সর্দি-কাশির মতোই ভোগান্তি বাড়াচ্ছে চোখের সংক্রমণ! কীভাবে মোকাবিলা সম্ভব?
প্রতীকী ছবি
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
বর্ষা হোক বা শীত! যে কোনও ঋতু পরিবর্তনের সময়েই ঠান্ডা লাগা, সর্দি-কাশির মতোই ভোগান্তি বাড়ায় চোখের সংক্রমণ (Eye Infection)! চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া কিংবা চুলকানির মতো উপসর্গ দেখা দেয়। একরত্তি শিশুদের মধ্যে বাড়ছে চোখের সংক্রমণ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সব সময় যে কনজাংটিভাইটিস হচ্ছে, এমন নয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বছরে একাধিকবার শিশুরা চোখের সংক্রমণে ভুগছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
কেন বারবার চোখে সংক্রমণ হচ্ছে? (Eye Infection)
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দূষণের জেরে বাড়ছে সংক্রমণ। ফুসফুস হোক বা চোখ, সংক্রমণ রোগের দাপট বাড়াচ্ছে দূষণ। বিশেষত বায়ু দূষণের জেরে চোখের সংক্রমণে সমস্যা বাড়ছে। চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে গেল যেমন শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বাড়ে। তেমনি, চোখ জ্বালা করে। তার জেরেই সংক্রমণ হয়। তাই শীতে অনেকের চোখে সংক্রমণের সমস্যা হয়। কারণ, ওই সময়ে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়।
তাছাড়া, ছোট থেকেই এখন ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইলের পর্দায় চোখ রাখতে অভ্যস্থ অনেকেই। আর এর জেরে সমস্যা আরও বাড়ছে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বহু শিশুই মোবাইলের স্ক্রিনে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থাকছে। তাই চোখে নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমনকী চোখ শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে (Eye Infection)। ফলে, এক ধরনের চুলকানি আর ব্যথা অনুভব হয়। যার জেরে শৈশবেই কমছে দৃষ্টিশক্তি।
কীভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা হবে?
পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতে খাবারে বিশেষ নজরদারি জরুরি। শিশুদের নিয়মিত ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, পালং শাক, ব্রকোলির মতো খাবার খাওয়া জরুরি। এতে ভিটামিন এ, সি থাকে। তাই চোখের পক্ষে উপকারী। পাশপাশি, নিয়মিত ডিম সিদ্ধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। কারণ ডিমে ল্যুটিন থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের জন্য ভালো। এছাড়া, কাজু, পেস্তা, বাদাম খাওয়া জরুরি। এগলিতে ভিটামিন ই থাকে। যা মায়োপিয়ার ঝুঁকি কমায়। গাজর, বিট নিয়মিত খেলে চোখের রেটিনা সুস্থ থাকে (Eye Infection)। কারণ, এই সব্জিগুলিতে ক্যারোটিন আছে।
খাবারের পাশাপাশি স্ক্রিন টাইমের উপরেও বিশেষ নজরদারি জরুরি বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁরা জানাচ্ছেন, বর্তমানে পড়াশোনার সঙ্গে ল্যাপটপ, মোবাইল বিশেষ ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। তাই খুব কম বয়স থেকেই শিশুদের ল্যাপটপ, মোবাইলে সময় কাটাতে হয়। অভিভাবকদের নজর দিতে হবে, যাতে বিনোদনের জন্য শিশুরা এই ইলেকট্রনিক গ্যাজেটে নির্ভর হয়ে না পড়ে। কতক্ষণ একজন শিশু স্ক্রিন টাইম কাটাচ্ছে, সেদিকে অভিভাবকদের নজরদারি জরুরি। কারণ, স্ক্রিন টাইম না কমালে, চোখের সমস্যা কমবে না।
নিয়মিত যোগাভ্যাসের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, যোগাভ্যাস দেহের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করে। এর ফলে, প্রত্যেক অঙ্গে ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ হয়। শরীর সুস্থ থাকে। চোখও ভালো থাকে। পাশপাশি ধ্যান যোগাভ্যাসের অন্যতম অংশ। এতে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকার পাশপাশি চোখের বিশ্রাম হয়। যা খুব জরুরি। তাই নিয়মিত যোগাভ্যাসের অভ্যাস থাকলে শিশুদের চোখ ভালো থাকবে (Eye Infection)।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।