Domestic Ingredients: কোন খাবারে বাড়বে মস্তিষ্কের ক্ষমতা? কী বলছে নয়া গবেষণা?
স্মৃতিলোপের সমস্যা প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যেই আটকে নেই, কম বয়সী, এমনকী স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যেও বাড়ছে। প্রতীকী চিত্র
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে স্মৃতিশক্তি হারানোর সমস্যা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই খুব সাধারণ বিষয়ও মনে রাখতে পারেন না। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, স্মৃতিলোপের এই সমস্যা প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যেই আটকে নেই। কম বয়সী, এমনকী স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যেও বাড়ছে (Memory Loss)। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, খুব সাধারণ বিষয়, যেমন, খাতা কিংবা বই কোথায় রয়েছে, কোন দিন স্কুলে কোন বিষয় নিয়ে পড়ানো হবে, এগুলোও অনেক সময়েই পড়ুয়ারা মনে রাখতে পারছে না। আর এর জেরেই উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ মহল। তারা জানাচ্ছে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমতে থাকলে, তা ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। মনে রাখার ক্ষমতা খুব কম বয়স থেকেই কমলে পরবর্তী জীবন যাপন কঠিন হয়ে উঠবে। তাই প্রথম থেকেই সতর্কতা জরুরি।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে স্মৃতিশক্তি কমার প্রধান কারণ দূষণ। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, বায়ুদূষণ কিংবা শব্দদূষণ সাময়িক শারীরিক অসুস্থতা তৈরি করে না। এর ফল থাকে সূদূরপ্রসারী। বাতাসে কার্বন মনো অক্সাইড এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ মারাত্মক বেড়ে গেলে মস্তিষ্কের উপরে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বায়ুদূষণ মারাত্মক ভাবে বাড়ছে। ফুসফুসের পাশাপাশি এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মস্তিষ্কও। আর তার জেরেই কমছে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা। এছাড়া শব্দের দাপট শিশুদের মস্তিষ্কে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, যে কোনও উৎসবে শব্দের দাপট একটা বড় সমস্যা। হঠাৎ খুব জোরে শব্দ হওয়া কিংবা লাগাতার একটানা খুব জোরে ডিজে বা মাইক বাজানোর শব্দ শিশুর মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকারক। এর জেরে যেমন শ্রবণশক্তি কমে, তেমনি মস্তিষ্কের একাধিক কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই স্মৃতিশক্তিও কমে (Memory Loss)।
দূষণের পাশপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মস্তিষ্কের সক্রিয়তার মাত্রা নির্ভর করে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে মনে রাখার ক্ষমতা কমে। বিশেষত কম বয়সীদের ক্ষেত্রে এটা বেশি দেখা যায়। তাঁরা জানাচ্ছেন, বয়ঃসন্ধিকালে থাকা ছেলেমেয়েদের মধ্যে নানান হরমোনের ভারসাম্যে পরিবর্তনের জেরে মানসিক চাপ তৈরি হয়। তার থেকেও ভুলে যাওয়ার মতো সমস্যা বাড়ে। অনেক ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল পেরনোর পরে সেই সমস্যা কমে যায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনেকের ক্ষেত্রেই সেই সমস্যা দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকছে। ফলে তাদের জীবন জটিল হয়ে উঠছে। পাশপাশি পারিবারিক অশান্তি থাকলে শিশুমনে গভীর প্রভাব ফেলে। ফলে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার উপরেও তার প্রভাব দেখা যায়।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন (Domestic Ingredients) মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। একদিকে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, আরেকদিকে জীবন যাপনের ধরনে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। এই দুই ধরে রাখতে পারলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা অনেকটাই বাড়বে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের পরামর্শ, ঘুম খুব জরুরি। শিশুর পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে কিনা, সেদিকে নজর রাখা জরুরি। দিনে কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুম দরকার। বেশি রাত পর্যন্ত জেগে না থাকার অভ্যাস তৈরি করা দরকার। মস্তিষ্কের বিশ্রাম হলে তবেই স্মৃতিশক্তি বাড়বে। এর পাশপাশি মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে (Memory Loss) নিয়মিত প্রাণায়মের অভ্যাস তৈরি করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এতে শরীরের স্নায়ুর কার্যক্ষমতা বাড়ে। ফলে মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে।
পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে কিছু খাবার নিয়মিত খাওয়া জরুরি। নিয়মিত মাছ খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। মাছে থাকে ফসফরাস। এই উপাদান স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বিশেষ সাহায্য করে। যে কোনও বাদাম জাতীয় উপাদান, যেমন কাজু, আখরোট, কাঠবাদাম, এগুলোতে থাকে নানান খনিজ পদার্থ। যা মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে। মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখে। তাই পুষ্টিবিদদের একাংশের পরামর্শ, নিয়মিত যে কোনও এক ধরনের বাদাম জাতীয় খাবার মেনুতে থাকা দরকার।
ডিম এবং চিকেন নিয়মিত খেলে মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রোটিন শরীরের জন্য খুবই উপকারী। মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে প্রোটিনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিকেন এবং ডিম থেকে খুব সহজেই শরীরের প্রয়োজনীয় উপকারী প্রোটিন পাওয়া যায়। তাই সপ্তাহে অন্তত দুদিন চিকেন এবং নিয়মিত একটা ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ।
বিট, গাজর, ক্যাপসিকামের মতো রঙিন সবজি মস্তিষ্কের বিকাশে বিশেষ সাহায্য করে। তাই পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, নিয়মিত ফল ও সবজি মেনুতে রাখা দরকার (Domestic Ingredients)।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।