Ayurved: অশ্বগন্ধা, হলুদ, ত্রিফলা...আয়ুর্বেদে এই সুপারফুডগুলির গুরুত্ব জানেন
ভারতীয় সমাজে প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে আয়ুর্বেদের ব্যবহার।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ক্রাশ ডায়েট ছেড়ে পুষ্টিকর খাবার (Superfoods) খেয়ে সুস্থ থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন নিউট্রিশনিস্টরা। আদর্শ ডায়েটে প্রোটিন, ফল, শাক-সবজি, বাদাম রাখার কথা বলেন তাঁরা। আয়ুর্বেদ অনুসারে এমন অনেক সুপারফুড রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। আয়ুর্বেদে বেশ কয়েকটি খাবারকে প্রতিদিনের তালিকায় রাখার কথা বলা হয়েছে। এই খাবারগুলি পেশি শক্ত করে।
আয়ুর্বেদাচার্যেরা প্রকৃতির বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শরীর সুস্থ রাখার নানা উপায় বাতলে দিয়েছেন। ভারতীয় সমাজে প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে আয়ুর্বেদের ব্যবহার। প্রাচীন ভারতের এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় বেশ কিছু খাবারকে অমৃত হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমান সময়ে, অধিকাংশ মানুষ জীবনধারা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভুগছেন। উপরন্তু, অতিরিক্ত মানসিক চাপ স্বাস্থ্যের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে, কার্যকরী হতে পারে আয়ুর্বেদ। প্রাচীনকাল থেকে ভারতে, মানুষের স্বাস্থ্যের সেবায় নিজের গুরুত্ব প্রমাণ করেছে আয়ুর্বেদ। যা এই আধুনিক জীবনেও প্রাসঙ্গিক।
হলুদ আয়ুর্বেদে 'গোল্ডেন স্পাইস' হিসাবে বিবেচিত হয়। প্রদাহরোধী ক্ষমতা এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের গুণ রয়েছে হলুদে। আয়ুর্বেদে প্রাচীন কাল থেকে তা গুরুত্ব পেয়ে এসেছে। হলুদের প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য আয়ুর্বেদে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি পেশী শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষের ক্ষতিকারী ফ্রি র্যাডিক্যাল ধ্বংস করতে কাজ করে। হলুদে থাকা কারকিউমিনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট উপাদান বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে খাদ্যনালীকে বাঁচায়। কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন হাড়ের ক্ষয় ও হাড়ের গঠনের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখে ও হাড়কে সুস্থ ও মজবুত রাখে।
অশ্বগন্ধা আয়ুর্বেদের গুরুত্ব রয়েছে অপার৷ মানসিক চাপের উপসর্গ ও দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে অশ্বগন্ধা। ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি ঘটায়, সাপের বিষনাশক হিসাবে, ত্বকের পক্ষে বেশ উপকারী এছাড়াও সুফল রয়েছে একগুচ্ছ ৷ অশ্বগন্ধার টেস্টোস্টেরন মাসল শক্ত করে।
ঘিতে এ, ডি, ই, কে প্রভৃতি ভিটামিন থাকে যা স্নেহ পদর্থে দ্রবীভূত হয়। এই ভিটামিনগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত উপযোগী। পাশাপাশি ঘি শরীরের বিভিন্ন খনিজ পদার্থ শোষণের ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। বিশুদ্ধ দেশি ঘি জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, ফলে দূরে থাকে সাধারণ সর্দি কাশির সমস্যা। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, খাঁটি ঘিয়ের অনেক উপকারিতা। সকালে খালি পেটে ঘি খেলে হজম শক্তি ভাল হয়। সারা বছর কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় যাঁরা ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও ঘি দারুণ উপকারী। বয়স বাড়লে অনেকেই গাঁটের ব্যথায় কষ্ট পান। সেই ব্যথা কমাতেও ঘিয়ের উপর ভরসা রাখতেই পারেন। ঘি ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর। এই ফ্যাটি অ্যাসিড ওজন ঝরাতে কার্যকর, ফলে মাসল হয়ে ওঠে চনমনে।
আরও পড়ুন: ‘‘ভারতবাসীর হিতে সময় নষ্ট না করে আপনি সিদ্ধান্ত নেন’’, মোদির প্রশংসায় পুতিন
শরীর চাঙ্গা রাখতে সারা বছরই সজনে চাইলে খেতে পারেন। না, ফুল বা ডাঁটা নয়, বাজারে সজনে গুঁড়ো পাওয়া যায়। সেই গুঁড়ো দিয়ে চা বানিয়ে রোজ সকালে খেতে পারেন। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর সেই চা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। নানা ধরনের পুষ্টিগুণেও ভরপুর সজনে পাতা। এতে ভিটামিন এ, বি ১, বি২, বি৩ এবং সি রয়েছে। আছে ক্যালশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়ামও।
আমন্ডে রয়েছে অনেক ধরনের ভিটামিন, খনিজ, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ফাইবার পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি বাদামে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসও থাকে, যা শরীরে পুষ্টি জোগায়। শরীর সুস্থ রাখতে কাঠবাদাম একাধিক ভূমিকা পালন করে। এতে প্রচুর পরিমাণ তন্তু, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকে। কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা অকাল বার্ধক্য, প্রদাহ এবং ক্যানসারের মতো একাধিক রোগ থেকে রক্ষা করে।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে রোগ-ব্যধিকে ঠেকিয়ে রাখতে ত্রিফলার জুড়ি মেলা ভার। আমলকি, হরিতকি এবং বহেরা— এই তিন ফল শুকিয়ে তাদের চূর্ণ একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি হয় ত্রিফলার মিশ্রণ। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর আমলকি শরীরে জমে থাকা টক্সিন পদার্থ বার করে দেয়। হরিতকিতেও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। পেশির জোর বাড়তে আর হাড় মজবুত করতে বহেরা বেশ উপকারী।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি/ডায়েট পরামর্শস্বরূপ। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন ও সেই মতো পরামর্শ মেনে চলুন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।