মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফিফা বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে অভিযান শুরু করেছে ইরান। ম্যাচ শুরুর আগে অভিনব প্রতিবাদ জানালেন ইরানের ফুটবলাররা। কেউই গাইলেন না জাতীয় সংগীত। ইরানে হিজাববিরোধী যে আন্দোলন চলছে তার প্রতি সমর্থন জানাতেই এই পদক্ষেপ। ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একমাস ধরে প্রতিবাদ চলছে। যা গোটা ইরানকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তারই প্রতিবাদে এভাবে মৌন থাকা।
ইরানে সরকার বিরোধী আন্দোলন
ইরানে সরকার-বিরোধী আন্দোলন চলছে। কিছু দিন আগেই গোটা দেশ উত্তপ্ত হয়েছে। বিক্ষোভকারী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ফুটবল বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলালেন না ইরানের ফুটবলাররা। ম্যাচের আগেই ইরানের অধিনায়ক আলিরেজা জাহানবকশ জানিয়েছিলেন, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে কিনা সেটা দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, ইরানের বেশির ভাগ ফুটবলারই জাতীয় সঙ্গীত না গাওয়ার পক্ষে মত দেন। ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, স্টেডিয়ামে হাজির অনেক সমর্থকও জাতীয় সঙ্গীতের সময় চুপ ছিলেন। দু’মাস আগে প্রতিবাদী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে ফুঁসছে ইরান। রোজই বিক্ষোভ হচ্ছে গোটা দেশে। এদিন খেলা শুরুর আগে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে যখন ইরানের জাতীয় সংগীত বাজানো হয় তখন তাতে ইরানের ১১ ফুটবলারের কেউই গলা মেলাননি। তাঁরা নীরব ছিলেন। এটি দেশে আন্দোলনকারীদের প্রতি নীরব সমর্থন এবং শাসকের প্রতি প্রতিবাদ।
আরও পড়ুন: বিশ্ব-ফুটবলের যুদ্ধ কাতার ছাড়িয়ে কলকাতাতে! শহরের রাস্তায় প্রিয় তারকাদের ছবি
কী ঘটেছিল
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, পুলিশি হেফাজতে কুর্দিশ তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকেই বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে ইরানে। আমিনির দোষ ছিল, তিনি ঠিকমতো হিজাব পরেননি। যা ইরানে অপরাধ। এর বিরুদ্ধে সরব হয় ইরানের সাধারণ মানুষ। দেশের মহিলারা প্রাণ হাতে নিয়ে রাস্তায় নামেন। তাঁদের দাবি, নারীকে স্বাধীন ভাবে বাঁচার এবং পোশাক পরার অধিকার দিতে হবে। এ নিয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ চলবে না। মাহশার মৃত্যুতে যে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল, সেই প্রতিবাদই এখন দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের মৃত্যু পর্যন্ত চাইছে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখনও পর্যন্ত শতাধিক বিক্ষোভকারী প্রাণ হারালেও প্রতিবাদের আগুন নেভার নাম নিচ্ছে না। দেশের নানা প্রান্তে প্রতিবাদে নেমেছে তরুণ প্রজন্ম। শুধু দেশ নয়, সমাজমাধ্যমে বাধাহীন ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আঁচ।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours