Durga Puja 2023: শারদোৎসবে দুর্গাপুজো নয়, মনসা পুজোয় মাতেন বালুরঘাটের ফুলঘরাবাসী

দুর্গার আসনে মা মনসার পুজো!
Durga_Puja_2023_(13)
Durga_Puja_2023_(13)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কথিত আছে, প্রায় তিনশো থেকে সাড়ে তিনশাে বছরেরও বেশি সময় ধরে দুর্গার (Durga Puja 2023) আসনে মা মনসার পুজো হয়ে আসছে বালুরঘাটের ফুলঘরা গ্রামে। পুরনাে নিয়ম-রীতি এবং রেওয়াজ কিছুই বদলায়নি আজও। মায়ের কাছে নিষ্ঠা সহকারে কোনও কিছু চাইলে তা পূর্ণ হয়, এমনটাই বিশ্বাস গ্রামবাসীদের।

কীভাবে শুরু?

জনশ্রুতি রয়েছে, বহুকাল আগে ফুলঘরা গ্রামের অনেকেই সর্পাঘাতে মারা গিয়েছিলেন। শুধুমাত্র মানুষ নয়, সর্পাঘাতে অনেক পশুও মারা গিয়েছিল। অনেক কিছু করেও সর্পাঘাতে মৃত্যু প্রতিরােধ করতে পারছিলেন না গ্রামবাসীরা। সেই সময় গ্রামের এক ব্যক্তি স্বপ্ন দেখেন, গ্রামে মনসা পুজো করলেই কেউ আর সর্পাঘাতে মারা যাবে না। এর পর আত্রেয়ী নদীতে এক দিন স্নান করতে গেলে মা মনসার কাঠামো ভেসে যেতে দেখেন তিনি। গ্রামবাসীরা সেই কাঠামো তুলে নিয়ে এসে মন্দিরে স্থাপন করে মা মনসার পুজো শুরু করেন। প্রথমে শ্রাবণ মাসে এই পুজো শুরু হয়। গােটা এলাকায় কোনও দুর্গাপুজো না হওয়ায় সেই পুজোর সময়টা বদলে শারদোৎসবে (Durga Puja 2023) মা মনসার পুজো শুরু হয়। সেই থেকে শুরু হয় দুর্গার আসনে মা মনসার পুজো।

সবাই একত্রিত হন পুজোয়

এখনও সেই একই নিয়ম-রীতিতেই এই পুজো করে আসছে ফুলঘরা বারােয়ারি মনসা পুজো কমিটি। পুজোর কয়েকটা দিন চন্ডী ও মনসামঙ্গল গান হয়। মেয়ে-আত্মীয়রা সব এই সব গ্রামে আসে। এখানে মা মনসার এক পাশে থাকেন দেবী লক্ষ্মী। অপর পাশে থাকেন দেবী সরস্বতী (Durga Puja 2023)। পুজোর চার দিন নিয়ম মেনে গ্রামের সকলে নিরামিষ খাবার খান। দেবী দুর্গার সমস্ত নিয়ম মেনেই ফুলঘরা গ্রামে মা মনসা পূজিতা হন। পুজোর সময় গ্রামে সবাই একত্রিত হন। আজও এই পুজোকে ঘিরে মেতে ওঠেন গ্রামের আট থেকে আশি সকলেই। বহিরাগত শিল্পী ও স্থানীয় শিল্পীদের দ্বারা পুজো প্রাঙ্গনে নাটক থেকে যাত্রাগান অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর কয়েকটা দিন মেলাও বসে ফুলঘরা গ্রামে। স্থানীয় ছেলেমেয়েরাও বেশির ভাগ সময় গ্রামেই কাটান। 

আর কেউ সাপে কেটে মারা যাননি

এবিষয়ে সান্ত্বনা মণ্ডল জানান, তাঁদের পূর্বসূরি গুদর মণ্ডল এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা। তাঁদের জায়গাতেই পুজোটা হয় এখনও। তবে এখন বারােয়ারি হিসেবেই পুজোটা হয়। গুদর মণ্ডল বহু দিন আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো শুরু করেন। তার পর থেকে এই গ্রামে সাপে কেটে বা বিষে কেউ আর মারা যায়নি। বংশ পরম্পরায় বাদ্যকর, পুরােহিত ও মৃৎশিল্পী কাজ করে আসছেন। এমনকি পুজোর বায়না দিতেও হয় না বা ডাকতে হয় না। সময় মতো চলে আসেন সকলেই। পুরােনাে সেই রীতি রেওয়াজ মেনেই আজও পুজো হয় এখানে। এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শিরিষ মাহাতো জানান, পুজোর কয়েক দিন গ্রামে ফিরে আসে সব বাড়ির ছেলেমেয়েরা। পাশাপাশি গ্রামবাসীরা পুজোর কয়েকটা দিন আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। পুজোয় দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। মানত করেন তাঁরা। মানত পূরণ হলে মাকে বিভিন্ন অলঙ্কার দেন (Durga Puja 2023)। 

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles