Child Behaviour: শিশুদের শরীরের সুস্থতার খেয়াল তো রাখছেন, মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিচ্ছেন তো?
প্রতীকী চিত্র।
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
শরীরের পাশপাশি মানসিক বিকাশ জরুরি। তাই শিশুদের শরীরের সুস্থতার খেয়াল রাখার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে হবে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশুর বয়স মাস ছয়েক হলেই তার মানসিক স্বাস্থ্য আর আচরণে বিশেষ নজরদারি জরুরি। তবে, অনেক ক্ষেত্রে মা-বাবা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যথেষ্ট সচেতন নয়। আর তার জেরেই অনেক সময় শিশুকে নানান জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত কয়েক দশকে বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে অটিস্টিক সমস্যা (Autistic Pride Day 2024)। কিন্তু সমস্যার অনুপাতে সচেতনতা বাড়েনি। তাই ভোগান্তি বাড়ছে শিশুদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, অটিস্টিক এক ধরনের আচরণগত সমস্যা। এই সমস্যা পুরোপুরি কমে না। কিন্তু ঠিক সময়ে সমস্যা নির্ণয় হলে দ্রুত নানান থেরাপি করানো যায়। তার জেরে আচরণগত ত্রুটি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। শিশু স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশু অটিস্টিক কিনা, তা নির্ণয় করতেই পরিবারের অনেক দেরি হয়ে যায়। তাঁরা জানাচ্ছেন, অসচেতনতা এই সমস্যার প্রধান প্রতিবন্ধকতা।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কয়েকটি লক্ষণ দেখে বোঝা যায়, শিশুর অটিজমের মতো আচরণগত সমস্যা রয়েছে কিনা। ন'মাসের বেশি বয়সের শিশুকে নাম ধরে বারবার ডাকার পরেও কোনও সাড়া না দিলে বুঝতে হবে, শিশুর বিকাশে সমস্যা রয়েছে। সেটা অটিজম হতে পারে।
এক বছর বয়সেও শিশুর খেলার প্রতি অনাগ্রহ অটিজমের অন্যতম লক্ষণ। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশুরা খেলার সময় নানা জিনিস কল্পনা করে। পাশপাশি বড়দের নকল করেও নানান খেলাধু্লো করে। অটিজমে আক্রান্ত হলে এই কল্পনাশক্তি থাকে না। নকল করার ক্ষমতাও থাকে না। তাই তাদের খেলনার প্রতি বিশেষ আগ্রহ থাকে না। তাই এক বছর বয়সী কোনও শিশু কখনই খেলার প্রতি আগ্রহ না দেখালে পরিবারকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
পরিবারের কেউ বাইরে গেলে কিংবা কোনও অতিথি বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় বিদায় জানায়। বিশেষ করে, শিশুরা পাল্টা বিদায় জানায় (Child Behaviour)। এটা শিশুদের খুব স্বাভাবিক আচরণ। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, অটিজমের সমস্যা থাকলে শিশুরা বিদায় জানাতে পারে না। হাত নাড়িয়ে বিদায় জানানো রপ্ত করতেও পারে না। তাই পাল্টা বিদায় জানানোর অভ্যাস একেবারে না তৈরি হলেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিশু অটিজম আক্রান্ত হলে কখনই সরাসরি চোখের দিকে তাকাবে না। এমনই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাই আট-ন'মাস বয়স থেকে শিশু পরিবারের সদস্যদের মুখের দিকে কিংবা চোখের দিকে তাকিয়ে হাসছে কিনা, সেটা খেয়াল রাখা জরুরি বলেও জানাচ্ছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
অটিজমে (Autistic Pride Day 2024) আক্রান্ত শিশুদের আরেকটি লক্ষণ নতুন খেলনার প্রতি অনাগ্রহ। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, অনেক সময় দেখা যায়, অটিস্টিক শিশু একটা নির্দিষ্ট খেলনা নিয়েই খেলে। একটি নির্দিষ্ট ভাবে এক লাইনে খেলনা সাজিয়ে রাখতে চায়। একটু এদিক-ওদিক হলেই বড্ড অস্থির হয়ে পড়ে। বিশেষত বছর দেড়েক বয়সের পরেও যদি শিশু নতুন খেলনায় একেবারেই আগ্রহ না পায়, তাহলে তার আচরণগত ত্রুটি আছে কিনা, তা যাচাই করা জরুরি।
শিশুর বয়স ৩৬ মাস হলেও সে যদি কোনও ধরনের খেলায় অংশগ্রহণ না করে বা আকর্ষিত না হয়, তাহলে সেটা অটিজমের অন্যতম লক্ষণ হতে পারে।
বছর চারেকের শিশু গান-নাচের প্রতি একেবারেই আকর্ষিত না হওয়া কিংবা নকল করার একদম চেষ্টা না করা অটিজমের অন্যতম লক্ষণ বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশুর অটিজম রয়েছে কিনা, তা যাচাই করা প্রথম কাজ। তাই এমন কিছু লক্ষণ দেখা গেলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া দরকার। প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর অটিজম আছে কিনা নিশ্চিত হওয়া দরকার। পাশপাশি তাঁরা জানাচ্ছেন, অটিজমের নানান পর্যায় রয়েছে। নির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, শিশুর অটিজম কোন পর্যায়ে রয়েছে। প্রত্যেক পর্যায়ের জন্য আলাদা ধরনের থেরাপি রয়েছে। দ্রুত রোগ নির্ণয় হলে থেরাপি দ্রুত শুরু করা যায়। আর শিশুর পাশপাশি অভিভাবকদের জন্যও রয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণ। যাতে তাঁরা শিশুর জীবন যাপন সহজ করতে পারেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ, অযথা ভয় পাওয়ার দরকার নেই। সচেতনতাই শিশুকে সুন্দর জীবন (Autistic Pride Day 2024) দিতে পারবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।