোগের ছবি! কিন্তু গত কয়েক বছরে পড়ুয়া-শিক্ষক সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পোক্ত করে অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজ রুখেছে র্যাগিং রোগ! প্রশ্ন উঠছে, অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজ পারলে, রাজ্যের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) কেন শিক্ষক-পড়ুয়ার সহজ সম্পর্ক তৈরি করতে পারল না? কেন কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার জন্য এখনও লাল ফিতের গেড়োয় আটকে থাকতে হয় সাধারণ পড়ুয়াদের? মুক্তচিন্তার প্রাঙ্গণে কেন সহজ নয় পড়ুয়া ও কর্তৃপক্ষের যোগাযোগের মাধ্যম?
কীভাবে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে যোগাযোগ সহজ হয়েছে?
রাজ্যের অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে বিভিন্ন জেলা থেকে পড়ুয়ারা আসেন। বিভিন্ন সময়েই এই হস্টেলগুলিতেও প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে র্যাগিং রুখতে নতুন পন্থা নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল। অধিকাংশ কলেজে তৈরি হয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা ভর্তির পরেই তাদের নিয়ে গ্রুপ তৈরি হয়। সেই গ্রুপে থাকেন কলেজের একাধিক বিভাগের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মী, হস্টেলের সুপার। কোনও রকম অসুবিধার সম্মুখীন হলেই পড়ুয়া ওই গ্রুপে লিখতে পারবেন। একাধিক ব্যক্তি তাঁর সমস্যার কথা জানতে পারবেন। দ্রুত পদক্ষেপ সহজ হবে। আর তাতেই কাজ হচ্ছে বলে জানাচ্ছে পড়ুয়াদের একাংশ। কলেজ ক্যাম্পাস হোক কিংবা হস্টেল, সরাসরি কলেজের কর্তৃপক্ষ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধা পাওয়ায় পঠনপাঠন থেকে অন্যান্য সমস্যা সহজেই জানানো যাচ্ছে। ফলে, হেনস্তা কমছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন কোথায়?
দিন কয়েক আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের দেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল থেকে উদ্ধার হয়। অভিযোগ, সিনিয়র ছাত্ররা তাঁকে র্যাগিং করে। আর তার জেরেই ওই ছাত্র মারা যান। এরপরেই প্রশ্নের মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হস্টেল সুপার, ডিন অব স্টুডেন্টের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কেন একজন প্রথম বর্ষের পড়ুয়া নির্দিষ্ট নিয়মমাফিক হস্টেলে থাকতে পারলেন না, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পড়ুয়াদের একাংশ জানাচ্ছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) কোনও রকম হেনস্তার অভিযোগ করতে হলে ই-মেল মারফত করতে হয়। কিন্তু রাতে হস্টেলে একাধিকবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। তৎক্ষণাৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের কোনও রকম উপায় নেই। কার্যত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাধারণ পড়ুয়ার যোগাযোগ করা বেশ কঠিন। আর তার ফলেই প্রশ্ন উঠেছে, মুক্তমনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন থাকবে এই লাল ফিতের গেড়ো?
কী বলছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) কর্তৃপক্ষ?
সাম্প্রতিক পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক সে কথা জানালেও কেন এমন ঘটনা ঘটলো এবং তার দায় কতখানি কর্তৃপক্ষের, সে নিয়ে মুখে কুলুপ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের! হস্টেল সুপার এবং ডিন অব স্টুডেন্টের ভূমিকা নিয়েও থাকছে প্রশ্ন! আর এসবের কোনও উত্তর দিতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) কর্তৃপক্ষ!
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।