রোগীদের ওপর ওই ওষুধ প্রয়োগ করার ফলে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।
যুগ যুগ ধরে মারণ কর্কটরোগের নিরাময় খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। (প্রতীকী ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আশ্চর্যজনক ঘটনা! কর্কটরোগ (Cancer) থেকে মুক্তি পেতে এমনই একটি সঞ্জীবনী ওষুধের সন্ধান পেয়েছেন বলে দাবি করলেন বিজ্ঞানীরা। এক ওষুধেই কেল্লাফতে! যাকে বলা হচ্ছে মিরাক্যল! সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে কি মিলল ক্যান্সারের ওষুধ (Cancer Drug)? অন্তত একটি ট্রায়ালে, তাই প্রমাণিত হয়েছে।
যুগ যুগ ধরে মারণ কর্কটরোগের নিরাময় খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশ দশকের পর দশক ধরে ক্যান্সারের ওষুধ তৈরি করার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, নির্দিষ্ট সাফল্য অধরাই থেকে গিয়েছিল।
কিন্তু, অদূর ভবিষ্যতে, সেই সম্ভাবনা বাস্তব রূপ পেতে চলেছে। অন্তত তেমনই আশা জাগিয়েছে নতুন গবেষণা। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্যান্সার নিরাময়ে এমনই একটি ম্যাজিক ড্রাগের সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা।
দাবি করা হচ্ছে, ‘ডসটারলিম্যাব’ (Dostarlimab) নামের একটি ওষুধের ফলেই ক্যান্সার মুক্ত হতে পেরেছে কিছুজন। ১৮ জন রোগীর শরীরে এটি প্রয়োগ করা হয়েছিল। প্রায় ৬ মাস ধরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। তারপর ম্যাজিকের মতোই শরীর থেকে উধাও হয়ে যায় টিউমার। এই আবিষ্কারের জন্য ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে চিকিৎসক মহলে।
আরও পড়ুন: রোগীর শরীরে ভুল রক্ত, সরকারি হাসপাতালের বেহাল দশা
নিউইয়র্কের (New York) একটি ক্যান্সার সেন্টারের এক চিকিৎসক বলেন, “ক্যান্সারের ইতিহাসে ঘটনাটি এই প্রথমবার ঘটেছে।” বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘ডসটারলিম্যাব’ ওষুধটি ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয়েছে যা মানব শরীরে অ্যান্টিবডির বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: থাইরয়েডের সমস্যা? তাহলে খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন এই খাবারগুলি
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, যে ১৮ জন রোগীর ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের আগে কেমোথেরাপি করা হয়েছিল। রেডিয়েশনও দেওয়া হয়েছিল। কারও কারও অস্ত্রোপচারও করা হয়। কোনও আশানুরূপ ফল লা আসায় এই ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়। এবং তারপরেই আর তাঁদের কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়নি।
একজন কলোরেক্টাল ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ (Colorectal Cancer specialist) জানান, প্রতিটি ক্যান্সার রোগী এখন সম্পূর্ণ সুস্থ, এবং এটি একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা। তিনি এই গবেষণাকে বিশ্ব-প্রথম বলে অভিহিত করেছেন। অন্য একজন অনকোলজিস্ট (Oncologist) জানান, তাঁরা ক্যান্সার মুক্ত হয়েছেন জেনে রোগীরা খুশিতে কেঁদে ফেলেছিলেন।
চিকিৎসকরা জানান, ট্রায়াল চলাকালীন রোগীদের ছয় মাস ধরে প্রতি তিন সপ্তাহে এই ওষুধ দেওয়া হয়। তাঁরা সবাই ক্যান্সারের একই লেভেলে ছিল ও ক্যান্সার তাঁদের মলদ্বারে (Rectum) হলেও পরে এটি দেহের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়েনি এবং রোগীদের ওপর ওই ওষুধ প্রয়োগ করার ফলে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই ওষুধের গুরুত্ব অনেকটাই বেশি, তবে এই নিয়ে আরও পরীক্ষা বা ট্রায়ালের দরকার আছে, এমনটাই জানিয়েছেন ক্যান্সার গবেষকরা।