বিশ্ব পারকিনসন্স দিবসে কী বলছে বিশেষজ্ঞ মহল?
Parkinson's_Disease_(2)
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
ঘরের ভিতরে হাঁটাচলা করাও বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। নিজের হাতে ভাত মেখে খাওয়ার শক্তিটুকুও থাকে না। প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই মনে থাকে না। হাত-পায়ের পেশি একেবারেই কাজ করে না। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যায়। বয়স বাড়লে আরও বাড়ে জটিলতা। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে পারকিনসন্স (Parkinson's Disease) রোগের দাপট। বাদ নেই কলকাতাও। তাই মধ্য পঞ্চাশ থেকেই দরকার সচেতনতার। এই জটিল রোগের দাপট রুখতে নিজের জন্য প্রয়োজন বাড়তি সময়।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পারকিনসন্স এক ধরনের স্নায়ুর সমস্যা। মস্তিষ্কের ভিতরে এক ধরনের অবক্ষয় হয়। এর জেরে হাত-পা কিংবা শরীরের বিভিন্ন অংশের গতির সমন্বয়ের অভাব দেখা দেয়। মস্তিষ্কের বিশেষ অংশের এই সমস্যার জেরেই হাত-পায়ে এক ধরনের কম্পন দেখা দেয়। ঠিকমতো হাঁটাচলা করাও কঠিন হয়ে পড়ে। তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই রোগ বংশানুক্রমিক বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। অর্থাৎ বাবা বা মা, কেউ এতে (Parkinson's Disease) আক্রান্ত হলে, তাদের সন্তানদেরও বয়স বাড়লে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় ৬০ বছরের পরে এই রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। তবে অনেকের আবার ৫০-এর মাঝামাঝিও উপসর্গ দেখা দেয়। হাতের আঙুল অতিরিক্ত কাঁপা এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ বলে জানাচ্ছেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাই পরিবারের কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে কম বয়স থেকেই এই সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, পারকিনসন্সের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে প্রয়োজন সুস্থ জীবনযাপন। তাঁরা জানাচ্ছেন, মানসিক চাপ এই ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ। তাই মধ্য পঞ্চাশের পরেই নিজের বাড়তি খেয়াল রাখা জরুরি। পরিবার ও কর্মজীবনের নানান দায়িত্ব পালনের মাঝেও নিজের জন্য সময় রাখা জরুরি। নিয়মিত ছবি আঁকা, গান শোনা ও গান গাওয়া কিংবা কবিতা লেখার মতো সৃজনশীল কাজের অভ্যাস তৈরি করতে হবে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই ধরনের কাজে একদিকে মানসিক চাপ অনেক কমে। আবার হাত, পা এবং শরীরের একাধিক পেশি ও স্নায়ুর সক্রিয়তা বাড়ে। মস্তিষ্কের কাজ বাড়ে। ফলে রোগের ঝুঁকি কমে।
যোগাভ্যাস পারকিনসন্সের ঝুঁকি কমায়। এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন এই রোগ (Parkinson's Disease) আটকানোর পাশপাশি, যারা আক্রান্ত তাদের জীবনযাপন উন্নত করতেও নিয়মিত যোগাভ্যাস জরুরি। যোগাসন একদিকে শরীরের প্রত্যেক অঙ্গকে সক্রিয় রাখে, আবার মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। তাই পঞ্চাশ পেরলেই নিয়ম করে হাঁটাহাঁটির পাশপাশি যোগাভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
কফি এবং বার্গার, হটডগের মতো খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, কফিতে থাকে ক্যাফেইন। আর বার্গার, হটডগের মতো খাবারে থাকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এই দুই উপাদান পারকিনসন্সের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই এর প্রকোপ রুখতে এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি।
পাশপাশি নিয়মিত মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। কারণ মাছে রয়েছে ওমেগা থ্রি। এই উপাদান স্নায়ু সুস্থ রাখতে বিশেষ সাহায্য করে। পাশাপাশি, পালং শাক, সবুজ আপেলের মতো ফল এবং সবজি নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। কারণ এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার। তাই এগুলো খেলে মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকবে। পারকিনসন্সের (Parkinson's Disease) ঝুঁকি কমবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।