AIDS: এইডস নিয়ে সচেতনতা কমছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্টে স্পষ্ট রাজ্য প্রশাসনের উদাসীনতা! 

রাজ্য জুড়ে বাড়ছে মারণ রোগ এইডস!
AIDS
AIDS

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

নিঃশব্দ ‘মহামারী'-র মতো রাজ্যে গ্রাস করছে এইডস। কিন্তু তারপরেও কমছে সচেতনতা। যার জেরে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরও বড় খেসারত দিতে হবে বলেই আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞ মহল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকার কবে তৎপর হবে? অন্তত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী স্পষ্ট, সব স্তরে সচেতনতা কর্মসূচি আর প্রয়োজনীয় কর্মশালা একেবারেই হচ্ছে না। এমনকি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে রোগ আছে কিনা, তা যাচাইও ঠিকমতো হচ্ছে না। যার জেরে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। 
বিশ্ব এইডস সচেতনতা দিবসে বিশেষজ্ঞ মহল জানাচ্ছে, রাজ্যে নেই প্রয়োজনীয় কর্মসূচি। আর তার জেরেই রাজ্য জুড়ে বাড়ছে এই মারণ রোগ।

কী বলছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য?

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে এইডস নিয়ে সচেতনতার হার কমছে। বিশেষত পুরুষদের মধ্যে সেই সচেতনতার হার আরও কম। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভিস ৫ (এনএফএসএইচ ৫) রিপোর্ট অনুযায়ী, এইচআইভি নিয়ে বাঙালি মহিলাদের মধ্যে সচেতনতার হার ১৮.৫ শতাংশ। গ্রামীণ মহিলাদের সচেতনতা ১২.৩ শতাংশ আর শহুরে মহিলাদের মধ্যে এই হার ৩০.৮ শতাংশ। সেই তুলনায় পুরুষরা অনেকটাই পিছিয়ে। এইচআইভি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পুরুষদের সচেতনতার সার্বিক হার ১৫.৫ শতাংশ। শহুরে পুরুষদের এইচআইভি নিয়ে সচেতনতা ২১.৩ শতাংশ। গ্রামে সেই হার ১২.৮ শতাংশ। অর্থাৎ, পুরুষদের তুলনায় সচেতনতায় এগিয়ে মহিলারা। 
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, এইচআইভি নিয়ে সচেতনতা বলতে বোঝানো হয়েছে, এইচআইভি সংক্রমণ কীভাবে হয়, স্পর্শ, হাঁচি কিংবা এক শৌচাগার ব্যবহার থেকে নয়। বরং অসচেতন যৌন সম্পর্ক থেকেই এই রোগ সংক্রমিত হয়। যৌন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা জরুরি, সে নিয়ে বাঙালি পুরুষদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। 
এইচআইভিকে 'নিঃশব্দ মহামারী' বলেই ব্যাখ্যা করতে চান বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আরেক হিসাব অনুযায়ী, গোটা দেশের ৬ শতাংশ এইচআইভি রোগী পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। প্রতি কয়েক হাজার মানুষ নতুন করে এইচআইভি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাবা-মায়ের থেকে এই রোগ সন্তানদের মধ্যেও সংক্রমিত হচ্ছে। তাই এই রাজ্যে শিশুরাও এইচআইভি-তে আক্রান্ত হচ্ছে। যার জেরে জীবনভর তাদের এই রোগের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। দেহের প্রতিষেধক ক্ষমতা খুব কম থাকে। এইচআইভি আক্রান্তরা যে কোনও রোগে খুব সহজেই কাবু হয়ে যান।

এইডস কী? 

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এইডস হলো একধরনের সংক্রামক রোগ। এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এই রোগ হয়। এই রোগে আক্রান্তদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমতে থাকে। জীবন ভর স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন না।

এইডস নিয়ে বাড়তি দুশ্চিন্তা কেন? 

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, যে হারে এইডস নিয়ে রাজ্য প্রশাসন ঢিলেঢালা মনোভাব দেখাচ্ছে, তাতে এ রাজ্যের শিশুদের মধ্যে এইডস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়বে। কারণ, মা কিংবা বাবা এইডস আক্রান্ত কিনা, সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। কারণ, সরকারের তরফে ঠিকমতো পরীক্ষা করা হচ্ছে না। অনেকের গর্ভস্থ অবস্থায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না। আর এর জেরেই নবজাতক এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, জন্মের পরেই শিশু এইডস আক্রান্ত কিনা জানতে পারলেও শিশুকে আজীবন এই রোগ থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পরে শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ফলে, কোনও শিশুর এইডস থাকলে, তা এতটাই পরে জানা যাচ্ছে, যে তখন চিকিৎসার সুযোগ থাকছে না। যার জেরে আজীবন ভুগতে হচ্ছে।

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles