Anemia: কোন বয়সে আয়রন ঘাটতি বেশি দেখা যাচ্ছে? কী বলছে সাম্প্রতিক সমীক্ষা?
গ্রামের তুলনায় শহরের মেয়েদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি বেশি হচ্ছে, সংগৃহীত চিত্র
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের আয়রন ঘাটতি বেশি। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একাধিক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, দেশ জুড়ে মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে আয়রনের ঘাটতি। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশের স্বাস্থ্য প্রশাসন। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, শরীরে আয়রনের ঘাটতি (Iron deficiency) তৈরি হচ্ছে। আর স্বাস্থ্যে তার গভীর প্রভাব পড়ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, আয়রনের ঘাটতি রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার মতো রোগ তৈরি করে। রক্তে আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তকণিকা তৈরিতে বাধা হবে। রক্তকণিকা দেহের সব অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করে। ফলে দেহের বিভিন্ন অংশের কার্যক্ষমতায় তার প্রভাব পড়ে। শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে ক্লান্তি বোধ তৈরি হয়। ফলে কোনও কাজ ঠিকমতো করা যায় না। হরমোনের ভারসাম্যেও প্রভাব পড়ে। তাছাড়া, ত্বক, চুল, নখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, আয়রনের ঘাটতির দিকে নজরদারি জরুরি। এই সমস্যা থাকলে বড় বিপদ ঘটতে পারে।
সাম্প্রতিক এক সর্বভারতীয় সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ভারতে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের দেহে আয়রনের ঘাটতি বেশি। ১২ থেকে ২১ বছর বয়সী প্রায় চার হাজার মেয়ের উপরে এই সমীক্ষা চালানো হয়। এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ওই চার হাজার মেয়েদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ মেয়ের শরীরে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই তথ্য যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কারণ এত কম বয়স থেকেই শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমবে। তাছাড়া, গর্ভাবস্থায় নানান জটিলতাও দেখা দিতে পারে। ওই সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, শহরের প্রতি ৫ জন মেয়ের মধ্যে ৩ জনের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। গ্রামে কিন্তু প্রতি পাঁচ জন পিছু ২ জনের আয়রনের ঘাটতি দেখা যায়। সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি গ্রামের তুলনায় শহরের মেয়েদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি বেশি হচ্ছে।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শহরের বাসিন্দাদের খাদ্যাভ্যাস আয়রনের ঘাটতি বাড়াচ্ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মতো একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা গ্রামের তুলনায় শহরে বেশি। এগুলো অধিকাংশ জীবন যাপন সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সমস্যা। রক্তাল্পতার ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস কম বয়সী মেয়েদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি তৈরি করছে। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, শহরের অধিকাংশ বাসিন্দা মোচা, থোর, ডুমুর, কাচকলার মতো সবজি নিয়মিত খান না। কিন্তু এই সবজিগুলির পুষ্টিগুণ অনেক। বিশেষত শরীরে আয়রনের জোগান দিতে এগুলি খুবই উপকারী। শহরের অধিকাংশ বাসিন্দা সকাল কিংবা সন্ধ্যায় চটজলদি খাবার পছন্দ করেন। ন্যুডলস, হটডগের মতো খাবারে একেবারেই পুষ্টিগুণ নেই। বরং নানান রাসায়নিক দিয়ে প্রিজারবেটিভ খাবার শরীরে নানান রোগের (Anemia) কারণ হয়ে ওঠে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, নিয়মিত নানান ধরনের সবজি খাওয়া জরুরি। পাশাপাশি, কলা, বেদানা, আপেলের মতো ফল নিয়মিত খাওয়া দরকার। কারণ এই ফলে আয়রন রয়েছে। তাছাড়া, বারো পেরোনোর পরে মেয়েদের আয়রনের ঘাটতি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই মেনুতে রোজ মাছ থাকা জরুরি। দুপুর অথবা রাতের মেনুতে রোজ মাছ রাখতেই হবে। মাছে থাকে আয়রন। এই ধরনের খাবারে অভ্যস্ত হলে আয়রনের ঘাটতি কমবে। রোগ মোকাবিলা সহজ হবে (Iron deficiency)।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।