ইচ্ছেমতো ডায়েট বানাচ্ছেন? রোগ ডেকে আনছেন না তো?
প্রতীকী চিত্র।
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
ডায়াবেটিসের সমস্যায় জেরবার অধিকাংশ ভারতীয়। শুধু প্রৌঢ় কালের নয়। এই সমস্যা এখন কম বয়সীদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে। আর ডায়াবেটিসের সঙ্গে হাজির হচ্ছে স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মতো হাজার সমস্যা। খাদ্যাভ্যাসকে অনেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন। খাবারে রাশ টানলে অনেক বিপদ কমবে, এই ভাবনা থেকেই নিজের মতো করে ডায়েট (Diet) করছেন। আর তাতে সমস্যা আরও বাড়ছে বলেই জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতীয়দের অনভিজ্ঞ ডায়েট নানা শারীরিক সমস্যা তৈরি করছে। এমনকী একাধিক রোগের কারণ হচ্ছে এই ইচ্ছে মতো অবৈজ্ঞানিক ডায়েট।
কী বলছে সমীক্ষার রিপোর্ট?
সম্প্রতি ইন্ডিয়ান ডায়েটিক সোসাইটির এক রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ৮০ শতাংশ ভারতীয় প্রোটিনের অভাবে ভোগেন। দিনে প্রয়োজনের তুলনায় ৬০ গ্রাম কম প্রোটিন (Diet) খান অধিকাংশ ভারতীয়। পাশপাশি, ফাইবারের ঘাটতিতেও ভুগছেন অধিকাংশ ভারতীয়। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিদিন ৮ থেকে ১৫ গ্রাম কম ফাইবার খাওয়ার জেরে একাধিক শারীরিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ফাইবারের অভাবে কোন রোগের ঝুঁকি বাড়ছে?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত পুষ্টি সমস্ত রোগকেই প্রতিরোধ করতে দেহকে তৈরি করে। ফাইবার, প্রোটিনের মতো জরুরি উপাদান শরীরে পর্যাপ্ত না থাকলে, একাধিক সমস্যা তৈরি হয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ফাইবার কোলেস্টেরল ও স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার (Diet) না খেলে সমস্যা বাড়বে। এছাড়া ফাইবার হৃদরোগ রুখতেও সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করে। তাই ফাইবারের ঘাটতি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতেও ফাইবার সাহায্য করে। মহিলাদের ২৫ গ্রাম ও পুরুষের ৩৮ গ্রাম ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খাওয়া জরুরি।
আর প্রোটিনের অভাব শরীরের জন্য আরও ক্ষতিকারক বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, প্রোটিন শরীরের পেশি, মাংস, হাড়ের শক্তি বাড়ায়। পর্যাপ্ত প্রোটিনের অভাবে হাড়ের জোর কমে। হাড় ক্ষয় হতে পারে। শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। যে কোনও কাজেই ক্লান্তি বোধ হয়। পাশপাশি পেশির শক্তি কমতে থাকে। যার জেরে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় সমস্যা তৈরি হয়।
কোন খাবার নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা?
পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, যে কোনও রোগের জন্য ডায়েট (Diet) করতে হলে, সব রকম শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তবেই ডায়েট শুরু করা দরকার। অনভিজ্ঞ ডায়েট চার্ট বিপজ্জনক। ফাইবারের ঘাটতি কমাতে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, নিয়মিত, আপেল, ন্যাশপাতি, স্ট্রবেরির মতো ফল খাওয়া উচিত। তাঁরা জানাচ্ছেন, খোসা শুদ্ধ আপেল খেলে অনেকটাই ফাইবার শরীরে যায়। তবে, স্ট্রবেরিতে ফাইবারের পরিমাণ থাকে সবচেয়ে বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম স্ট্রবেরির মধ্যে ২ গ্রাম ফাইবার থাকে।
পাশপাশি গাজর, মিষ্টি আলু, শিম, ব্রোকলির মতো সব্জিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এই ধরনের সব্জি নিয়মিত খেলে ফাইবারের ঘাটতি কমে।
এছাড়াও রয়েছে ছোলার মতো দানা শস্য। যা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার।
প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে নিয়মিত ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত কুসুম সহ ডিম খেলে শরীরে একাধিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে। ডিমে ভিটামিন, প্রোটিন রয়েছে। তাই যে কোনও ভাবেই ডিম খেলে, প্রচুর উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও মাছ, চিকেনের মতো খাবার থেকে প্রাণীজ প্রোটিন পাওয়া যায়। তাছাড়া পনির, সোয়াবিন, তফু থেকেও প্রোটিন পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত এই ধরনের খাবার খেলে শরীর প্রয়োজনীয় প্রোটিন পাবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।