গরমের কারণে ওমিক্রনের (Omicron) সমস্যা হয়তো কমতে পারে। কিন্তু ডেল্টা বা অন্যান্য নতুন কোনও স্ট্রেন এক্ষেত্রে তৈরি করে দিতে পারে সমস্যা।
প্রতীকী ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চলতি গরমেই ফের এক বার গোটা বিশ্ব করোনার ডেল্টা প্রজাতির সংক্রমণের শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ইজরায়েলের (Israel) বেন-গুরিয়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের (Ben-Gurion University) গবেষকেরা। সম্প্রতি ‘সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট’ (Science of The Total Environment) জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি। তাতে বেন-গুরিয়েনের ভাইরোলজির (Virology) একদল গবেষক বলেছেন, সাধারণত ভাইরাসের কোনও প্রজাতি যখন সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন তা পূর্ববর্তী প্রজাতিকে ধ্বংস করেই নিজের বিস্তার ঘটায়। ডেল্টার ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছিল। কিন্তু বছরের শুরুতে ইজরায়েলের বির-শিবা শহরের নিকাশির জলে পাওয়া করোনাভাইরাসের নমুনায় দেখা গিয়েছে, সেখানে ওমিক্রনের পাশাপাশি রয়েছে ডেল্টা প্রজাতিও। নিজেদের মডেল অনুযায়ী গবেষকদের অনুমান, ওমিক্রনের উপস্থিতি কমতে কমতে শেষ পর্যন্ত মুছে যাবে। কিন্তু তখনও ডেল্টা প্রজাতি নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখবে। সে ক্ষেত্রে আগামী দিনে ডেল্টার হানায় নতুন করে বড় মাপের সংক্রমণের শিকার হতে পারে অনেক দেশই।
এই মডেলিং স্টাডিতে বলা হয়েছে যে গরমের কারণে ওমিক্রনের (Omicron) সমস্যা হয়তো কমতে পারে। কিন্তু ডেল্টা বা অন্যান্য নতুন কোনও স্ট্রেন এক্ষেত্রে তৈরি করে দিতে পারে সমস্যা। এই গবেষণায় বলা হয়েছে যে, একটা নতুন স্ট্রেন আসলে পুরনো স্ট্রেন ধ্বংস হয়ে যায়। ডেল্টার (Delta) ক্ষেত্রে প্রথমে তাই হয়েছিল মনে হলেও পরে দেখা যায় তা সত্যি নয়। এমনকী ওমিক্রন ও তার উপপ্রজাতি আসার পরও ঘটনা ঘটেছে অন্যরকম। এই গবেষণায় বিভিন্ন দিক দেখা হয়েছে। এমনকী মডেলিং-এর মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে যে সমস্যা হতে পারে ঠিক কোন ভাইরাসের জন্য। এবার সেই গবেষণায় বলা হচ্ছে, যখন ডেল্টা এসেছিল, তখন আগের সমস্ত ভ্যারিয়েন্টের পাঠ চুকে যায়। অপরদিকে ওমিক্রন (Omicron) কিন্তু ডেল্টার দিকে এই কাজটা করতে পারেনি। তাই এবার গরমেও ডেল্টার বাড়াবাড়ি হতেই পারে।
তাই এখনই করোনার প্রকোপ কনতে পারে বা এটি স্বাভাবিক জ্বর-সর্দি-কাশির রূপ নেবে ভাবলে ভুল করবে সাধারণ মানুষ, এমনই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। দেশেও প্রায় প্রতিদিন বাড়ছে করোনা সংক্রমণ তাই সকলকে সতর্ক থাকার আবেদন জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সরকারের তরফে কোভিড-বিধি মেনে চলার আর্জি জানানো হয়েছে।
কোভিশিল্ড টিকার নির্মাতা সিরাম ইনস্টিটিউটের কর্ণধার আদার পুনাওয়ালা মনে করছেন, করোনা নিয়ে ভীতি অনেকটা কমে যাওয়ার জন্য বুস্টার ডোজ নিতে অনীহা দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারও মেনে নিয়েছে যে, প্রথম দু’টি ডোজের টিকা নিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে উৎসাহ দেখা গিয়েছিল, সতর্কতামূলক (বুস্টার) ডোজ নেওয়ার ক্ষেত্রে তা অনুপস্থিত। এই প্রসঙ্গে পুনাওয়ালা বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে এত দ্রুত আত্মতুষ্টিতে ভোগা উচিত নয়। মাথায় রাখতে হবে, অতিমারি এখনও শেষ হয়নি। তাই বছরে অন্তত একটি বুস্টার নেওয়া উচিত প্রত্যেকের।’’ পুনাওয়ালার দাবি, দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দেওয়ার প্রশ্নে বুস্টার ডোজ অনেক বেশি কার্যকর।