অনেক সময় বাচ্চাদের কাশি কমছে না। কাফ সিরাপ, এমনকী অ্যান্টিবায়োটিকেও কাজ হচ্ছে না।
প্রতীকী ছবি
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রার পারদের ওঠানামা বেশ চিন্তায় ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের। সপ্তাহের শুরুতে যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির চৌকাঠ পেরিয়ে গিয়েছিল, এক ধাক্কায় তা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তবে, কয়েক দিনের মধ্যে ফের শুরু হবে তাপপ্রবাহ, এমনই আশঙ্কা করছে আবহাওয়া দফতর! আর তাপমাত্রার এই ঘনঘন রকমফের বাড়াচ্ছে বিপদ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গরমে অতিরিক্ত এসিতে থাকার কারণে ফুসফুসের নানা সংক্রমণঘটিত (Lungs Infection) রোগ বাড়ছে। তার উপরে আবহাওয়ার এই দ্রুত পরিবর্তন ভাইরাসঘটিত রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, তাপপ্রবাহের সময় মাথা ঝিমঝিম, ক্লান্তি বা পেশিতে টানের মতো সমস্যার পাশাপাশি জ্বর-সর্দি ও কাশির সমস্যাতেও অনেকেই ভুগছেন। বিশেষত শিশুরা মারাত্মকভাবে ভাইরাসঘটিত রোগের শিকার হচ্ছে।
বিপদ কোথায়?
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, গরম থেকে বাঁচতে অধিকাংশ সময়ই শিশুরা এসি ঘরে থাকছে। আবার হঠাৎ করেই তারা এসি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের মতো তারা এসি বন্ধ করে, স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ধীরে ধীরে মানিয়ে নিয়ে বাইরে যাচ্ছে না। আর এতেই তাদের সর্দি-কাশি-জ্বর হচ্ছে। তাছাড়া, অতিরিক্ত এসি ঘরে থাকলে ফুসফুসের সংক্রমণের (Lung Infection) ঝুঁকি বাড়ে। কারণ, এসি ঘরে জানালা-দরজা বন্ধ থাকে। বদ্ধ পরিবেশ ও সূর্যের আলো ঢুকতে না পারায় ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই কাশি দীর্ঘদিন থাকছে।
পালমনোলজিস্টদের একাংশ জানাচ্ছেন, কয়েক মাস আগে রাজ্যজুড়ে অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপট ছিল। বহু শিশু অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। কখনও মারাত্মক গরম, আবার একদিনের ব্যবধানেই কয়েক ডিগ্রি পারদ নেমে যাওয়া, সব মিলিয়ে এই পরিবর্তনের সঙ্গে দেহ মানিয়ে নিতে পারছে না। তাই শিশুদের দেহে ফের ভাইরাস সংক্রমণের (Lung Infection) ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষ করে সর্দি-কাশির ভোগান্তি বেশি হবে বলেই আশঙ্কা করছে চিকিৎসক মহল। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেক সময় বাচ্চাদের কাশি কমছে না। কাফ সিরাপ, এমনকী অ্যান্টিবায়োটিকও কার্যকর হচ্ছে না।
তবে শিশুদের পাশাপাশি বড়দের জন্যও এই আবহাওয়া বিপদ বাড়াচ্ছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, তাপপ্রবাহ সংক্রান্ত নানান শারীরিক সমস্যার পাশপাশি ভাইরাসঘটিত রোগে সংক্রমণও হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর ও ফুসফুসের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শিশুদের এসি ঘরে রাখার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। ঘরের তাপমাত্রা কখনই মারাত্মক কম করা যাবে না। তাঁদের পরামর্শ, ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এসি ব্যবহার করতে হবে। অনেকেই গরমে ঘরের তাপমাত্রা ১৬-১৮ ডিগ্রি করে রাখেন। এটা শরীরের পক্ষে খুব ক্ষতিকর। দীর্ঘক্ষণ এসি ঘরে থাকা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কারণ, তাতে বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে শরীর মানিয়ে নিতে পারছে না। ফলে, নানান রোগে দ্রুত আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
শিশুদের কাশি বা সর্দির মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথাও জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। কোনও রকম অবহেলা বাড়তি বিপদ তৈরি করতে পারে বলেও তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
শিশুদের ক্ষেত্রে আইসক্রিম কিংবা ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি জরুরি বলেই মনে করছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অনেকেই ঠান্ডা পানীয় নিয়মিত খায়। এরফলে ফুসফুসে সংক্রমণের (Lung Infection) ঝুঁকি আরও বাড়ছে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।