Young generation: পাকস্থলীর ক্যান্সার রুখে সুস্থ থাকার কোন উপায়ের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
দেশে যে কয়েকটি ক্যান্সার বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করছে, সেই তালিকায় প্রথমের দিকেই রয়েছে স্টমাক ক্যান্সার। প্রতীকী চিত্র
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
ক্যান্সারের দাপট বাড়ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও বাড়ছে এর দাপট। অন্যদিকে, গত কয়েক বছর ধরে দেশ জুড়ে পাকস্থলীর ক্যান্সারে (Stomach cancer) আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই ক্যান্সারের দাপট বাড়ার জেরেই উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল।
গত দেড় দশকে দেশ জুড়ে নানা ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে স্টমাক ক্যান্সার বা পাকস্থলীর ক্যান্সার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে যে কয়েকটি ক্যান্সার বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করছে, সেই তালিকায় প্রথমের দিকেই রয়েছে স্টমাক ক্যান্সার। পুরুষদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, যে সমস্ত ক্যান্সারে পুরুষেরা বেশি আক্রান্ত হন, তার প্রথম পাঁচেই রয়েছে স্টমাক ক্যান্সার। মহিলাদের ক্ষেত্রে তালিকার সাত নম্বরে রয়েছে স্টমাক ক্যান্সার। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আগেও এই ক্যান্সারের দাপট ছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যেত, পঞ্চান্ন বছরের বেশি বয়সিরা এই রোগে আক্রান্ত হতেন। ষাটোর্ধ্বদের রোগ নির্ণয় করে জানা যেত। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই রোগে তরুণ প্রজন্মের আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, চল্লিশের পরেই এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্টমাক ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ জীবন যাপনের ধরন। তরুণ প্রজন্মের অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন বিপদ বাড়াচ্ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, তরুণ প্রজন্মের একাংশ মদ্যপানকে 'স্টাইল স্টেটমেন্ট' ভাবছেন। জন্মদিন হোক বা অফিসের প্রমোশন, মদ বন্ধুমহলে আড্ডা দেওয়ার অবশ্য সঙ্গী হয়ে উঠছে। আর এটাই চরম ক্ষতি করছে। এর পাশপাশি ক্যাফরিন জাতীয় খাবার অর্থাৎ কফি খাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে যাওয়াও আরও একটি কারণ। তরুণ প্রজন্মের (Young generation) একাংশ মারাত্মক কফি পান করতে ভালোবাসে। অনেক সময়েই তারা খালি পেটে একাধিক কাপ কফি খাচ্ছেন। এই অভ্যাস ভয়ঙ্কর। পাকস্থলীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক।
এর পাশপাশি অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার এবং চর্বি জাতীয় খাবার পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, চটজলদি মশলাদার খাবারেই তরুণ প্রজন্মের একাংশ অভ্যস্ত। বার্গার, পিৎজা এখন অনেকের নিয়মিত খাবারের তালিকায় থাকে, যা বিপজ্জনক। এই ধরনের খাবারে থাকে মারাত্মক রাসায়নিক। ফলে এই খাবার পাকস্থলীর জন্য খুবই ক্ষতিকারক। তাই এই ধরনের খাদ্যাভ্যাস থাকলে স্টমাক ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়বে।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস একাধিক রোগ মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। স্টমাক ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও তাই খাবারেই ভরসা রাখছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, নিয়মিত টক দই জাতীয় খাবার খেতে হবে। এই ধরনের খাবারে প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক থাকে। অর্থাৎ ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা মানুষের শরীরের পক্ষে উপকারী। তাই নিয়মিত টক দই খেলে পাকস্থলী সুস্থ (Stomach cancer) থাকে।
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার স্টমাকের জন্য বিশেষ উপকারী বলেই জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, আলু, গাজর, টমেটো ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার। এই ধরনের খাবার পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তাই নিয়মিত এই ধরনের সব্জি খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
পাকস্থলী সুস্থ রাখতে ফাইবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, ফাইবার হজমে সাহায্য করে। শরীরে ক্ষতিকারক অ্যাসিড তৈরি করা আটকায়। এর ফলে স্টমাক ভালো থাকে। তাই নিয়মিত ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার মেনুতে রাখা জরুরি। নাশপাতি, আপেল, আটার তৈরি রুটি, বাঁধাকপির মতো সব্জি নিয়মিত খেলে দেহে প্রয়োজনীয় ফাইবারের জোগান বজায় থাকে। এতে শরীর সুস্থ থাকে।
ভিটামিন সি শরীর সুস্থ রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। স্টমাক ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, লেবু, বেরি, কিউই জাতীয় ফল নিয়মিত খেলে শরীরে ভিটামিন সি-র চাহিদা সহজে পূরণ হয়। এর ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।