এখনও পর্যন্ত ৩৫ জনের শরীরে এই ল্যাংয়া হেনিপাভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। কী এর উপসর্গ, জানুন...
ল্যাংয়া হেনিপাভাইরাস
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভাইরাসের সংক্রমণ এখনও আমাদের পিছু ছাড়ছে না। কোভিড-১৯ (Covid-19) এখনও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি। অনেক রাজ্যেই করোনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। মাঙ্কি পক্সে (Monkey Pox) আক্রান্তের সংখ্যাও সারা বিশ্বে বেড়েই চলছে। এরই মধ্যে ফের নয়া প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে চিনে। এই ভাইরাসের নাম হল ল্যাংয়া হেনিপাভাইরাস (Langya henipavirus), যাকে LayV ও বলা হচ্ছে। চিনের হেনান ও শানডং প্রদেশে ৩৫ জনের শরীরে এই ল্যাংয়া হেনিপাভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। চিনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা সোমবার এই ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এই ভাইরাস দেখা গিয়েছে। মূলত মানবদেহের গলায় এই ভাইরাস আক্রমণ করে বলে জানা গিয়েছে। গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে তিন-চতুর্থাংশ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে এই ভাইরাসটি। তবে এখনও পর্যন্ত ল্যাংয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটেনি কারও। বেশিরভাগ রোগীরই উপসর্গ মৃদু। রোগীদের মধ্যে ফ্লু-এর মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হল যে, এখনও এই ভাইরাসকে প্রতিহত করার জন্য কোনও টিকা বের হয়নি। এমনকি এই ভাইরাসের চিকিৎসার কোনও পদ্ধতিও নেই।
আরও পড়ুন:মাঙ্কি পক্স নিয়ে এবার সতর্কতা জারি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের
কী এই ল্যাংয়া হেনিপাভাইরাস?
ল্যাংয়া ভাইরাস বা LayV হল নিপা ভাইরাসেরই (Nipah Virus) আরও একটি অংশ। এই ভাইরাসও খানিকটা নিপা ভাইরাসের মতোই। হেনিপাভাইরাস বেশিরভাগই প্রাণী থেকে প্রাণীতে স্থানান্তরিত হয়। তবে সম্প্রতি এটি মানুষের মধ্যে শনাক্ত করা গিয়েছে। এই ভাইরাস সংক্রামক কি না, অর্থাৎ, এটি একজনের থেকে অন্য জনের দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন চিনা গবেষকরা। যদিও এখনও অবধি কোনও সংক্রমণই গুরুতর হয়নি।
ল্যাংয়া ভাইরাসের লক্ষণ
এই ভাইরাস সাধারণত জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যেই দেখা গিয়েছে। বেজিং ইনস্টিটিউট অফ মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড এপিডেমিওলজির গবেষকরা বলছেন, এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে মূল উপসর্গ জ্বর। তাছাড়া কাশি, ক্লান্তি, পেশীতে ব্যথা, বমির মতো উপসর্গও লক্ষ্য করা গিয়েছে আক্রান্তদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: মাঙ্কি পক্সের পর এবারে চোখ রাঙাচ্ছে টোম্যাটো ফ্লু! কী এর উপসর্গ, জানুন...
এর আগে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ল্যাংয়া ভাইরাসটি ২০১৯ সালে মানুষের মধ্যে প্রথম দেখা গিয়েছিল। তবে এই ভাইরাসে সর্বাধিক আক্রান্তের সংখ্যা এই বছর লক্ষ্য করা গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, নিপা ভাইরাস করোনার থেকেও বেশি মারাত্মক। কারণ আক্রান্তদের তিন-চতুর্থাংশ প্রাণ হারান। তাই এই ল্যাংয়া ভাইরাসও নিপাহ ভাইরাসের পরিবারের সদস্য হওয়ায় এটিও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। চিনা গবেষকরা জানান, এখনও পর্যন্ত প্রায় ২% ছাগল এবং ৫% কুকুর এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর দেহেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছে।