Monsoon: হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজের (এইচএফএম) নাম শুনেছেন? রোগ চিহ্নিত করবেন কীভাবে?
দেশ জুড়ে বর্ষার মরশুমে বাড়ছে হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজ (এইচএফএম), প্রতীকী চিত্র।
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
স্কুল থেকে ফিরেই জ্বর! সঙ্গে দেখা দিচ্ছে সর্দি, হাঁচি, কাশির মতো উপসর্গ। বর্ষার মরশুমে (Monsoon) এমন সমস্যা হামেশাই হয়। সাধারণ ভাইরাস ঘটিত জ্বর কিংবা গলাব্যথার মতো সমস্যায় ভোগে কমবেশি সব বয়সীরাই। কিন্তু শিশুদের এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে বাড়তি সজাগ থাকার পরামর্শ দিচ্ছে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, দেশ জুড়ে বর্ষার মরশুমে বাড়ছে হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজ (এইচএফএম)। আর তার (HFMD) জেরেই ভোগান্তি বাড়ছে। সতর্ক না হলে ভাইরাসের দাপট বাড়বে। শিশুদের ভোগান্তিও আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছে চিকিৎসকদের একাংশ।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছে, হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজ (এইচএফএম) হল এক ধরনের ভাইরাস ঘটিত অসুখ। এই রোগের কোনও টিকা নেই। এই ভাইরাস খুব সহজেই একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত হাঁচি এবং কাশির মাধ্যমেই এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়। তাই সচেতনতা ও সতর্কতাই পারে এই রোগের সংক্রমণ রুখতে। শিশুদের পাশপাশি প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরে এই রোগের দাপট কম থাকে। শিশুদের ভোগান্তি বেশি হয়। তাই পরিবারের খুদে সদস্যদের নিয়েই সজাগ থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, সাধারণ শীতের মরশুমে এই রোগের প্রকোপ বাড়ে। কিন্তু চলতি বছরে বর্ষার মরশুমেও হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজের প্রকোপ বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি দিল্লি, মহারাষ্ট্র সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যেও এই রোগ (HFMD) হচ্ছে। ২ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যেই এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা দিচ্ছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছে, আবহাওয়ার পরিবর্তনে তাপমাত্রার রকমফের হয়। আর তার জেরেই বাতাসে একাধিক ভাইরাস সক্রিয় হয়। চলতি বছরে কলকাতা ও রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় মারাত্মক গরম পড়েছিল। বর্ষার মরশুমে সেই তাপমাত্রার পারদ অনেকটাই কমেছে। সেই কারণেই বর্ষার মরশুমে বাড়ছে হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজ (এইচএফএম)-এর দাপট।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজে (এইচএফএম) প্রথমে সাধারণ জ্বরের মতোই লক্ষণ দেখা যায়। শরীরের তাপমাত্রা মারাত্মক বাড়তে থাকে। তার সঙ্গে দেখা যায় সর্দি, গলাব্যথা। এরপরে শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষত পায়ের পাতা, মুখের ভিতর, ঠোঁট এবং হাতে লাল ফোস্কার মতো দাগ ফুটে ওঠে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছে, অধিকাংশ অভিভাবকেরা অনেক সময়েই এই রোগকে চিকেন পক্স ভাবেন। কিন্তু চিকেন পক্স আর হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজ (এইচএফএম) সম্পূর্ণ আলাদা। এই রোগে আক্রান্ত হলে শিশুর খাওয়ার ইচ্ছে সম্পূর্ণ চলে যায়।
চিকিৎসকদের একাংশের পরামর্শ, জ্বরের উপসর্গ দেখা দিলে প্রথম থেকেই সতর্ক থাকা জরুরি। শরীরের কোথাও র ্যাশ দেখা দিচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। উপসর্গ দেখা দিলে কোনও রকম দেরি করা উচিত নয়। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়ানো দরকার। শিশু হ্যান্ড ফুট মাউথ ডিজিজে (এইচএফএম) আক্রান্ত (HFMD) হলে অন্তত ১৪ দিন স্কুলে পাঠানো উচিত নয়। এই রোগ খুবই সংক্রামক। আক্রান্তের থেকে বহু শিশুর দেহে এই রোগ ছড়াতে পারে। তাই এই বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন থাকা জরুরি।
আক্রান্তের খাবার থালা, গ্লাস যাতে পরিবারের অন্য কেউ ব্যবহার না করে, সেদিকেও নজর দেওয়া জরুরি বলে জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকলেই সন্তানের ভোগান্তি কমবে বলেই তাঁরা জানিয়েছেন।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
