অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হতেই পারে, তবে মদ্যপান না করলেও কিন্তু হতে পারে এই কষ্টকর অসুখ !
প্রতীকী ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লিভার বা যকৃৎ সংক্রান্ত রোগ থেকে মানুষকে সচেতন করতে প্রতি বছর ১৯ এপ্রিল বিশ্ব যকৃৎ দিবস (World Liver Day) পালন করা হয়। যকৃৎ আমাদের শরীরে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এর জটিলতা সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য জানা যাক। লিভার সংক্রান্ত একটি বড় সমস্যা হল ফ্যাটি লিভার।
Fatty liver disease : ফ্যাটি লিভারের সমস্যা - এখন প্রায় ঘরে ঘরে। হজমের সমস্যা, পেটের যন্ত্রণা, খাবারের তালিকায় একটু রদবদল হলেই বদহজম হতে পারে। ঠিক কোন কোন লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন তা নিয়ে আলোচনা করা হল
পেট ফুলে যাওয়া ( Abdominal swelling)
ত্বকের নিচে থাকা ব্লাড ভেসেল ফুলে যাওয়া (Enlarged blood vessels just beneath the skin's surface)
প্লীহা বেড়ে যাওয়া ( Enlarged spleen)
হাতের পাতা লাল হয়ে যাওয়া (Red palms)
অনেক ক্ষেত্রে চোখে হলুদ ভাব (Yellowing of the skin and eyes)
Fatty Liver Syndrome কখন হয় ?
পরিপাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় লিভার। খাদ্যে মূলত ৬ রকমের পুষ্টি উপকরণ থেকে থাকে। কার্বোহাইড্রেট, শর্করা , প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন , মিনারেল ও জল। ক্ষুদ্রান্ত্রের ইলিয়ামে (ileum intestine) এই ছ'টি জিনিস পরিপাকের পর শোষণ হয়। তারপর তা একটি সার্কুলেশনে যায়। যাকে পোর্টাল সার্কুলেশন হয়। পোর্টাল ভেইনের মারফত এই খাবারগুলো লিভারে পৌঁছায়। লিভারই এই খাদ্যকে বিভিন্ন দিকে চালিত করে। শর্করা বা গ্লুকোজের মাত্রা কমে গেলে প্রোটিন বা ফ্যাট থেকে শর্করা তৈরি করতে পারে লিভার। গ্লুকোনিওজেনেসিস (gluconeogenesis) বলে। গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে, গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেন হিসেবে স্টোর করে লিভার।
ফ্যাটের পরিমাণ বাড়লে লিভার ফ্যাট নিজের মধ্যে স্টোর করতে পারে। যদি অতিরিক্তি ফ্যাট আসে লিভারে, তখন তার কিছুটা জমা হয় লিভারে, কিছুটা শরীরের অন্যান্য অঙ্গে স্থান পায়। তাতে একজন মানুষ স্থূলকায় হয়ে পড়েন। লিভারের অধিকাংশ কোষে যদি ফ্যাট স্টোর হয়ে যায়, তখনই তাকে ফ্যাটি লিভার সিনড্রোম বলা হয়ে থাকে।
ওই কোষগুলি তখন খাদ্য পরিপাকের কাজটি ভালভাবে করে উঠতে পারে না। লিভারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ফ্যাট জমে লিভার বড় হয়ে যায়। অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে যে ফ্যাটি লিভার হয়, তাকে অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার বলা হয়ে থাকে।
Alcoholic fatty liver disease :
অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে যে অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে জমা হয়, তার থেকে লিভার স্থূল হয়ে যায়। লিভারের কোষগুলি অতিরিক্ত ফ্যাটের ভাণ্ডার হয়ে ওঠে।
Nonalcoholic fatty liver disease :
নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিসিজ হয়ে থাকে অতিরিক্ত তেল-চর্বি জাতীয় ফ্যাটজাতীয় খাবার খেলে।
ফ্যাটি লিভারের সমস্যা এড়াতে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনশৈলিতে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। তার কয়েকটি হল -
তেল-চর্বি, ঝাল, ভাজাভুজি খাবার যতটা সম্ভব কমিয়ে আনুন ।
খাবারের পরিমান শরীরের প্রয়োজন ও ক্যালরির খরচের সঙ্গে তাল রেখে নিয়ন্ত্রণ করুন।
শহুরে জীবনযাত্রার অন্যতম অঙ্গ হয়ে গিয়েছে ফাস্ট ফুড । এই খাবারগুলি সহজপাচ্য তো নয়ই, উপরন্তু অপকারী ফ্যাটের সম্ভার।
এড়িয়ে চলুন পেস্ট্রি -বার্গার.. এই জাতীয় খাবার ।
অতিরিক্ত চিনি দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলুন। প্যাকেজড ফ্রুট জুস খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
সফট ড্রিঙ্ক এড়িয়ে চলুন।
সেডেন্টারি লাইফ স্টাইল নয় ! ফ্যাট এনার্জি যোগায়। কিন্তু প্রয়োজনের থেকে বেশি হলেই বিপত্তি। তাই অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ করতে রোজ এক্সারসাইজ করুন। হাঁটুন। দরকারে জিমে যান।