ওজন কমাতে নিজেই ডায়েট চার্ট বানিয়ে যা খুশি খাচ্ছেন! ফল জানেন তো?
প্রতীকী ছবি।
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
শরীর এবং ওজন নিয়ে সতর্ক তরুণ প্রজন্ম! তাই ওজন কমাতে অনেকেই খাওয়ার পরিমাণ কমাচ্ছেন! কম বয়সীদের অনেকেই স্থূলতা এড়াতে ডায়েটিং (Obesity and Diet) করেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি হয় অপরিকল্পিত। অর্থাৎ, চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদদের পরামর্শে নয়, নিজের মতোই তৈরি করেন ডায়েট চার্ট। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নানা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ডায়েট প্ল্যান শুনে, অনেকে নিজেদের ডায়েট চার্ট তৈরি করেন। আর এর জেরেই বাড়ছে বিপদ! শরীরে বাসা বাঁধছে একাধিক রোগ। এমনকি প্রাণসংশয়ও দেখা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অপরিকল্পিত ডায়েটের কুফল ভুগতে হবে দীর্ঘদিন।
কোন ধরনের ডায়েট (Obesity and Diet) বিপদ বাড়াচ্ছে?
পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছে, ডায়েট প্ল্যান সম্পূর্ণ ব্যক্তিবিশেষে তৈরি হয়। অর্থাৎ, একজন ব্যক্তির শরীর ঠিক রাখতে, স্থূলতা রুখতে কিংবা ওজন কমাতে কী করা দরকার, সেটা সকলের জন্য এক হবে না। একেক জনের জন্য, একেক ধরনের ডায়েট হয়। প্রত্যেকের যেমন রক্তচাপ, ডায়বেটিস, কোলেস্টেরলের মাত্রা এক হয় না। একেক জনের ওজন, উচ্চতা একেক রকম হয়। ঠিক তেমনি ডায়েট প্ল্যান প্রত্যেকের আলাদা হয়। উচ্চতা, ওজন, রক্তচাপ, কোলেস্টেরল সব কিছু মাপকাঠির নিরিখে ডায়েট প্ল্যান তৈরি করতে হয়। তবেই তা ঠিকমতো উপকারী হবে। পাশপাশি, চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, তরুণ প্রজন্মের অনেকেই স্থূলতা কমাতে হঠাৎ সম্পূর্ণ কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। ভাত কিংবা রুটি একদম খাচ্ছেন না। যা শরীরের জন্য সম্পূর্ণ ক্ষতিকারক। কারণ, কার্বোহাইড্রেট শরীরে এনার্জি জোগানে সাহায্য করে। খাদ্যতালিকা থেকে হঠাৎ ভাত কিংবা রুটি সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দিলে, শরীরে এনার্জির ঘাটতি হবে। যা সমস্যা তৈরি করবে। আবার অনেকেই প্রোটিন জাতীয় খাবার তালিকা থেকে বাদ দেন। ফলে, পেশির মজবুতি কমতে থাকে। এগুলির জেরে নানা রোগে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাছাড়া, চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শুধুই ডায়েট শরীর সুস্থ রাখতে পারে না। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেকেই মনে করেন, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করলেই ওজন কমে যাবে (Obesity and Diet)। শরীর সুস্থ থাকবে। এ ধারণা ভুল। খাবারে রাশ ওজন কমাবে। কিন্তু শরীর সুস্থ রাখবে না। শরীর সুস্থ রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত শারীরিক কসরত, যোগাভ্যাস! তার সঙ্গে পরিমিত পুষ্টিকর খাবার। এই দুইয়ের সমন্বয় না থাকলে বিপদ মারাত্মক।
অপরিকল্পিত ডায়েট (Obesity and Diet) কোন কোন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়?
অপরিকল্পিত ডায়েট শরীরে ডেকে আনে একাধিক রোগ। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা, লিভারের সমস্যা, ত্বকের রোগের মতো একাধিক রোগের কারণ হয় অপরিকল্পিত ডায়েট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত ডায়েটের (Obesity and Diet) জন্য অনেক সময়ই শরীরে সুগারের মাত্রা কমে যায়। অনেকেই প্রয়োজনের কম মিষ্টি খান। শরীরে মিষ্টির প্রয়োজন আছে কিনা, তা না জেনেই সিদ্ধান্ত নেন। ফলে, সুগার কমে যায়। যার জেরে মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। এছাড়া, অপরিকল্পিত ডায়েটের জন্য হৃদরোগ হতে পারে। কারণ, রক্তচাপের উপরে অপরিকল্পিত ডায়েটের খারাপ প্রভাব পড়ে। রক্তচাপ মারাত্মক ওঠা-নামা করে। ফলে, হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া, অতিরিক্ত কম খাবার খাওয়ার জেরে লিভারের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। নানা রোগের লক্ষণ দেখা দেয়।
পাশপাশি, ঠিকমতো পুষ্টি না পেলে ত্বকে রুক্ষতা দেখা দেয়। চুল পড়ার মতো সমস্যা তৈরি হয়। কারণ, পুষ্টির অভাব শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে, শারীরিক ও মানসিক জটিলতা বাড়ে। ফলে, শরীরে দীর্ঘমেয়াদী নানা সমস্যা তৈরি হয়। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, প্রয়োজন মতো বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তবেই সুস্থ জীবন যাপন সম্ভব।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।