Blood Crisis: 'ওয়ার্ল্ড ব্লাড ডোনার ডে'-তে রক্ত-সংকট সমাধানের কোন পথের কথা বলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা?
১৪ জুন পালিত হয়ে আসছে 'ওয়ার্ল্ড ব্লাড ডোনার ডে' হিসেবে, সংগৃহীত চিত্র
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
রাজ্য জুড়ে বাড়ছে রক্তের সংকট। ভোগান্তি বাড়ছে রোগীদের। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটছেন রোগীর আত্মীয়-পরিজন। সরকারি হোক কিংবা বেসরকারি, রাজ্যের অধিকাংশ ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে লম্বা লাইন। দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও কার্যত বিফল হয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে। আর এর জেরেই বিপদ বাড়ছে রোগীদের। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জটিল অস্ত্রোপচার থেকে মুমূর্ষু রোগী, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের আকালের (World Blood Donor Day) জেরে ভোগান্তি বাড়ছে।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রক্তের সংকটের জেরে সব চেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হাজার হাজার মানুষ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই রাজ্যের কয়েক লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। আক্রান্তের তালিকায় শিশু থেকে বয়স্ক, সব বয়সের মানুষ রয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে তাদের রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত রক্ত না থাকায়, তাদের বিপদ বাড়ছে (Blood Crisis)। ঠিক সময়ে রক্তের জোগান না হলে তাদের প্রাণ-সংশয় হতে পারে।
রক্তের অসুখে আক্রান্ত রোগীদের পাশপাশি যে কোনও জটিল অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে বাধার কারণ হচ্ছে রক্তের সংকট (World Blood Donor Day)। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, যে কোনও জটিল অস্ত্রোপচারে রক্তের জোগান থাকা জরুরি। কিন্তু বর্তমানে রাজ্যের একাধিক ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের জোগান নেই। তাই পরিস্থিতি বিপজ্জনক।
এছাড়াও জরুরি বিভাগে রোগীর চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে উঠছে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, দুর্ঘটনা বা কোনও আপৎকালীন রোগীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে সব গ্রুপের পর্যাপ্ত রক্তের জোগান থাকা জরুরি। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে চিকিৎসা শুরু করতেই অনেকটা সময় চলে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই রাজ্যে রক্তের সংকট দেখা দিচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, গোটা রাজ্যে দৈনিক গড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ বছরে ১৪ লাখ ইউনিটের বেশি রক্তের প্রয়োজন হয়। গত বছরেও রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক মোট ১০ লাখ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করেছিল। চলতি বছরে এই সংগ্রহের পরিমাণ আরও কম হতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ।
রক্তদান কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যের মোট রক্তদান শিবিরের ৬০ শতাংশ রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে হয়। বাকি ৪০ শতাংশ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়। কিন্তু চলতি বছরে গরমের পারদ বেশি। তাই প্রথম থেকেই রক্তদান শিবিরের আয়োজন (World Blood Donor Day) কম হয়েছে। তার উপরে ছিল নির্বাচন। রাজনৈতিক দল নির্বাচনের কাজেই ব্যস্ত ছিল। ফলে, রক্তদান শিবিরের আয়োজন বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘ দিন ধরে হয়নি। এছাড়াও, স্বেচ্ছায় রক্তদানের পরিবর্তে, উপহারের বিনিময়ে রক্তদানের আয়োজনে মদত দিচ্ছেন অনেক রাজনৈতিক দল। এমন অভিযোগও উঠছে। এই সব কিছুর জেরেই রক্তদানের উৎসাহ কমছে। যার জেরে ভোগান্তি বাড়ছে রোগীদের।
১৪ জুন ওয়ার্ল্ড ব্লাড ডোনার ডে। এই উপলক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রক্তদানের উৎসাহ বাড়ানো দরকার। তাহলেই রক্তের সংকট কমবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রক্তদান কর্মসূচি পালনে জোর দিতে হবে। রক্তদান সামাজিক দায়িত্ব-এই বিষয়ে সব মহলের আরও জোরালো প্রচার জরুরি বলেও জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পাশপাশি, রক্তদান করলে রক্তদাতাও সুস্থ থাকে, এবিষয়েও প্রচার জরুরি (World Blood Donor Day)।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।