ভুয়ো চিকিৎসক রুখতে রেজিস্ট্রেশনে এবার নয়া নিয়ম কেন্দ্রের
প্রতীকী ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কেউ চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন শহরের নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে, কেউ আবার চিকিৎসক (West Bengal Doctor) হিসাবে একাধিক এলাকায় পসার জমিয়েছেন, তৈরি করেছেন নিজের নার্সিংহোম! কিন্তু, তদন্ত করতেই দেখা গেল, কারও কারও ন্যূনতম যোগ্যতাটুকুও নেই। চিকিৎসক হিসাবে নিজেকে দাবি করার বিষয়টি পুরোটাই মিথ্যা! ফলে, রোগী ঠকিয়ে রোজগারের ধান্দা চলছে রমরমিয়ে। ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের! তাই এবার নতুন সিদ্ধান্ত নিল এনএমসি!
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)-এর নতুন সিদ্ধান্ত কী?
সম্প্রতি, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন জানিয়েছে, দেশের সমস্ত চিকিৎসককেই (West Bengal Doctor) রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন যথেষ্ট নয়। সর্বভারতীয় ভাবেই এই রেজিস্ট্রেশন জরুরি। ন্যাশনাল মেডিক্যাল রেজিস্টারে সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত থাকবে। দেশের সমস্ত চিকিৎসক, যাঁরা চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের এই রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। আগামী তিন মাসের মধ্যেই এই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, যা পাঁচ বছরের জন্য বৈধ থাকবে। পাঁচ বছর পরে ফের আপডেট করা হবে।
এই রেজিস্ট্রেশনের বিশেষত্ব কী?
এনএমসি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রেজিস্ট্রেশনের পরে চিকিৎসকেরা (West Bengal Doctor) পাবেন ইউনিক আইডেন্টিটি নম্বর। অনেকটা আধার কার্ডের ধাঁচে হবে এই ব্যবস্থা! যোগ্য চিকিৎসকদের কাছেই থাকবে তাঁর নিজস্ব ইউডিআই! সেই নম্বর প্রমাণ দেবে, তিনি মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সমর্থ কিনা।
এই সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের সুবিধা কতখানি?
এনএমসি-র এই সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অনেকটাই কমবে। কারণ, এই রেজিস্ট্রেশনের পূরোটাই এনএমসি-র নির্দিষ্ট ওয়েব পোর্টালে থাকবে। তাই যে কোনও রোগী তাঁর চিকিৎসক, কোন কলেজ থেকে পড়েছেন, কত বছর কাজ করছেন, অভিজ্ঞতা কী, কোথায় কাজ করেছেন, তাঁর যোগ্যতা ইত্যাদি সবকিছু সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পারবেন।
এর ফলে ভ্রান্তি দূর হবে। সর্বোপরি, ভুয়ো চিকিৎসকের (West Bengal Doctor) পরিষেবা নিতে হবে না এবং এই ধরনের অভিযোগ কমবে বলেই আশা করা যায়।
কী বলছে চিকিৎসক মহল?
চিকিৎসক মহল জানাচ্ছে, গোটা দেশের জন্য একরকম রেজিস্ট্রেশন খুব জরুরি! অনেক রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিল চিকিৎসকদের (West Bengal Doctor) রেজিস্ট্রেশনে বিশেষ গুরুত্ব দেয় না। এমনকী রেজিস্ট্রেশন পুনরায় নথিভুক্তিকরণের বিষয়কেও অবহেলা করা হয়। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে এরকম নিয়ম চালু হলে নিয়মমাফিক কাজ হবে বলেই তাঁরা আশা করছেন। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল নিয়ে অভিযোগ একাধিক। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল ঠিকমতো সক্রিয় থাকলে এ রাজ্যে কয়েকশো ভুয়ো চিকিৎসক কাজ করতে পারতেন না। এই ঘটনা প্রমাণ করে, রাজ্য কাউন্সিল একেবারেই সক্রিয় নয়। তাই এই সব দিক বিবেচনা করলে কেন্দ্রীয় ভাবে একটি রেজিস্ট্রেশন চালু জরুরি।
কী বলছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল?
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল অবশ্য মনে করছে, এনএমসি-র এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া, জোর করে রাজ্য কাউন্সিলের ক্ষমতা খর্ব করা। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের অন্যতম পদাধিকারী চিকিৎসক (West Bengal Doctor) নির্মল মাজি বলেন, "ভুয়ো চিকিৎসক তো আমরাই খুঁজে বের করেছিলাম। বছর পাঁচেক আগে রাজ্যে যখন কয়েকশো ভুয়ো চিকিৎসক গ্রেফতার হয়েছিলেন, তার খোঁজ কি এনএমসি দিয়েছিল? আমরাই রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখে প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। এসব নতুন রেজিস্ট্রেশন করানো ঝামেলা বাড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়। এতে চিকিৎসকদের হয়রানি বাড়বে!"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।