বিরল রোগে আক্রান্ত অলকা ইয়াগনিক, হারিয়েছেন শ্রবণ শক্তি, রোগের নাম সেন্সরিনিউরাল ডেফনেস, কীভাবে বাসা বাঁধে এই রোগ?
প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী অলকা ইয়াগনিকের জীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। জটিল রোগে আক্রান্ত তিনি। তাতেই হারিয়েছেন শোনার শক্তি। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগের নাম সেন্সরিনিউরাল ডেফনেস। অভ্যন্তরীণ কানের সংবেদনশীল কোষ বা মস্তিষ্কে শ্রবণ স্নায়ু পথের ক্ষতির কারণে এই রোগ হয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে মস্তিকে শব্দের সিগন্যাল পৌঁছায় না। ফলে শোনার শক্তি থাকে না।
সেন্সরিনিউরাল ডেফনেস কীভাবে হয়?
বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে শব্দ তরঙ্গকে স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছায় কক্লিয়ার স্টেরিওসিলিয়া, যা আসলে এক ধরনের স্নায়ু তন্তু। যদি ৮৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দের সংস্পর্শে আসে কান, তখন তন্তুগুলি ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে বা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ কক্লিয়ার স্টেরিওসিলিয়া ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে বধিরতা আসে না। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এই রোগের ফলে উভয় কানই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এই রোগের কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা, সংক্রমণ, মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ার, অটোমিউন ডিজিজ, মিনিওর ডিজিজ, যেকোনও বিরল রোগ, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, জেনেটিক কারণ, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা, তীব্র আওয়াজ, জিনগত অসুস্থতা, মাদকের প্রভাবকেই দায়ী করছেন।
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি শোনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। পিছনে চলা যেকোনও রকমের গোলমালেরও শব্দ শুনতে পান না রোগীরা। শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সমস্যা হয়। মাথা ঘুরতে থাকে। এই রোগে আক্রান্তের পক্ষে আশপাশের শব্দ ও আসল শব্দগুলি আলাদা করা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে কানে গুনগুন শব্দ হতে থাকে বা স্পষ্ট শোনা যায় না। কানের কাছে অসাড়তা দেখা দিতে শুরু করে। চিকিৎসকরা তাই পরামর্শ দিচ্ছেন এই রোগ থেকে দূরে থাকতে উচ্চ মানের শব্দ এবং হেডফোনের হেভি এক্সপোজার থেকে প্রত্যেকে যেন দূরে থাকেন।
এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ দেওয়া হয়। যদি দ্রুত উন্নতি না হয়, সরাসরি ইন্ট্রাটাইমপ্যানিক স্টেরয়েড কানে দেওয়া হয়। উন্নতি তিন সপ্তাহের মধ্যে দৃশ্যমান হয়। চিকিৎসকদের মতে, রোগীর যদি ইতিমধ্যেই কোনও রোগ থাকে বা খুব গুরুতর ভাইরাস আক্রমণে ভুগে থাকে, তবে এটি নিরাময় করা কিছুটা কঠিন। তবে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।