বিপদ লুকিয়ে আলোর বাজিতেও! কীভাবে মোকাবিলা করবেন?
প্রতীকী ছবি।
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
শব্দবাজির তীব্রতা নিয়ে সরব নানা মহল। শব্দদূষণের পাশাপাশি হৃদরোগ, শ্রবণশক্তি হ্রাসের মতো একাধিক বিপদ বাড়ায় শব্দবাজি (Firecrackers)। কিন্তু আলোর বাজি! এ কি বিপদমুক্ত? বিশেষজ্ঞ মহল জানাচ্ছেন, বিপদ লুকিয়ে আছে আলোর বাজিতেও। বিশেষত শিশুদের জন্য বাড়তি বিপদ বাড়াচ্ছে এই আলোর বাজি। তাই চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দীপাবলির উদযাপনে আলোর বাজিতে মাতলে বিপদ বাড়বে। সতর্কতা জরুরি।
কী ধরনের বিপদ বাড়াচ্ছে আলোর বাজি? (Firecrackers)
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, আলোর বাজির ধোঁয়া আর রাসায়নিক শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। তাই আলোর বাজি একেবারেই বিপদমুক্ত নয়। বরং শীতের শুরুতে এই বাজির ব্যবহার পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। তাঁরা জানাচ্ছেন, বছরের এই সময়ে ঋতু পরিবর্তন হয়। তাপমাত্রার অনেকটাই হেরফের হয়। এর ফলে, বাতাসে ধুলিকণার মাত্রা বাড়ে। এর জেরে এই সময়ে অনেকেই সর্দি-কাশিতে ভোগেন। আবার অনেকর নানান রকম অ্যালার্জি হয়। আর আলোর বাজির ধোঁয়া বাতাসে সেই ধুলিকণার মাত্রা আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে, শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। শ্বাসনালীর সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে কয়েক গুণ (Firecrackers)।
ধোঁয়ার পাশপাশি আলোর বাজিতে যে সমস্ত রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তা শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করে। বিশেষত শিশুস্বাস্থ্যের জন্য এগুলো খুবই বিপজ্জনক বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁরা জানাচ্ছেন, কিছু আলোর বাজি পুড়লে এক ধরনের সাদা ধোঁয়া আর আলো দেখা দেয়। এগুলোতে অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যাডমিয়ামের মতো রাসায়নিক পদার্থ থাকে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ম্যাগনেসিয়ামের প্রভাবে পাকস্থলীর মারাত্মক ক্ষতি হয়। ক্যাডমিয়ামের জেরে অ্যানিমিয়ার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে।
আবার কিছু আলোর বাজিতে কমলা আলো দেখা দেয়। এই ধরনের বাজিতে লোহা ও বিভিন্ন ধরনের কার্বনেট যৌগ ব্যবহার করা হয়। নীল বা হলুদ আলোর বাজিতে অতিরিক্ত তামার ব্যবহার হয় বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁরা জানাচ্ছেন, কমবেশি সব ধরনের বাজিতেই (Firecrackers) সীসা, নাইট্রিক যৌগের ব্যবহার হয়। যা খুবই বিপজ্জনক। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সীসার জেরে আজীবন চর্মরোগের শিকার হতে পারে শিশুরা। এছাড়াও, কিডনি, লিভার এবং চোখের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে সীসা। নাইট্রিক যৌগের প্রভাবে শরীরে একাধিক হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এর ফলে শিশুরা মানসিক অস্থিরতার সমস্যায় ভুগতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক মহল।
কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা? (Firecrackers)
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বছরের এই সময়ে খুবই সচেতনতা জরুরি। বিশেষত শিশুদের বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। বাতাসের ধুলিকণা আর বাড়তি বিপজ্জনক বিষ এড়াতে এই সময়ে মাস্ক ব্যবহার জরুরি। এতে ফুসফুস ও শ্বাসনালীর একাধিক সংক্রমণ এড়ানো সহজ হবে। বাজি পোড়ানোতেও লাগাম জরুরি। ছোটদের পাশপাশি অভিভাবকদেরও দূষণহীন দীপাবলির প্রয়োজনীয়তা বুঝতে হবে। তবেই সুস্থ থাকা সম্ভব বলে সাফ জানাচ্ছেন চিকিৎসক মহল।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।