যন্ত্রণার সময় অনেকেই অনেক কিছু অবাস্তব কল্পনা করেন, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মাইগ্রেন ঔরা বলা হয়।
প্রতীকী ছবি
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
বছর ২৯-এর যুবক। মাথার যন্ত্রণায় কাতর। শেষ পর্যন্ত নিলেন চরম সিদ্ধান্ত! মাইগ্রেনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে বেছে নিলেন আত্মহত্যার পথ! সম্প্রতি হাওড়ার টিকিয়াপাড়া এলাকার এক যুবকের মৃত্যুর কারণ শুনে হতবাক হচ্ছেন অনেকেই। তবে, এই ঘটনাকে ব্যতিক্রম বলছেন না চিকিৎসকরা। আগেও একাধিকবার মাইগ্রেনের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বহু রোগী! তবে, চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের ক্রনিক রোগের দীর্ঘকালীন চিকিৎসা করলে সুস্থ থাকা সম্ভব।
মাইগ্রেনের সমস্যা কী?
মাইগ্রেন একধরনের স্নায়ুঘটিত সমস্যা। একে নিউরোভাস্কুলার ডিসঅর্ডার বলা যায়। মাথার মাঝখানে কিংবা যে কোনও একটা পাশে এই যন্ত্রণা হয়। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা একটানা এই ধরনের যন্ত্রণা থাকে। মাসে একাধিকবার মাইগ্রেনের সমস্যা হতে পারে। তথ্য বলছে, বিশ্বের প্রতি সাতজনের মধ্যে একজন মানুষ মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন। পুরুষের তুলনায় মহিলারাই এই সমস্যায় বেশি ভোগেন।
কীভাবে বুঝবেন আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা হচ্ছে?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, প্রতি মাসে একাধিকবার মাথার যন্ত্রণা হলে বুঝতে হবে, তা মাইগ্রেনের লক্ষণ। বমি, মাথা ঝিমঝিম, মানসিক অস্থিরতার মতো উপসর্গও দেখা যায়। যন্ত্রণার সময় অনেকেই অনেক কিছু অবাস্তব কল্পনা করেন। তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মাইগ্রেন ঔরা (aura) বলা হয়। যেমন, অনেকেই ভাবেন, তাকে কেউ হয়তো খুন করবে কিংবা তার চরম কোনও ক্ষতি করা হবে। এমন নানারকম আশঙ্কায় রোগী ভোগেন। খাবারের প্রতিও অনীহা তৈরি হয়।
কীভাবে কমাবেন মাইগ্রেনের সমস্যা?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, মাইগ্রেনের সমস্যাকে অবহেলা করা উচিত নয়। অনেকেই প্রথমে সাধারণ মাথার যন্ত্রণা বলে মাইগ্রেনকে অবহেলা করেন। প্রথম থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চললে বিপদ কমে। কারণ, চিকিৎসক নানান শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝতে পারেন, মাইগ্রেন চরম নাকি মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। সেইমতো চিকিৎসা করলে রোগী সুস্থ থাকতে পারে। শুধুমাত্র ব্যথা কমার ওষুধ নয়। স্নায়ুঘটিত নানান ওষুধের প্রয়োজন হয়। তাই যন্ত্রণা কমাতে নিজেই ওষুধের দোকান থেকে ইচ্ছেমতো পেনকিলার খাওয়ার অভ্যাস বিপদ বাড়ায় বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে, জীবনযাপনের বদল মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে পারে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম খুব জরুরি। অতিরিক্ত আওয়াজ বা অতিরিক্ত গরম মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়ায়। তাই সেরকম পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে। খাবারের দিকেও নজর দিতে হবে। সহজে হজম হয়, এমন খাবার খেতে হবে। হজমের অসুবিধা হলে মাইগ্রেনের ভোগান্তি বাড়তে পারে।
মানসিক চাপ মাইগ্রেনের জন্য অত্যন্ত খারাপ। তাই যাঁরা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। মানসিক চাপ যাতে তৈরি না হয়, সেদিকেও নজর দেওয়া জরুরি। মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে নিয়মিত শারীরিক কসরত করারও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।